সড়কপরিবহণওমহাসড়কমন্ত্রক

সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রকের ২০১৯ বর্ষশেষ পর্যালোচনা

Posted On: 01 JAN 2020 6:10PM by PIB Kolkata

বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০১৯-এ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রকের উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। সময়মতো চালু প্রকল্পগুলির ওপর নজরদারি, রাস্তা অবরোধের মতো সমস্যার সমাধানের ফলে এই সাফল্য এসেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে চালু প্রকল্পগুলির মধ্যে ৫,৪৯৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল। ১০,৮৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ৩,২১১ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৫,৯৫৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের তুলনায় চলতি বছরে সড়ক উন্নয়নের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রক মহাসড়কের উন্নয়নে বিশেষ জোর দিয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে অতিরিক্ত ৬০ হাজার কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক উন্নয়নের প্রস্তাব দিয়েছে মন্ত্রক। এর মধ্যে ২,৫০০ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে, ৯ হাজার কিলোমিটার অর্থনৈতিক করিডর, ২ হাজার কিলোমিটার উপকূল এবং বন্দর সংযোগকারী মহাসড়ক, ২ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক অথবা কৌশলগত মহাসড়কও রয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ১০০টি পর্যটন গন্তব্যস্থলের সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তার উন্নয়ন এবং ৪৫টি শহরের জন্য বিকল্প সড়ক নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে মহাসড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

জাতীয় মহাসড়ক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএইচএআই)-কে পরিকাঠামোগত বিনিয়োগ ট্রাস্ট গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেবির নির্ধারিত নীতি-নির্দেশিকা অনুসারে এই ট্রাস্ট গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এনএইচএআই-এর সম্পদের সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে এই পদক্ষেপের বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।

সড়ক পরিবহণ এবং মহাসড়ক মন্ত্রক আরএফআইডি প্রযুক্তিভিত্তিক ‘ফাস্টট্যাগ’ ব্যবহার করে খুব সহজে টোল সংগ্রহের জন্য জাতীয় বৈদ্যুতিন টোল সংগ্রহ (এনইটিসি) কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এতে সময় ও গাড়ির জ্বালানি যেমন বাঁচবে, তেমনই দূষণও কমবে। রাজ্য মহাসড়ক এবং জাতীয় মহাসড়ক টোল প্লাজায় যাতে একটিই ‘ফাস্টট্যাগ’ ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে সচেষ্ট হয়েছে মন্ত্রক।

‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক’ ব্যবহার না করার জন্য মন্ত্রক তার সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে। স্থানীয়ভাবে তৈরি পরিবেশ-বান্ধব পণ্য যেমন মাটির ভাড়, মাটির গ্লাস এবং প্লেট ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

‘স্বচ্ছতাহি সেবা’ প্রচারাভিযানে বিশেষ জোর দিয়েছে মন্ত্রক। ২০১৯-এর ১১ সেপ্টম্বর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত প্লাস্টিক বর্জ্য পরিচালন ব্যবস্থাপনার ওপর সরকার ‘স্বচ্ছতাহি সেবা’ প্রচারাভিযান চালায়। এই প্রচারাভিযানের জন্য কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রক নির্দিষ্ট কার্যকরী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। কর্মীদের শ্রমদানে উৎসাহিত করতে উদ্যোগও নিয়েছে।

পথ নিরাপত্তায় রাজ্য-ভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে মন্ত্রক। ২০২৪ সালের মধ্যে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সুসংহত পথ দুর্ঘটনা তথ্যভাণ্ডার প্রকল্পের সূচনা করেছে মন্ত্রক। এর মাধ্যমে পথ দুর্ঘটনার বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। চার-লেন এবং তার বেশি লেন-বিশিষ্ট মহাসড়কে পথ নিরাপত্তায় প্রযুক্তির ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রক ১৯৮৮ সালের মোটর ভেহিকেলস আইনের সংশোধন করেছে। সংশোধিত নতুন আইন ২০১৯-এ সংসদে পাশ হয়েছে। গত বছর ৯ আগস্ট এই সংশোধিত আইনের গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সরকার। পথ নিরাপত্তা, স্বচ্ছতা এবং প্রযুক্তির সাহায্যে দুর্নীতি কমাতে এই আইন বিশেষ কার্যকর হবে।

পথ নিরাপত্তার সংস্থান ও জরিমানার ক্ষেত্রে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বৈদ্যুতিন নজরদারির মাধ্যমে ট্র্যাফিক আইন মানতে বাধ্য করা, দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো ও মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর কারণে যদি কারোর ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায় তাহলে পুনরায় ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য নতুন করে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সংস্থান, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙলে গাড়ির মালিক বা অভিভাবকদের ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং তিন বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে এবং পথ নিরাপত্তা ও ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্টের ওপর পরামর্শের জন্য জাতীয় সড়ক সুরক্ষা বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

২০১৮ সালের ৬ জুন মন্ত্রক ১৯৮৯ সালের সেন্ট্রাল মোটর ভেহিকেলস রুলস-এর সংশোধন করা হয়েছে যার মাধ্যমে গাড়িত দূষণ সংক্রান্ত শংসাপত্র সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে ‘বাহন’ ডেটাবেসের সাথে লিঙ্ক করা যাবে।

সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রক ২০১৮-য় ভারতে পথ দুর্ঘটনার বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেছে। এই তথ্যে বছর-ভিত্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু, আহতের সংখ্যা তুলে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এটি তৈরি করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭-র তুলনায় ২০১৮-য় পথ দুর্ঘটনার হার ০.৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই একই সময়কালে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ২.৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, ২০১৭-র তুলনায় ২০১৮-য় পথ দুর্ঘটনায় আহতের হার ০.৩৩ শতাংশ কমেছে।

নবগঠিত লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য ১৯৮৮ সালের ৪১(৬) ধারা অনুযায়ী গাড়ির নম্বর প্লেট ‘এলএ’ দিয়ে নথিভুক্ত করা হবে। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।

 

 

SSS/SS/DM



(Release ID: 1598193) Visitor Counter : 195


Read this release in: English