উপ-রাষ্ট্রপতিরসচিবালয়
দেশের সমৃদ্ধশালী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় সরকার এবং সুশীল সমাজের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার পরামর্শ উপ-রাষ্ট্রপতির
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত ভবন ‘শ্যামলী’ উদ্বোধন এবং জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন উপ-রাষ্ট্রপতি
Posted On:
16 AUG 2019 6:41PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৬ আগস্ট, ২০১৯
উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু আমাদের দেশের সমৃদ্ধশালী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের ঐতিহ্যশালী পুরাকীর্তিগুলি রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকার এবং সুশীল সমাজকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার ওপরও তিনি পরামর্শ দেন। উপ-রাষ্ট্রপতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত ‘শ্যামলী’ ভবনটির পুনর্নির্মাণের পর তা উদ্বোধন ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ ভাষণ দিচ্ছিলেন।
১৯৩৫ সালে শান্তিনিকেতনে কাদামাটি দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ‘শ্যামলী’ নির্মাণ করা হয়। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ সম্প্রতি এই বাড়িটি সংস্কার করে। বর্তমানে এটি বিশ্বভারতীর সম্পত্তি। উপ-রাষ্ট্রপতি বলেন, রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্ম আজও বাংলা ভাষায় স্তম্ভ-স্বরূপ। ভারতবর্ষে, বিশেষত বাংলায় তিনি একটি প্রতিষ্ঠান এবং সারা বিশ্বের কাছে তিনি ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের প্রতিনিধি। তিনি প্রকৃতই ভারতের গর্ব।
শ্রী নাইডু বলেন, শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ধর্মীয় এবং আঞ্চলিক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। মানবতা, আন্তর্জাতিকতা এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের নীতিতে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকার সাঁওতাল অধ্যুষিত গ্রামগুলির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে গ্রামবাংলার পুনর্গঠন এবং গ্রামাঞ্চলের নানা সমস্যার ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীদের চেতনা জাগিয়ে তোলার যে প্রয়াস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চালিয়েছিলেন, উপ-রাষ্ট্রপতি তার বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, আমি আমার বাড়ির চারদিকে পাঁচিল তুলে জানালা বন্ধ করতে চাই না। মহাত্মা গান্ধী চাইতেন, তাঁর ঘরে সব জায়গার সংস্কৃতি মিলিত হোক। কিন্তু নিজের সংস্কৃতি অটুট
থাকুক। শ্রী নাইডু বলেন, শান্তিনিকেতন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তার ঐতিহ্য বজায় রেখে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।
উপ-রাষ্ট্রপতি বলেন, ভারত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের খনি। আমাদের ঐতিহ্যই আমাদের পরিচয়। এই কারণেই আমরা অনন্য এবং ব্যতিক্রমী। আমাদের পুরাকীর্তিগুলি যেন কালের নিগড়ে অবহেলায় মুছে না যায়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ আমাদের সমৃদ্ধশালী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষা করে তা চতুর্দিকে ছড়িয়ে দেওয়ার পক্ষপাতি ছিলেন। প্রতিটি স্থাপত্যকে রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। যার ফলে ভারতের ঐতিহ্যশালী ইতিহাস রক্ষা পাবে। তিনি আশা করেন, এই ঐতিহ্যশালী ভবনটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে ভারতের সেই চিরায়ত বাণী বজায় থাকবে, যা আমাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রতীক।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল শ্রী জগদীপ ধনকর, রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী, বিশ্ব ভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সহ বিশিষ্ট জনেরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উপ-রাষ্ট্রপতির অভিভাষণ
