পরমাণুশক্তিদপ্তর
আণবিক শক্তি দপ্তরের বার্ষিক পর্যালোচনা
Posted On:
29 DEC 2019 10:20PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯
আণবিক শক্তি দপ্তর চলতি বছরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সেগুলি হল-
পারমাণবিক শক্তি কর্মসূচি
- কাইগা আণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নিরবচ্ছিন্ন ৯৬২ দিন কাজ চালিয়ে বিশ্ব রেকর্ড তৈরি করেছে।
- তারাপুর আণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১ এবং ২ নম্বর ইউনিট এপ্রিল মাসে গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। ১৯৬৯ সাল থেকে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ৫০ বছর ধরে নির্বিঘ্নে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এই কেন্দ্র বিশ্বের মধ্যে সবথেকে পুরনো পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। এখানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হয় মাত্র ২ টাকা।
- বর্তমানে দেশে ৬ হাজার ৭৮০ মেগাওটায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ২২টি পারমানবিক চুল্লি রয়েছে। এই আণবিক চুল্লিগুলি থেকে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৮০ শতাংশেরও বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে।
- প্রতিটি ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ৬টি প্রেসারাইডজ হেভি ওয়াটার রিয়্যাক্টরের নির্মাণ কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এগুলি থেকে অতিরিক্ত ৪ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
- প্রত্যেকটিতে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ৪টি ভিভিইআর পরমাণু চুল্লির নির্মাণ কাজ চলছে।
- পরমাণু জ্বালানী কমপ্লেক্সের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, যেখান থেকে কাকারাপাড়া পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ৩৭টি জ্বালানী সরবরাহকারী উপাদান সরবরাহ করা হচ্ছে।
ওষুধ এবং স্বাস্হ্য সচেতনতা
- টাটা মেমোরিয়াল সেন্টারে একটি নতুন হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। সেখানে চলতি বছরে ৫ লক্ষেরও বেশি রোগী প্রয়োজন অনুযায়ী পরিষেবা পেয়েছেন যারমধ্যে নতুন রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ২৫ হাজার।
- আণবিক শক্তি দপ্তর এনসিজি-বিশ্বম ক্যান্সার কেয়ার কানেক্ট নামে একটি বিশ্বমানের ক্যান্সার কেয়ার নেটওয়ার্কের সূচনা করেছে চলতি বছরের ১৭ই সেপ্টেম্বর। এই এনসিজি-বিশ্বম ভারতে ন্যাশনাল ক্যান্সার গ্রিডের সহযোগিতায় বিভিন্ন দেশের ক্যান্সার চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হাসপাতাল এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করবেন।
- ১২০টি মতো পরমাণু ওষুধ কেন্দ্র এবং ৪০০ও বেশি রেডিওইউমিউনোসারি গবেষণাগার গড়ে তোলা হয়েছে দেশীয় রেডিওআইসোটোপ ওষুধ উৎপাদনের জন্য। এর থেকে ১০ লক্ষ রোগী উপকৃত হবেন।
- বিশ্বের মধ্যে প্রথম গ্লাস ভেট্রিফায়েজ সিজিয়াম পেনসিল তৈরি করা হয়েছে।
- ৪টি নতুন রেডিওফার্মাসিউটিক্যাল প্রস্তুত করা হয়েছে যার মধ্যে একটি হল 99mtc- হায়নিকটাটি ইঞ্জেকশন। এটি নিউরো-এনডোক্রিনিটিউমোরাস-এ ছবি তুলতে ব্যবহার করা হয়। আর একটি হল 188Re-HEDP কোল্ডকিট। এটি মাথার যন্ত্রনা কমাতে ব্যবহার করা হয়। তৃতীয়টি হল 177Lu-EDTMP ইঞ্জেকশন। এটি হাড়ের যন্ত্রনা কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। চতুর্থটি হল 131 আয়োডিন লিপিডল ইঞ্জেকশন। এটি যকৃতের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও আরও ১৪ রকমের চিকিৎসাশাস্ত্রে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় সামগ্রি তৈরি করা হয়েছে যেগুলি রোগ নির্ণয়, রোগের চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত হয়।
- উচ্চমানের বর্জ্য থেকে নিষ্কাশিত ইট্রিয়াম-৯০ মান যুক্ত ৯০ওয়াই-অ্যাসিটেট এখন পরীক্ষামূলকভাবে রোগীদের ওপর প্রয়োগ করা শুরু হয়েছে। পরবর্তিতে এগুলি পুরো মাত্রায় ব্যবহারের জন্য অনুমতি চাওয়া হবে।
গবেষণা ও উন্নয়ন
- ২০১৯এর সাধারণ নির্বাচনে ইসিআইএল সাফল্যের সঙ্গে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার এমথ্রি বৈদ্যুতিন ভোটগ্রহণ যন্ত্র এবং ৫ লক্ষ ৮০ হাজার ভিভিপ্যাটের সর্বশেষ মডেল সরবরাহ করেছে।
