শিল্পওবাণিজ্যমন্ত্রক
নতুন দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য ফোরামের বৈঠক
Posted On:
04 OCT 2019 3:06PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৪ অক্টোবর, ২০১৯
নতুন দিল্লিতে বৃহস্পতিবার ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য ফোরামের বৈঠকে কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্য ও রেলমন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েল বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগী নয় বরং সহযোগী। দু’দেশের জনগণের সমৃদ্ধময় ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করতে হবে। এই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রী পীযূষ গোয়েল বাংলাদেশের উন্নয়নে সঙ্গী হতে পরিকাঠামো, প্রযুক্তি এবং বিদ্যুৎক্ষেত্রে ভারতীয় শিল্প সংস্থাগুলিকে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
শিল্প-বাণিজ্য ও রেলমন্ত্রী সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভারত সহায়তা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। কারণ, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের ফলে দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার ঘটবে এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে।
বাংলাদেশ সরকার এবং শিল্প সংস্থাগুলির সঙ্গে ভারতীয় শিল্পপতিদের মতবিনিময় করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকার এবং তিনটি চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশে রপ্তানির সুযোগ বাড়াতে এবং ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের সুবিধার জন্য সে দেশে তিনটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) গড়ে তোলা হয়েছে।
এই উপলক্ষে বাংলাদেশ ও টেক মাহিন্দ্রার মধ্যে এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ও আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেড-এর মধ্যে দুটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সবথেকে বড় বাণিজ্য সঙ্গী। গত এক দশক ধরে দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ভারত বাংলাদেশে ৯২১ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের সামগ্রী রপ্তানি করেছে এবং ঐ একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ১২২ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের সামগ্রী আমদানি হয়েছে।
ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যে সুবিধার জন্য এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বাণিজ্য চুক্তি (এপিটিএ), সার্ক প্রেফারেন্সিয়াল বাণিজ্য চুক্তি (এসএপিটিএ) এবং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের জন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এসএএফটিএ)-র মতো বিভিন্ন চুক্তি রয়েছে। এসএপিটিএ-র আওতায় ভারত বাংলাদেশকে মদ এবং সিগারেট ছাড়া বাকি সব সামগ্রীর নিঃশুল্ক আমদানির অনুমতি দিয়েছে। দুটি দেশের বাণিজ্য সচিব, জাহাজ চলাচল মন্ত্রক, বাণিজ্য, সীমাশুল্ক-সহ একটি যৌথ কর্মীগোষ্ঠী এবং ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকদের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক হয়।
উভয় দেশের সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য ত্রিপুরায় শ্রীনগর এবং কমলাসাগরে ও মেঘালয়ের কালাইচর ও বালাত-এ সীমান্ত হাট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, আগামীদিনে এরকম আরও ১০টি হাট তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।
২০১৪ সালে ভারত থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২৪ কোটি ৩০ লক্ষ মার্কিন ডলারের বেশি। ২০১৮-র ডিসেম্বরে এই পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭ কোটি ১ লক্ষ মার্কিন ডলারের বেশি। ভারতীয় শিল্প সংস্থাগুলি টেলি-যোগাযোগ, ওষুধ, গাড়ি নির্মাণ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে। ২০১৭-র এপ্রিল মাসে শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ১৩টি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয় যার ফলে, বিদ্যুৎ এবং শক্তিক্ষেত্রে ১ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ভারতীয় বিনিয়োগ নিশ্চিত করা হয়।
বাংলাদেশ ভারতের সবথেকে বড় উন্নয়নের সঙ্গী। গত আট বছরে ভারত বাংলাদেশকে তিনটি সহজে ঋণদানের সুযোগ করে দিয়েছে যার পরিমাণ ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার। এছাড়া, আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগ, অভ্যন্তরীণ জলপথের পলি তোলা, দু’দেশের মধ্যে পাইপলাইন স্থাপন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জলবন্টন, সংস্কৃতি, নগরোন্নয়ন, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রূপায়ণে ভারত বাংলাদেশকে অর্থ সাহায্য করে আসছে।
SSS/CB/DM
(Release ID: 1587194)
Visitor Counter : 137