প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

দ্বিতীয় ভারত-চীন ঘরোয়া বৈঠক

Posted On: 14 OCT 2019 12:23PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১২ অক্টোবর, ২০১৯

 

 


১। ভারতের চেন্নাই –এ ১১-১২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চীনের রাষ্ট্রপতি মিঃ শি জিংপিং  দ্বিতীয় ঘরোয়া বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

২। উভয় নেতা সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দীর্ঘমেয়াদী, কৌশলগত দিকগুলি নিয়ে মতবিনিময় করেন।

৩। তাঁরা তাঁদের দেশের বিকাশের অভিমুখ নিয়ে আলোচনা করেন।

৪। আন্তর্জাতিক স্তরে ভারত-চীনের ক্রমবর্ধমান ভূমিকার আবহে তাঁরা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করেন।

৫। দুই নেতাই মনে করেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিষয়ে আরো সমন্বয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারত এবং চীন শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে একই মনোভাব পোষণ করে। যেখানে সকল রাষ্ট্রর উন্নয়ন আন্তর্জাতিক বিন্যাস অনুযায়ী হবে।

৬। ২০১৮ সালের এপ্রিলে চীনের উহানে প্রথম ঘরোয়া বৈঠকে যে মতৈক্যে পৌঁছানো গিয়েছিল, তাঁরা সেটি পুনর্ব্যক্ত করেন। বর্তমান আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ভারত ও চীন স্থিতাবস্থাকে একটি বিশেষ অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করে। দুটি দেশের মধ্যে যে সব মতপার্থক্য রয়েছে, তা কোন বিবাদে পরিণত না করে দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে সমাধান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

৭। উভয় নেতাই মনে করেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত রক্ষা এবং নিয়ম মেনে তার সমন্বয়ের প্রশ্নে ভারত ও চীনের স্বার্থ অভিন্ন। এখানে একবিংশ শতাব্দির নতুন নতুন বাস্তবতাও প্রতিফলিত হচ্ছে। যখন আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যবসা বাণিজ্য নির্দিষ্ট সহমতের ভিত্তিতে হয় এবং বাছাই করা নিয়মগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়, এই পরিস্থিতিতে নিয়ম মেনে বহুস্তরীয় ব্যবসা বাণিজ্যকে আরো জোরদার করার বিষয়ে উভয়েই সহমত হয়েছেন।

৮। জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্থিতিশীল উন্নয়ন সহ বিশ্বজুড়ে বিকাশের ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জগুলি রয়েছে দুই নেতাই নিজ নিজ দেশে সেগুলি সমাধানে উদ্যোগী হবার ক্ষেত্রে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এই উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সহ হবে।

৯। উভয় নেতাই সন্ত্রাসবাদকে একটি অভিন্ন সমস্যা বলে মনে করেন। যেহেতু দুটি দেশই বিশাল ও বৈচিত্রপূর্, তাই তাঁরা মনে করেন, যে কোন আপসনীতির উর্দ্ধে উঠে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠিগুলিকে যারা প্রশিক্ষণ, অর্থ জোগান সহ নানা ভাবে সমর্থন করে, তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো কঠোর হতে হবে।

১০। দুটি দেশের সভ্যতা যেহেতু প্রাচীন, উভয় নেতা তাই দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বোঝাপড়ার লক্ষ্যে আরো আলাপ আলোচনা বৃদ্ধির উপর জোর দেন। ইতিহাসের নিরীখে বৃহৎ সভ্যতার অংশীদার হওয়ায়, বিশ্বের অন্যান্য অংশের সভ্যতা-সংস্কৃতির সঙ্গে যোগসুত্র গড়ার ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করার বিষয়ে উভয় নেতা সহমত হয়েছেন।