আমি আজ অত্যন্ত আনন্দিত যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য ‘শ্যামলী’র উদ্বোধন করে তা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করছি।
১৯৩৫ সালে শান্তিনিকেতনের কাদামাটি দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ‘শ্যামলী’ নির্মাণ করা হয়। আমার জেনে খুব ভালো লাগছে যে, সম্প্রতি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ এই বাড়িটি সংস্কার করে। আমাকে বলা হয়েছে যে, ঐতিহাসিক এই ভবন বর্তমানে বিশ্বভারতীর সম্পত্তি।
মাত্র ১২ বছর বয়সে প্রথমবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন। সেই সময় তিনি তাঁর বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নির্মিত ভবন শান্তিনিকেতন গৃহে বসবাস করেছিলেন। শান্তিনিকেতন নামটি সেই বাড়ি থেকেই নেওয়া, যা আজ স্বতঃস্ফূর্ত ঔপনিবেশিক নক্শার নিদর্শন।
রবীন্দ্রনাথ শৈশবে স্কুলে পড়ার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একটি শিক্ষা ব্যবস্থা শান্তিনিকেতনে ১৯০১ সালে গড়ে তোলেন। যেখানে শিশুরা চার দেওয়ালের গণ্ডীতে আবদ্ধ থাকবে না। সেই সময় তিনি শান্তিনিকেতন আশ্রমে উত্তর প্রান্তে ৫টি নতুন বাড়ি তৈরি করেন। ঐ এলাকাটি আজ উত্তরায়ন নামে পরিচিত। এই ৫টি বাড়ির নাম – কোণার্ক, উদায়ন, শ্যামলী, পুনশ্চ এবং উদিচি।
ইতিহাস বলে যে, শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিভিন্ন সময়ে এই বাড়িগুলিতে থেকেছেন এবং তাঁর চাহিদা অনুযায়ী প্রতিটি বাড়ির নক্শা তৈরি করেছিলেন।
আমাকে জানানো হয়েছে যে, শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কংক্রিটে তৈরি বাড়িতে থাকা পছন্দ করতেন না। তাঁর ইচ্ছে ছিল মাটির বাড়িতে থাকা। সেই কারণেই শ্যামলী তৈরি করা হয়। এই বাড়ির ছাদও মাটি দিয়ে তৈরি।
তিনি আশা করেছিলেন, গ্রাম বাংলার দারিদ্র্যক্লিষ্ট পরিবারগুলি খড়ের ছাউনির বদলে মাটির চালের বাড়ি তৈরিতে উৎসাহী হবেন। খড় আগুনে সহজেই ধ্বংস হয়ে যায়। প্রাকৃতিকভাবে ঘরগুলি ঠান্ডা রাখার জন্য মোটা মাটির দেওয়ালে এবং ছাদে মাটির তৈরি ফাঁকা পাত্র রাখা হয়েছিল।
১৯৩৬ সালে শ্যামলী নামে একটি কাব্যগ্রন্থ রচনার মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ এই বাড়িটিকে অমরত্ব দান করেছেন।
আমি জেনে অত্যন্ত আনন্দিত যে, সুরেন্দ্রনাথ কর এই বাড়ির নক্শা বানিয়েছিলেন। গৌর মন্ডলের তত্ত্বাবধানে সাঁওতালী শিল্পীরা বাড়িটি তৈরি করেন। বিশ্বভারতীর কলা ভবনের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে নন্দলাল বসু এবং রামকিঙ্কর বেজ এই বাড়িটিকে সাজিয়েছিলেন।
এটা খুব গর্বের বিষয় যে, ১৯৪০ সালে শান্তিনিকেতন সফরকালে মহাত্মা গান্ধী এবং কস্তুরবা গান্ধী এই বাড়িতে এসে থেকেছিলেন। কবির মৃত্যুর পরও তাঁরা এই বাড়িতে থাকতেই পছন্দ করতেন।
আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
১৯১৩ সালে এশিয়া থেকে প্রথম শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন কলকাতার বাসিন্দা, যিনি বাংলায় লিখতেন এবং তাঁর সাহিত্যকর্ম ইংরাজী ভাষায়ও অনুবাদ করতেন।
