দক্ষতাউন্নয়নওশিল্পোদ্যোগমন্ত্রক

দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্যোগ বিষয়ক মন্ত্রকের ২০১৯-এর বাৎসরিক পর্যালোচনা

Posted On: 19 DEC 2019 5:26PM by PIB Kolkata

সারা দেশে সব ধরনের দক্ষতা উন্নয়নের প্রচেষ্টা, দক্ষ মানবশক্তির চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে দূরত্ব কমানো, বৃত্তিমুখী এবং প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ পরিকাঠামো গড়ে তোলা, দক্ষতার উন্নীতকরণ, নতুন দক্ষতা তৈরি এবং উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ ঘটানোই দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্যোগপতি মন্ত্রকের দায়িত্ব। এটি শুধুমাত্র চলতি কাজের নয়, যে সমস্ত কাজ ভবিষ্যতে তৈরি হবে সেজন্যও বটে। ‘দক্ষ ভারত’-এর লক্ষ্য পূরণ করতে মন্ত্রকের উদ্দেশ্য দ্রুত এবং উচ্চমানের দক্ষতা গড়ে তোলা।

মন্ত্রকের ভাবনাটি হল ‘স্বনির্ভরতার পরিবেশ গড়ে তোলা বিশালাকারে দ্রুততার সঙ্গে উচ্চমানের দক্ষতা গড়ে তোলার মাধ্যমে। উদ্ভাবন-ভিত্তিক উদ্যোগের সংস্কৃতির প্রসার ঘটানো যার মাধ্যমে সম্পদ এবং কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে যাতে দেশের সমস্ত নাগরিকের দীর্ঘস্থায়ী জীবিকা নির্বাহ সম্ভব হয়।’

মন্ত্রক সেই ভাবনার অভিমুখে পৌঁছতেই প্রয়াস চালাচ্ছে। এর জন্য ২০১৯-এ বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে কয়েকটি বিষয়ের ওপর যার প্রথমটি হল সম্মিলন, যাতে ১ কোটির বেশি তরুণ-তরুণীকে বার্ষিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচিতে। তৈরি করা হয়েছে ‘স্কিল ইন্ডিয়া পোর্টাল’ যাতে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক, রাজ্য সরকার, বেসরকারি প্রশিক্ষণদাতা এবং কোম্পানিগুলিকে একটি প্ল্যাটফর্মে আনা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে, দ্রুত তথ্য জানা যাচ্ছে এবং দক্ষতার পরিবেশ গড়ে তুলতে তথ্যের আদানপ্রদান সহজ হয়েছে।

দ্বিতীয়টি হল, মানের উন্নীতকরণ যাতে বর্তমানে চালু দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। বেড়েছে শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা। প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে এই সময়ে। ‘প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা’র প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হওয়ায় বিনামূল্যে দক্ষ হয়ে উঠছে ভারতের যুবসমাজ। এ পর্যন্ত ৮৭ লক্ষ তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষিত হয়ে উঠেছেন। এর মধ্যে ৫৪ শতাংশের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন। ৮১২টি প্রধানমন্ত্রী কৌশল কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে যার মধ্যে ৬৮১টি ইতিমধ্যেই নির্মিত হয়েছে। ১৮ লক্ষের বেশি প্রার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া উদ্দেশ্য। প্রশিক্ষণার্থীরা আগে যা শিখে এসেছেন তাকে স্বীকৃতি দিতেও একটি কর্মসূচি চালু হয়েছে। এই ধরনের সুযোগ পেয়েছেন ১১ লক্ষেরও বেশি কর্মচারী।

এই কর্মসূচির অধীনে টাটা স্ট্রাইভ এবং মারুতি-সুজুকি সুপ্রিম কোর্টের রাঁধুনি এবং গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। দু’দিনের এই প্রশিক্ষনে সুরক্ষা, ব্যক্তিত্ব নির্মাণ, ছোটখাটো দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কিছু প্রযুক্তিগত দিকও শেখানো হয়েছে। ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্কের সঙ্গে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে যাতে ১ লক্ষ ৭০ হাজার গ্রামীণ ডাক সেবককে এর অধীনে শংসাপত্র দেওয়া যায়। এ পর্যন্ত ৯,০৪৬ জনকে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে শংসায়িত করার কাজও এর অন্তর্গত। যাদের প্রতি বছর ৫০ লক্ষের মতো প্রার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষমতা আছে, এরকম ১১,৯৭৭টি কেন্দ্রকে ‘স্মার্ট’-এর অধীনে শংসায়িত করা হয়েছে।