১১। এই অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও স্থিতাবস্থা নিশ্চিত করতে মুক্তচিন্তা, সমন্বিত, সমৃদ্ধশালী এবং স্থিতিশীল পরিবেশ গড়ার লক্ষ্যে তাঁরা সহমত হন। পারস্পরিক সুবিধা এবং সুষম আঞ্চলিক সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারীত্বের জন্য তাঁরা আলাপ আলোচনার উপর জোর দেন।

১২। বিগত দুই হাজার বছর ধরে সামুদ্রিক যোগাযোগ সহ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক এবং জনসাধারণের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে অজন্তা এবং দুনহুয়াং এর মতো তামিলনাড়ু ও ফুজিয়ানের মধ্যে ভগিনীসম রাজ্যের মর্যাদা স্থাপনে দুই নেতা সহমত হয়েছেন। যার ফলে দুই দেশের মধ্যে শতাব্দী প্রাচীন সম্পর্কের আবহে সামুদ্রিক যোগাযোগের উপর গবেষণা করা যাবে।

১৩। উভয় নেতাই তাঁদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁদের পরিকল্পনার কথা জানান। ভারত ও চীনের একযোগে বিকাশ হলে পারস্পরিক নানা সুযোগ সুবিধে বৃদ্ধির বিষয়ে তাঁরা সহমত হন। দুটি দেশের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই পক্ষই একে অন্যের নীতি এবং কর্মসূচিকে চুড়ান্ত, বাস্তবধর্মী এবং খোলা মনে বিবেচনা করবে। সেই লক্ষ্যে সংলাপের সুযোগ ব্যবহার করে, দুটি দেশ পারষ্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি নিয়ে কৌশলগত যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় উচ্চপর্যায়ের আলাপ আলোচনা করবে।

১৪। উভয় নেতাই মনে করেন সঠিক দিশায় এগোলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌছাবে। এই প্রচেষ্টায় দুই দেশের জনগণের সমর্থন জরুরী। এই লক্ষ্যে দুই নেতা ২০২০ সালকে ভারত-চীন সাংস্কৃতিক ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগের বছর হিসেবে চিন্হিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০২০ সালে ভারত-চীনের সম্পর্ক ৭০ বছরে পড়বে। এই উপলক্ষ্যে, দুই দেশের জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক ও যুব সংগঠন এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর  মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ গড়ে তোলা হবে। কুটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তিতে দুটি দেশ দুই সভ্যতার মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক খুঁজে বেড় করতে সমুদ্রযাত্রায় সম্মেলন সহ ৭০ রকম কর্মসূচী হাতে নেবার পরিকল্পনা করেছে।
১৫। ব্যবসাবাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক আলোচনার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার জন্য দুই নেতা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও নিবিড়ভাবে উন্নয়নমুখী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা সম্ভব হবে

১৬। সীমান্ত বিষয়ে মতানৈক্য সহ বকেয়া নানা বিষয়ে উভয় নেতা তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন। ২০০৫ সালে দুই পক্ষের পরামর্শদাতারারাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা এবং বিভিন্ন নীতি মেনে চলার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তার মাধ্যমে স্বচ্ছ, যুক্তিসঙ্গত, এবং পারস্পরিক সহমতের ভিত্তিতে বিশেষ প্রতিনিধিদল যেভাবে কাজ করছে , দুই নেতা তাকে স্বাগত জানান। সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখা নিশ্চিত করতে তাঁরা পারষ্পরিক বোঝাপড়ার উপর জোর দেন। এর জন্য আস্থাবর্ধক নানা কর্মসূচী দুই পক্ষই গ্রহণ করবে।   

১৭। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি শি ঘরোয়া বৈঠকের এই উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন। “উহান স্পিরিট” এবং “চেন্নাই কানেক্ট” এর মাধ্যমে নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতেও এই উদ্যোগ বজায় রাখার জন্য তাঁরা সহমত হয়েছেন। তৃতীয় ঘরোয়া বৈঠকের জন্য রাষ্ট্রপতি শি ,প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চীনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।

 



CG/CB


(Release ID: 1587995) Visitor Counter : 170


Read this release in: English