কর্পোরেটবিষয়সংক্রান্তমন্ত্রক

কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের ২০১৯এর বর্ষ শেষ পর্যালোচনা

Posted On: 17 DEC 2019 11:05PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯

 

 

    কর্পোরেট ক্ষেত্রে আরো স্বচ্ছতা আনতে ব্যবসায়ীদের সহজে ব্যবসার সুবিধা দিতে এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে অন্যান্য সমস্যার সমাধানে ২০১৩র কোম্পানী আইন সরলীকরণ সহ একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক। এই মর্মে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত একাধিক পদক্ষেপ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

    বিশ্বব্যাঙ্কের ডুয়িং বিজনেস ২০২০র প্রতিবেদনে ভারতের স্হান অনেকটাই ওপরে উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৮ সালে ভারত যেখানে বিশ্বের মধ্যে ৭৭ নম্বর স্হানে ছিল, এখন তা ১৪ ধাপ ওপরে উঠে ৬৩ নম্বর স্হানে এসেছে। বিশ্বের মধ্যে সহজে ব্যবসার সুবিধা প্রদানএ ভারতের এই ১৪ ধাপ উত্থান বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ২০১৫ সালের পর থেকে ভারত ক্রমাগত এই ক্ষেত্রে উন্নতি করে আসছে। এই নিয়ে টানা তিনবার বিশ্বের ১০টি উন্নতসাধনকারী দেশগুলির মধ্যে ভারত স্হান করে নিয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক দেউলিয়া আইনের ক্ষেত্রেও একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী দেউলিয়া সমাধান সূচকএ ভারতের স্হান ১০৮ থেকে ৫৬ ধাপ ওপরে উঠে এসে ২০১৯এ ৫২তম স্হানে পৌঁছেছে। আর্থিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮য় যেখানে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ২৬.৫ শতাংশ, ২০১৯এ তা বেড়ে হয়েছে ৭১.৬ শতাংশ।

    আইন মেনে ব্যবসায়ীদের সহজে ব্যবসার সুবিধা প্রদানের জন্য কেন্দ্রীয় কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।

 

  • ইন্ডিগ্রেটেড ইনকর্পোরেশন ফর্ম- ইনকর্পোরেটিং কোম্পানীগুলির ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিন এই ব্যবস্হা এত সহজভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে যার ফলে একটি ফর্ম ব্যবহার করেই বৈদ্যুতিন উপায়ে তিনটি মন্ত্রকের ৮টি পরিষেবা মিলবে। বৈদ্যুতিন এই ব্যবস্হায় আবেদনপত্র দাখিলের প্রক্রিয়ায় সামঞ্জস্য এনে একক ব্যবস্হার মাধ্যমে ঐ ৮টি পরিষেবা পাওয়া যাবে। এই পরিষেবাগুলির মধ্যে রয়েছে, সিআইএন, প্যান, টিআইএন, ইপিএফও, ইএসআইসি এবং জিএসটিএন।   
  • ফৌজদারি আদালত এবং ন্যাশনাল কোম্পানী ল ট্রাইবুনাল প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর থেকে মামলার বোঝা কমাতে এবং কোম্পানী আইনের আওতায় কারিগরি ও এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার প্রয়োগের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘনের ঘটনাগুলিতে সংশ্লিষ্ট অভিযোগগুলির পৃথকীকরণের মাধ্যমে কোম্পানী সংশোধন বিল ২০১৯এর ১৬টি ধারা প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে আর্থিক জরিমানার কথা বলা হয়েছে।  
  • কেন্দ্রীয় সরকার রান (আরইউএন)- রিজার্ভ ইউনিক নেম নামে একটি অনলাইন পরিষেবা চালু করেছে, যাতে কোম্পানী নাম এলএলপি, ডিরেক্টর আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার পাওয়া যায়।
  • কম্পিটিশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া খুব সহজভাবে গ্রীন চ্যানেলের মাধ্যমে একযোগে স্বয়ংক্রিয় অনুমোদন ব্যবস্হাপনা চালু করেছে।
  • বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সরকারি কোম্পানী, নিধিস এবং আইএফএসসি (গিফ্ট সিটি)মতো কোম্পানী গুলির ছাড়ের জন্য কোম্পানী আইনএর পরিবর্তন করা হয়েছে।
  • সেবি আইনের সঙ্গে সাযুজ্য বজায় রেখে জনসাধারণকে প্রদেয় ছাড়ের সময়সীমা কমানো হয়েছে, যাতে বিনিয়োগকারীরা ছ দিনের পরিবর্তে আবেদনের তিন দিনের মধ্যে নিরাপত্তা পেতে পারেন।
  • বন্ড মার্কেট এবং মূলধনী খরচ কমানোর লক্ষ্যে ডিভেঞ্চার রিডেম্পশন রিজার্ভ (ডিডিআর) ব্যবস্হাপনা সংশোধনের সুবিধা রাখা হয়েছে।
  • স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিকর্তাদের নিয়ে তথ্য সম্বলিত ডাটা ব্যাঙ্ক চালু করা হয়েছে।
  • নাম নথিভুক্তিকরণ ও কোম্পানীগুলির একত্রীকরণের জন্য কেন্দ্রীয় রেজিস্ট্রেশন সেন্টার গঠন করা হয়েছে, যেখানে ১৫ দিনের পরিবর্তে ১-২ দিনের মধ্যেই নথিভুক্তিকরণের প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব।
  • বিগত ৩ বছরে ১ লক্ষ ২৫ হাজারের বেশি সংস্হার নাম নথিভুক্ত হয়েছে। বিগত বছরগুলিতে নথিভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে এই হার ছিল বার্ষিক ৫০-৬০ হাজার।
  • তালিকা বর্হির্ভূত রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্হাগুলির ইক্যুইটি নিরাপত্তা আরও সুবিন্যাস্ত করা হয়েছে।
  • কোম্পানি (নথিভুক্ত মূল্য নির্ণয়কারী এবং মূল্য নির্ধারণ) আইন চালু করা হয়েছে।
  • কোম্পানি (জরিমানা আরোপ) আইন সংশোধন করা হয়েছে, যাতে জরিমানা নির্ধারণ ব্যবস্হাকে আরও স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ করে তোলা যায়।
  • বাণিজ্যিক লেনদেন ব্যবস্হাকে আরও দায়বদ্ধ করে তুলতের জাতীয় নীতি নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
  • ২০১৩র কোম্পানী আইনের আওতায় ১৪ হাজারের বেশি অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
  • প্রথম জাতীয় সিএসআর পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