জম্মু-কাশ্মীরের জন্য সমস্ত উপযুক্ত প্রার্থীরা যাতে দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে আসেন, তার জন্য প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের আধিকারিকরা বৈঠক করেছেন জম্মু-কাশ্মীর সরকার এবং রাজ্য দক্ষতা উন্নয়ন মিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে। দেশের সমস্ত জায়গায় দক্ষতার প্রশিক্ষণ যাতে পৌঁছয় তার জন্য লেহ-তে একটি কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। মন্ত্রক চায় সারা দেশে নিখুঁতভাবে একটি দক্ষ কর্মীশ্রেণী গড়ে উঠুক।

২০১৯-এর ৩ ও ৪ সেপ্টেম্বর নাগাল্যান্ড, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, ঝাড়খণ্ড, অরুনাচল প্রদেশ এবং সিকিমের প্রতিনিধিরা একটি কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলেন। আঞ্চলিক কর্মশালা ছাড়াও এরকম কর্মশালা দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রেও হয়েছে ‘সঙ্কল্প’-এর অধীনে। এছাড়া, বিশ্বব্যাঙ্কের উদ্যোগে কোরিয়ার সিওলে প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করা হয় পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য।

এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য আইটিআই-গুলির মান উন্নত করা। প্রথম পর্যায়ে ৩১৪টি আইটিআই-কে বেছে নেওয়া হয়েছে এবং মান অনুযায়ী অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৯৮টির সঙ্গে। আইটিআই-গুলি যাতে রাজ্য সরকারগুলির কাছ থেকে সাহায্য পায় সেই উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩১টি রাজ্য এই চুক্তির অধীনে এসেছে। আধিকারিক, অধ্যক্ষ এবং প্রশিক্ষণদাতাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ৩৬টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে।

মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সিঙ্গাপুর, আরব আমিরশাহী, জাপান, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলির আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যাতে যৌথভাবে ওই দেশগুলির সঙ্গে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা যায় এবং সেখানে ভারতের দক্ষ পেশাদার কর্মীদের পাঠানো যায়।

‘প্রধানমন্ত্রী যুব উদ্যমিতা বিকাশ অভিযান’ ৩০০টি প্রতিষ্ঠানে একটি পাইলট প্রকল্প রূপায়ণ করছে। এগুলি অবস্থিত ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। এই প্রকল্পের লক্ষ্য বিকল্প পেশা হিসেবে শিল্পোদ্যোগের প্রসার ঘটানো। দেওয়া হচ্ছে দীর্ঘকালীন সহায়তা। যাঁরা সবে কাজ শুরু করেছেন, তাঁদের শিল্পোদ্যোগের বিষয়ে শিক্ষা এবং সহায়তা দেওয়াও অন্যতম লক্ষ্য। এই পাইল্ট প্রোজেক্টে ৭০ হাজারের মতো তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষিত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২০-র মার্চের ভেতর ৬০০টি নতুন এবং এক হাজারটি উন্নত উদ্যোগ গড়ে উঠবে আশা করা যায়। এই পাইলট প্রোজেক্টে খরচ ধরা হয়েছে ১২ কোটি টাকা।

শিল্প সংযোগ বাড়াতে রিলায়েন্স জিও-র সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। তারা ছয়টি এনএসটিআই-তে প্রশিক্ষণ গবেষণাগার গড়ে তুলবে। কলকাতা সহ ছয়টি এনএসটিআই-তে ‘জব মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়। ৪০০ প্রার্থীকে বেছে নেওয়া হয়েছিল প্রশিক্ষণের জন্য।

এই কর্মসূচিতে মন্ত্রকের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ট্রেনিং-এর পক্ষ থেকে ডিজিটাল সাক্ষরতা, তৎপরতা, কর্মসংস্থানগত দক্ষতা, উচ্চতর প্রযুক্তির দক্ষতা ইত্যাদি শেখানো হবে।