তিনি কবিতা, প্রবন্ধ, নাটক, রচনা এবং গান লিখতেন। তিনি শিক্ষা ও সংস্কৃতি এবং ধর্মের সংস্কার করেছেন। তাঁর ৬০ বছর বয়সের পর তিনি ভিস্যুয়াল আর্ট নিয়েও কাজ করেছেন। মৃত্যুর আগে প্রায় আড়াই হাজার ছবি এবং চিত্রকলার সৃষ্টি করেছেন।
রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য আজও বাংলা ভাষার স্তম্ভ-স্বরূপ। রবীন্দ্রনাথের কবিতাগুলি থেকে সুরারোপ করে যে গান সৃষ্টি হয়েছে তাই রবীন্দ্র সঙ্গীত হিসাবে পরিচিত। বাংলা সঙ্গীতকে যা জনপ্রিয় করে তুলেছিল।
তাঁর কিছু কবিতার অনুবাদ পাশ্চাত্যে বহুল পরিচিত। তাঁর খ্যাতি বিভিন্ন মহাদেশে বক্তৃতা এবং সফরের মাধ্যমে বিস্তৃত হয়েছিল।
ভারতবর্ষে, বিশেষত বাংলায় তিনি একটি প্রতিষ্ঠান এবং সারা বিশ্বের কাছে তিনি ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের প্রতিনিধি।
তিনি প্রকৃতই ভারতের গর্ব।
শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ধর্মীয় ও আঞ্চলিক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। ১৮৬৩ সালে শ্রেণীকক্ষের ঘেরাতোপের বাইরে বেরিয়ে শিক্ষাকে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশে শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।
১৯৮১ সালের মধ্যে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি লাভ করে। আজও সৃজনশীল মননে বিশ্বভারতী চিরস্থায়ী। মানবতা, আন্তর্জাতিকতা এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের নীতিতে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনকে গড়ে তুলেছিলেন।
তিনি শিল্পকলা, মানবিক মূল্যবোধ এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে এখানে একটি অনন্য পাঠক্রম তৈরি করেছিলেন। আজও যে কেউ শান্তিনিকেতনে তাঁর উপস্থিতি উপলব্ধি করেন।
কবি বিশ্বাস করতেন, উচ্চ শিক্ষা আমাদের শুধু তথ্য সমৃদ্ধ করে না, তা আমাদের জীবনের অস্তিত্বের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রকৃতি পাঠের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
রবীন্দ্রনাথ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকার সাঁওতাল গ্রামগুলির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এর মাধ্যমে গ্রাম বাংলার পুনর্গঠন এবং গ্রামাঞ্চলে নানা সমস্যার ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীদের চেতনা জাগিয়ে তোলার প্রয়াস কবি নিয়েছিলেন। আমার জেনে খুব ভালো লাগছে, কবির এই উদ্যোগের ফলেই শান্তিনিকেতন আজ পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষিত সাঁওতালদের সর্ববৃহৎ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
আমাদের জাতির জনক বলেছিলেন, আমি আমার বাড়ির চারদিকে পাঁচিল তুলে জানালা বন্ধ করতে চাই না। আমার ঘরে সব জায়গার সংস্কৃতি মিলিত হোক কিন্তু নিজের সংস্কৃতি অটুট থাকুক। বছরের পর বছর ধরে রবীন্দ্রনাথের ইচ্ছে অনুসারে শান্তিনিকেতন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তার ঐতিহ্য বজায় রেখে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।
আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
রবীন্দ্রনাথ আমাদের সমৃদ্ধশালী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষা করে তা চতুর্দিকে ছড়িয়ে দেওয়ার পক্ষপাতি ছিলেন। তিনি একবার বলেছিলেন, সঙ্গীত এবং চিত্রকলা ছাড়া কোনও জাতির আত্মপ্রকাশ করতে পারে না। এমনকি, জনগণও সেক্ষেত্রে অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে সক্ষম হয় না।