- পিইটি স্ক্যানে ব্যবহারের জন্য তেজস্ক্রিয় সিইউ-৬৪ উৎপাদনের লক্ষ্যে উন্নতমানের অপসরা-ইউ রিয়্যাক্টরের পরীক্ষামূলক প্রদর্শন করা হয়েছে।
- ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটি বিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে উন্নত জ্বালানীর পুর্নপ্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি আবারও লাইসেন্স প্রদান এবং এফবিটিআর সংক্রান্ত জ্বালানীর পুর্নপ্রক্রিয়াকরণের ৫০-তম প্রচার পর্ব চলছে।
- জলের মধ্যে ক্রোমিয়ামের দূষণ চিহ্নিত করার লক্ষ্যে একটি সহজ, দ্রুত, স্বল্প ব্যয়ের কিট তৈরি করা হয়েছে। এই কিট-টি আইএস ১০৫০০ মান সম্পন্ন। পাশাপাশি এটি ইপিএ-র শর্তগুলি পূরণ করেছে।
- সিংক্রোট্রন, সাইক্লোট্রন, ধ্রুব, ফাস্ট ব্রিডার টেস্ট রিয়্যাক্টর (এফবিটিআর) সহ আমাদের গবেষণার বিভিন্ন বিষয়ের সাফল্য চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। ৩০ এমডাব্লুটি-তে এফবিটিআর কাজ করছে, যা ইতিহাস গড়তে সক্ষম হয়েছে। এরফলে এটি টার্বো জেনারেটর গ্রিডে ৬.১ এমডাব্লুই বিদ্যুৎ গ্রিডে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হচ্ছে।
- ইন্দাস সিংক্রোট্রন দিনভর তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এরফলে দেশের ২০টি বিমলাইনের ব্যবহার একযোগে করা যাচ্ছে। বিগত নভেম্বর পর্যন্ত ১ হাজারটি ব্যবহার সংক্রান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে।
- আরআরসিএটি যক্ষ্মারোগ সহজে নির্ণয়ের লক্ষ্যে স্বল্প মূল্যের ‘টিউবারকিউলোসকোপ’ এবং জৈব তন্তু পরিমাপনের জন্য ‘অঙ্কডায়গোনোস্কোপ’ তৈরি করা হয়েছে। অঙ্কডায়গোনোস্কোপ, যোধপুরের এইমসের চিকিৎসকরা ৬টি ক্যান্সার নির্ণায়ক ক্যাম্পে সফলভাবে ব্যবহার করেছেন।
- এনএফসি থেকে ৯৯ শতাংশ বিশুদ্ধ হাফনিয়াম অক্সাইড উৎপাদনের লক্ষ্যে আইআরইএল তৈরি করা হয়েছে।
বৃহৎ বিজ্ঞান প্রকল্প
বৃহৎ বিজ্ঞান প্রকল্পগুলিতে ভ্রাম্যমান প্রদর্শশালা ‘বিজ্ঞান সমাগম’কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, কলকাতা এবং নতুন দিল্লীতে আণবিক শক্তি দপ্তর, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর, বিজ্ঞান সংগ্রহশালাগুলির জাতীয় পর্ষদ এবং সংস্কৃতি মন্ত্রক যৌথভাবে এই বিজ্ঞান প্রদর্শনীর আয়োজন করে থাকে। ইসিআইএল হায়দ্রাবাদে ৬৭টি আল্ট্রা স্টেবল পাওয়ার কনভার্টার তৈরি করেছে। এগুলি জার্মানীর ‘ফেয়ারে’ পাঠানো হয়েছে।
অসামরিক আণবিক সহযোগিতা
অসামরিক আণবিক সহযোগিতার লক্ষ্যে রাশিয়া, ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে। নতুন কোন স্থানে ৬x১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গড়ার লক্ষ্যে রাশিয়ার রোশাটোম, জইতাপুরে ৬টি ১৬৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট গড়ে তোলার জন্য ফ্রান্সের সঙ্গে এবং কোভ্ভাডায় একটি আণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬টি ১১শো মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিংহাউসের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পাশাপাশি অসামরিক আণবিক সহযোগিতার অধীনে কানাডা, কাজাখস্তান এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে ইউরেনিয়াম আনার লক্ষ্যে আলোচনাও সঠিক দিশায় এগোচ্ছে।
মানব সম্পদ উন্নয়ন
২০০৮ সালে হোমি ভাবা জাতীয় প্রতিষ্ঠান (এইচবিএনআই) গড়ে তোলার পর এই বিশ্ববিদ্যালয়সম প্রতিষ্ঠান থেকে ১ হাজার জনকে পিএইচডি এবং সমসংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে এমটেক ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে। দেশে আজ বিপুল সংখ্যার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা এইচবিএনআই কর্মসূচিতে যুক্ত রয়েছেন। ২০১৭র এপ্রিল থেকে বাহাদুরগড়ে গ্লোবাল সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি (জিসিএনইপি) পার্টনারশিপ তার কাজ শুরু করেছে। এই কেন্দ্রটি ১৮র বেশি আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। জিসিএনইপি-র সঙ্গে বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ১০ জন বিশেষজ্ঞকে সেই দেশের রূপপুর আণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সর্বোচ্চ তিন মাস কাজ করতে পাঠানো হয়েছে।
CG/SS/CB/NS
(Release ID: 1597918)
Visitor Counter : 746