প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে যে সমস্ত প্রশিক্ষণদাতা ভালো কাজ করেছেন, তাদের জন্য ‘কৌশলাচার্য’ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় গত ৫ই সেপ্টেম্বর। সেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৫৩ জন প্রশিক্ষণদাতাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

‘জাতীয় শিল্পোদ্যোগ পুরস্কার’ দেওয়া হয় এক্ষেত্রে বিশেষ অবদানকে স্বীকৃতি জানানোর জন্য। এই পুরস্কারে আছে একটি ট্রফি, একটি শংসাপত্র এবং ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নগদ পুরস্কার। এর লক্ষ্য দেশে চাকরিপ্রার্থীর তুলনায় চাকরিদাতার সংখ্যা বাড়ানো।

‘স্কিল সাথী কাউন্সেলিং প্রোগ্রাম’-এর মাধ্যমে ‘স্কিল ইন্ডিয়া’ মিশনের অধীনে উন্নতির বিভিন্ন রাস্তা সম্পর্কে যুবসমাজকে সচেতন করে তোলাই লক্ষ্য। আরও একটি লক্ষ্য হল দক্ষতা বাড়ানোর ইচ্ছাশক্তি বৃদ্ধি করা। প্রায় ৪০ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে এই কর্মসূচিতে কাউন্সেলিং করা হয়েছে। বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমের নীতি অনুযায়ী, স্কুলগুলিতে এই বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমের ব্যবস্থা করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির জন্য বৃত্তিগত পাঠ্যক্রমের ওপর সমান জোর দেওয়া হচ্ছে।

সরকারি স্কুলগুলিতে ৫০০টি ‘স্কিল হাব এবং ল্যাব’ করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা হচ্ছে সিবিএসই-র সঙ্গে। স্কুলগুলিতে উচ্চমানের প্রযুক্তি-ভিত্তিক দক্ষতা কর্মসূচি চালু করবে দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোগপতি মন্ত্রক। বর্তমানে ‘স্কিল ইন্ডিয়া’ ৯,১০০-রও বেশি স্কুলে কাজ করছে। ৭ লক্ষ ৫০ হাজারেরও বেশি এ থেকে ছাত্রছাত্রী সুযোগ পেয়েছে। এই উদ্যোগ পরিকল্পনা করা হয়েছে রাজ্যগুলির সঙ্গে মিলে।

এমএসডিই এবং এমএইচআরডি একসঙ্গে ‘শ্রেয়স’ কর্মসূচি চালু করেছে। এতে সংযুক্ত করা হয়েছে ২৫টি কলেজকে। এতে ৬৪৩ জন ছাত্রছাত্রী নথিভুক্ত হয়েছেন।

দেশজুড়ে এমএসডিই অ্যাপ্রেন্টিসশিপ পাখওয়াড়া আয়োজন করে যেখানে শিল্পক্ষেত্র এবং রাজ্য সরকারগুলি প্রতিশ্রুতি দেয় যে চলতি অর্থ বছরে ৭ লক্ষ অ্যাপ্রেন্টিসকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এটি যদি কার্যকর হয় তাহলে ১৯৬১-র অ্যাপ্রেন্টিসশিপ আইনে শেষ যে সংশোধনী আনা হয়েছিল, তার দ্বিগুণ প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ স্কিল্‌স (আইআইএস) একটি নির্দিষ্ট মান তৈরি করেছে। এমএসডিই সম্প্রতি মুম্বাইতে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। দেশের আইআইএম এবং আইআইটি-র মতোই এটি মান্যতা পাবে। টাটা গ্রুপের সঙ্গে একযোগে এই প্রকল্পটি তৈরি হচ্ছে। টাটা গোষ্ঠী দেবে ৩০০ কোটি টাকা। প্রতি বছর ৫ হাজার প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে আইআইএস-এর।

স্টেট ব্যাঙ্কের সঙ্গে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করেছে মন্ত্রক। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ফ্রন্ট অফিস এবং টেলিকলার হিসেবে ৫ হাজার অ্যাপ্রেন্টিস নিযুক্ত হবেন।

মন্ত্রক একটি ‘স্কিল ভাউচার’ কর্মসূচি তৈরি করছে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের জন্য। এতে প্রশিক্ষণার্থীদের পাশাপাশি, উদ্যোগপতিদেরও ভাউচার দেওয়া হবে।