ভারত, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের খনি। আমাদের ঐতিহ্যই আমাদের পরিচয়। এই কারণে আমরা অনন্য এবং ব্যতিক্রমী। ভারত তার সমৃদ্ধ এবং বহুত্ববাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারণে সারা পৃথিবীতে অনন্য।
আমাদের পুরাকীর্তিগুলি যেন কালের নিগড়ে অবহেলায় মুছে না যায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে, যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম এগুলির বিষয়ে জানতে পারেন।
সময় অবিনশ্বর। ভারত তার পুরাকীর্তির জন্য পরিচিত। ভারতের গ্রামাঞ্চলে স্থাপত্যগুলির নক্শা এবং স্থানীয় উপাদান দিয়ে সেগুলিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা আঞ্চলিক স্তরে বিভিন্ন রীতিনীতির মূর্ত প্রতীক।
ভারতের স্থাপত্যগুলি স্থিতিশীলতার উদাহরণ। এগুলির কাঠামো থেকে স্থিতিশীল আবাসনের একটি ধারণা পাওয়া যায়, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতের স্থপতিরা উপকৃত হবেন।
এগুলির পুনর্নির্মাণ যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।
কাজটা সোজা নয়। আমরা আমাদের ঐতিহ্যশালী স্থাপত্যগুলিকে অবহেলায় নষ্ট করতে পারি না। সংস্কৃতে বলা আছে – সম্পদ পাওয়ার থেকে তা রক্ষা করা বেশি কষ্টকর।
আমি ‘শ্যামলী’র পুনর্নির্মাণের কাজে এএসআই কর্তৃপক্ষের ভূমিকার প্রশংসা করি।
সরকার এবং সুশীল সমাজকে একযোগে আমাদের দেশের সমৃদ্ধশালী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলি রক্ষা করতে হবে।
দেশের ঐতিহ্যশালী পুরাকীর্তিগুলি রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকার ও সুশীল সমাজকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। দেশের প্রতিটি নাগরিকের এই ঐতিহ্যশালী স্থাপত্যগুলি রক্ষা করার দায়িত্ব রয়েছে।
জনগণকে এই ধরণের মূল্যবান স্থাপত্যগুলি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে এবং কেউ যেন এগুলিকে নষ্ট না করেন এবং অপব্যবহার না করেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আমার খুব ভালো লাগছে যে, সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন স্মারক এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলিকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে সরকারি – বেসরকারি অংশীদারিত্বে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ধরণের উদ্যোগ আরও নিতে হবে।
এই বাড়িটিকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে ভারতের সেই চিরায়ত বাণী বজায় থাকবে, যা আমাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রতীক।
আমি আশা করবো, এই স্থাপত্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে জ্ঞানার্জনের একটি কেন্দ্র হয়ে উঠবে। আমি রবীন্দ্র ঠাকুরের রচনা থেকেই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি –
চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর
আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী
বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করি,
যেথা বাক্য হৃদয়ের উৎসমুখ হতে
উচ্ছ্বসিয়া উঠে, যেথা নির্বারিত স্রোতে
দেশে দেশে দিশে দিশে কর্মধারা ধায়
অজস্র সহস্রবিধ চরিতার্থতায়,
যেথা তুচ্ছ আচারের মরুবালুরাশি
বিচারের স্রোতঃপথ ফেলে নাই গ্রাসি,
পৌরুষেরে করে নি শতধা, নিত্য যেথা
তুমি সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা,
নিজ হস্তে নির্দয় আঘাত করি, পিতঃ;
ভারতেরে সেই স্বর্গে করো জাগরিত॥
এই কবিতাই হোক আপনাদের চলার পথের অনুপ্রেরণা।
ধন্যবাদ।
জয়হিন্দ।
CG/CB/SB
(Release ID: 1582197)
Visitor Counter : 2382