 

দেউলিয়া ও ঋণ পরিশোধ অক্ষমতার ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্হা গড়ে তুলতে নিম্নলিখিত ব্যবস্হা গ্রহণ করা হয়েছে-

 

সময় মতো মামলার সমাধান, সম্পত্তির মূল্যায়ন সহ একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দেউলিয়া বিধি সংশোধনী বিল ২০১৯ ইতিমধ্যেই সংসদে পাশ হয়েছে। ২০১৯এর ১৬ আগস্ট থেকে এই বিল কার্যকর হয়েছে। তবে দেউলিয়া বিধি সংক্রান্ত দ্বিতীয় সংশোধনী বিল ২০১৯- চলতি বছরের ১২ ডিসেম্বর লোকসভাতে পেশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে দেউলিয়া বিধি (দেউলিয়া এবং আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্হার ধার পরিশোধ পদ্ধতি ও বিচার নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষের জন্য প্রযোজ্য) আইন ২০১৯ চলতি বছরের ১৫ নভেম্বর জারি করা হয়েছে। এমনকি দেউলিয়া বিধি (ব্যক্তিগত জামিনদার থেকে কর্পোরেট ঋণ গৃহিতা পর্যন্ত বিচার নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষের জন্য প্রযোজ্য দেউলিয়া বিধি) আইন ২০১৯ এবং দেউলিয়া বিধি (ব্যক্তিগত জামিনদার থেকে কর্পোরেট জামিনদার পর্যন্ত বিচার নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষের জন্য প্রযোজ্য দেউলিয়া বিধি) আইন ২০১৯ চলতি বছরের ১৫ নভেম্বর জারি করা হয়েছে। পয়লা ডিসেম্বর এই আইন দুটি চালু হয়েছে। গৃহ ক্রেতা এবং অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের স্বার্থের দিকে তাকিয়ে ঋণ খেলাপি ব্যক্তিরা যাতে পুনরায় কোম্পানীর ক্ষমতায় না আসতে পারে তার জন্য ২০১৬র দেউলিয়া বিধি দুবার পরিবর্তন করা হয়েছে।

 দেউলিয়া বিধি ২০১৬ অনুযায়ী এ পর্যন্ত সাফল্য

 

  • ২১ হাজার ১৩৬-এরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে।
  • দেউলিয়া বিধিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে ৩,৭৪,৯৩১.৩০ কোটি টাকা মূল্যের ৯ হাজার ৬৫৩টি মামলার সমাধান হয়েছে।
  • কর্পোরেট দেউলিয়া সমাধান পদ্ধতি (সিআইআরপি)র মধ্যে ২ হাজার ৮৩৮টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। যারমধ্যে ৩৩৬টি মামলা আবেদন/পর্যালোচনা/প্রত্যাহারের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে।
  • ১৬১টি মামলার নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আদায় হয়েছে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা।
  • বিশ্ব ব্যাঙ্কের ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট ২০২০- দেউলিয়া সমাধান সূচক অনুযায়ী ভারত বিশ্বের মধ্যে ২০১৮র ১০৮ নম্বর স্হান থেকে ৫৬ ধাপ ওপরে উঠে এসে ৫২ নম্বর স্হান দখল করেছে।
  • আর্থিক পুনরুদ্ধার হার ২০১৮র ২৬.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭১.৬ শতাংশ।
  • আর্থিক পুনরুদ্ধারের সময়সীমা গ্রহণের ক্ষেত্রেও উন্নতি হয়েছে।  ২০১৮র যেখানে এক্ষেত্রে ৪ বছর ৩ মাস সময় লাগত, ২০১৯এ তা কমে হয়েছে ১৮ মাস।

 

 

CG/SS/NS



(Release ID: 1596788) Visitor Counter : 201


Read this release in: English