২০১৮-র ‘ইন্ডিয়া স্কিল্‌স’-এর ২২ জন বিজেতা এবং তাঁদের বিশেষজ্ঞরা সফলতার সঙ্গে রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড স্কিল্‌স ইন্টারন্যাশনাল, ২০১৯-এ যোগ দেন। ভারত একটি সোনা, একটি রুপো, দুটি ব্রোঞ্জ এবং ১৫টি উৎকর্ষ পদক পেয়ে ৬৩টি দেশের মধ্যে ত্রয়োদশ স্থান অধিকার করে।

গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে মন্ত্রক ১৯৬১-র অ্যাপ্রেন্টিসশিপ আইনে বহু সংস্কার করেছে যাতে শিল্পক্ষেত্রের পক্ষে প্রয়োজনীয় অ্যাপ্রেন্টিস পাওয়া সহজ হয়। এর জন্য ঊর্ধ্বতর সীমা ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। বাধ্যতামূলক নিয়োগের ক্ষেত্রে অ্যাপ্রেন্টিসদের সংখ্যা ৪০ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হয়েছে। ন্যূনতম মজুরির সঙ্গে যুক্ত না করে এক বছরের স্টাইপেন্ড নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বছরে এই স্টাইপেন্ডের পরিমাণ বাড়বে ১০ শতাংশ ও তৃতীয় বছরে ১৫ শতাংশ। অ্যাপ্রেন্টিসশিপ প্রশিক্ষণের মেয়াদ ৬ মাস থেকে ৩৬ মাস হতে পারে।

অন্তত এক হাজার আইটিআই-তে ডুয়াল সিস্টেম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি জার্মানি থেকে অনুপ্রাণিত। এতে বিভিন্ন আইটিআই-এর ছাত্ররা শিল্পক্ষেত্রে সরাসরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিল্পের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। প্রথম ১০০ দিনে ৪০টি ন্যাশনাল স্কিল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (এনএসটিআই) অংশীদারিত্ব চুক্তি করে। অন্তত ৭৩৯টি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়। শিল্পের সুবিধামতোই এই হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মেয়াদ ঠিক করা হয়েছে। আগে যেখানে মাত্র ১৭টি পাঠ্যক্রম ছিল, সেখানে সব মিলিয়ে এখন ১৩৮-এর ওপর পাঠ্যক্রম আছে।

১২টি এনএসটিআই-তে নতুন বয়ঃপাঠ্যক্রম শুরু করেছে মন্ত্রক। এর মধ্যে আছে ‘স্মার্ট হেল্‌থ কেয়ার’, ‘থ্রি-ডি প্রিন্টিং’, ‘ড্রোন পাইলট’, ‘সোলার টেকনিশিয়ান’ ইত্যাদি।

তৃণমূলস্তরে পৌঁছতে মন্ত্রক প্রতিটি জেলায় জেলা দক্ষতা কমিটি তৈরি করেছে ‘সঙ্কল্প’ কর্মসূচির অধীনে। এতে আর্থিক সাহায্য করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ট্রেনিং-এর মাধ্যমে জেলা দক্ষতা কমিটিগুলির সাহায্যে স্থানীয় স্তরে দক্ষতার ঘাটতি নিরূপণ করে তা পূরণ করাই এর লক্ষ্য।

মন্ত্রক ছয়টি রাজ্যের ৭৫টি জেলায় মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল ফেলোশিপ গঠন করেছে। এতে ৭৫ জন তরুণ পেশাদারকে নির্বাচিত করা হবে এবং তাঁদের পাঠানো হবে নির্দিষ্ট ৭৫টি জেলায় জেলা আধিকারিকদের জেলাস্তরে পরিকল্পনা এবং তা রূপায়ণের কাজে সহায়তা করার জন্য।

দেশের যুবসম্প্রদায়কে দক্ষ করার এই প্রক্রিয়াটি যাতে যথাযথ মর্যাদা পায় সেজন্য সরকার একটি নতুন প্রশাসনিক পরিষেবা তৈরি করেছে যেমন ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস অথবা পোস্ট অ্যান্ড টেলিগ্রাফ সার্ভিস। মন্ত্রকের একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ‘দ্য ইন্ডিয়ান স্কিল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস’ তৈরি করা হয়েছে। এটি তৈরি করা হয়েছে প্রশিক্ষণ অধিকরণের জন্য। আইএসডিএস গ্রুপ ‘এ’ সার্ভিস রূপে বিবেচিত হবে যাতে নিয়োগ হবে ইউপিএসসি-র ইন্ডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে। প্রথম ব্যাচটির প্রশিক্ষণ কর্মসূচি মাইসুরুর এটিআই-তে ৯ই নভেম্বর শুরু হয়েছে। ইন্ডিয়ান স্কিল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসে সারা ভারতে ২৬৩টি পদ আছে। সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ গ্রেড ক্যাডারে তিনটি পদ আছে। জুনিয়র গ্রেডে ২৮টি পদ আছে, সিনিয়র টাইম স্কেলে ১২০টি এবং জুনিয়র টাইম স্কেলে ১১২টি পদ আছে।

মহিলা উদ্যোগপতিদের জন্য চালু বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা নিয়ে ২০১৮-য় ইউএনডিপি, এনআইআরডিপিআর এবং টিআইএসএস-এর সঙ্গে যৌথভাবে এনআইইএসবিইউডি একটি নতুন ধারণার সৃষ্টি করেছে যাতে ‘বিজনেস সখী’র মাধ্যমে মন-সামাজিক এবং বাণিজ্যি – উভয় সহায়তাই করা যায়। এর কর্মসূচি গত ৯ই নভেম্বর প্রকাশিত হয়। মেন্টররা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি এবং নতুন নতুন বাণিজ্যিক ভাবনা ও বাজারের মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে দেবে। এছাড়াও, উচ্চাকাঙ্খী উদ্যোগপতিদের অতি প্রয়োজনীয় সেই মানসিক সহায়তা দেবেন যা একজন মহিলাকে নানা বাধা অতিক্রম করার সাহস যোগাবে যাতে তিনি তাঁর নিজের ব্যবসাটি দীর্ঘকাল ধরে সুষ্ঠুভাবে চালাতে পারেন।

প্রশিক্ষণদাতাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজটিও করা হচ্ছে। এর জন্য জাতীয় স্তরে পিএমকেভিওয়াই-এর ৪,০৬৮ জন প্রশিক্ষণদাতার জন্য বিশেষ কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে। আইটিআই-এর পক্ষ থেকে তপশিলি জাতি/উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী, হাত দিয়ে যাঁরা জঞ্জাল পরিষ্কার করেন এবং মহিলাদের মধ্যে অতি দরিদ্র, দক্ষ, বেকার তরুণ-তরুণীর জন্য উদ্যোগপতি উন্নয়ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জনশিক্ষণ সংস্থানের (জেএসএস) জন্য একটি এমআইএস পোর্টাল শুরু হয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি জেলায় যাতে জেএসএস স্থাপন করা যায় তার পরিকল্পনা নিয়েছে মন্ত্রক।

এই প্রযুক্তি-নির্ভর পরিবেশে ই-লার্নিং অত্যন্ত জরুরি। এনএসডিসি ‘ই-স্কিল ইন্ডিয়া’ তৈরি করেছে যেখান থেকে ভারতীয় তরুণ-তরুণীরা ই-স্কিলিং সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন। অনলাইন শিক্ষণের মাধ্যমে অনলাইন পাঠ্যক্রমের দ্বারা উচ্চস্তরের প্রতিষ্ঠানগুলির অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান ভাগ করে নিতে পারবে তরুণ শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে সীমান্ত কোন বাধা হবে না। কৃষি, স্বাস্থ্য পরিষেবা, টেলিকম, কর্মসংস্থানের সুযোগ, ব্যবস্থাপনা, খুচরো, ওষুধ, ব্যাঙ্কিং, ফিনান্স ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে উচ্চমানের পাঠ্যক্রমের সুযোগ দিচ্ছে টিসিএস, আইবিএম ইত্যাদির মতো বড় সংস্থা। এই সুযোগ এনে দিয়েছে ‘ই-স্কিল ইন্ডিয়া’। এই পাঠ্যক্রম পাওয়া যাচ্ছে ইংরাজি, হিন্দি এবং নয়টি আঞ্চলিক ভাষায়। শিক্ষার্থীদের জন্য আছে ইন্টার‍্যাক্টিভ ভিডিও এবং প্রশ্নোত্তরের ব্যবস্থা।

 

 

CG/AP/DM



(Release ID: 1596961) Visitor Counter : 266


Read this release in: English