আদিবাসীবিষয়কমন্ত্রক

আদিবাসী সংস্থাগুলিকে নিয়ে জাতীয় কর্মশালার উদ্বোধন করলেন শ্রী অর্জুন মুন্ডা গুরুত্ব মধু বাঁশ ও লাক্ষায়

Posted On: 08 AUG 2019 4:14PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৮ অগাস্ট, ২০১৯

 

 

 

কেন্দ্রীয় আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী অর্জুন মুন্ডা আজ নতুন দিল্লিতে ট্রাইফেড এবং আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রক আয়োজিত আদিবাসী সংস্থাগুলিকে নিয়ে জাতীয় কর্মশালার উদ্বোধন করেন। এই কর্মশালায় জোর দেওয়া হয়েছে মধু, বাঁশ এবং লাক্ষার ওপর। উপস্থিত ছিলেন আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতী রেণুকা সিং, সচিব শ্রী দীপক খান্ডেকর এবং ট্রাইফেড-এর এমডি শ্রী প্রবীর কৃষ্ণ। বাঁশ, লাক্ষা এবং মধু নিয়ে প্রচারপত্র ও প্রতিবেদন পেশ করেন শ্রী মুন্ডা।

 

উদ্বোধনী ভাষণে শ্রী অর্জুন মুন্ডা বলেন, শুধু কর্মসংস্থানের দিকে লক্ষ্য রেখেই এই উদ্যোগের সীমিত থাকা উচিৎ নয়, নজর দিতে হবে বাজারের চাহিদা মেটানোর ওপর। বাজারের দিকে লক্ষ্য রেখেই সহায়ক ব্যবস্থা এবং গবেষণা করতে হবে। ভারসাম্য রাখতে হবে চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে। জোর দিতে হবে উদ্ভাবনের ওপর। গুণমানের পাশাপাশি, মূল্য নির্ধারণ করতে হবে সঠিকভাবে। আদিবাসীদের উদ্যোগী হিসেবে দেখতে হবে এবং তাঁদের প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় ঘটাতে হবে।

 

এই অনুষ্ঠানে শ্রীমতী রেণুকা সিং বলেন, এই ধরনের উদ্যোগের ফলে বন ধন বিকাশ কেন্দ্রগুলি শক্তিশালী হবে। বন ধন, জন ধন এবং পশু ধন – এই তিনটি মিলে আদিবাসীদের জীবনে উল্লেখযোগ্যভাবে বদল ঘটাবে।

 

শ্রী দীপক খান্ডেকর তাঁর স্বাগত ভাষণে বলেন, বন ধন কর্মসূচিতে বাঁশ, মধু ও লাক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করার কারণ হল যে এই পণ্যগুলির বাজারে এমনিতেই চাহিদা আছে। ফলে, উৎপাদক যথা – আদিবাসী উদ্যোগীরা সহজেই প্রাথমিক স্তর থেকে বিপণন পর্যন্ত সব কাজেই জড়িত থাকতে পারবেন।

 

উদ্বোধনী অধিবেশনের পর বাঁশ, লাক্ষাজাত পণ্য এবং মধু নিয়ে কারিগরি অধিবেশন হয়। সেখানে বিশেষজ্ঞরা এইসব পণ্য নিয়ে তাঁদের মতামত জানান। এই কর্মশালায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের বিশেষজ্ঞরা আদিবাসী সংস্থাগুলির জন্য উপযুক্ত পথ ও পদ্ধতির ব্যাখ্যা করেন।

 

বাঁশ

বিশ্বে চিনের পরেই ভারত দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁশ উৎপাদনকারী দেশ। এখানে ১৩৬ ধরনের বাঁশ পাওয়া যায়। ১৩.৯৬ মিলিয়ন হেক্টর জুড়ে বাঁশ চাষ করা হয়। কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের তথ্যানুযায়ী, ভারতে বার্ষিক উৎপাদন ৩.২৩ মিলিয়ন টন। হেক্টর প্রতি বাঁশের কম উৎপাদন ভারতের চিরাচরিত সমস্যা। চিনে যেখানে হেক্টর প্রতি ৫০ মেট্রিক টন বাঁশ উৎপাদন হয়, সেখানে ভারতে হেক্টর প্রতি সর্বোচ্চ ১০-১৫ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়। ফলে বোঝা যায় যে এর জন্য অনেক কিছু করার আছে। বাঁশ দিয়ে অনেক ধরনের পণ্য তৈরি করা যায় এবং আদিবাসীদের আয়ের জন্য অত্যন্ত উপযোগী এই ক্ষেত্রটি।

 

মধু

কৃষি দপ্তরের অধীন ন্যাশনাল বি বোর্ড থেকে প্রাপ্ত সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮-য় দেশে মোট মধু উৎপাদন হয়েছিল ১.০৫ লক্ষ মেট্রিক টন। ২০০৫-০৬-এ এই উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। গোটা বিশ্বেই মধুর চাহিদা রয়েছে। এর ৫০ শতাংশই ভারত রপ্তানি করে। গত ১২ বছরে রপ্তানি বেড়েছে ২০৭ শতাংশ। ভারত ৬১,৩৩৩.৮৮ মেট্রিক টন প্রাকৃতিক মধু রপ্তানি করেছে যার আর্থিক মূল্য ৭৩২ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। রপ্তানি করা হয়েছে মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, আরব আমিরশাহী, সৌদি আরব, মরক্কো, কাতার, জার্মানি, ব্রিটেন, জাপান, ফ্রান্স স্পেন এবং ইতালিতে। আদিবাসীদের মধু সংগ্রহ এবং তার প্রক্রিয়াকরণের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। কেভিআইসি ছাড়াও বন দপ্তরের সঙ্গে যৌথভাবে এই উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। মৌমাছিদের পছন্দের গাছ লাগানো এবং সেগুলি সংরক্ষণের বিষয়ে তারাই পরামর্শ দেবে। সরকারি সমীক্ষা অনুযায়ী, এই ক্ষেত্রে প্রায় ৩ লক্ষ মানব দিবস সৃষ্টি হতে পারে। মধু হতে পারে আয়ের প্রধান উৎস এবং ট্রাইফেড প্রধানমন্ত্রীর ‘স্যুইট রেভোলিউশন’ বা মিষ্টি বিপ্লবের ভাবনার জন্য দায়বদ্ধ।

 

লাক্ষা

এক সময় ভারত থেকে ইউরোপে প্রচুর পরিমাণে লাক্ষা রপ্তানি হত। প্রধানত লাক্ষা চাষ হয় ঝাড়খণ্ডে। দেশের মোট উৎপাদনের ৫৭ শতাংশই হয় সেখানে। এরপর মধ্যপ্রদেশে ২৪ শতাংশ এবং বাকি ১৯ শতাংশ মহারাষ্ট্র, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত হয়। লাক্ষা চাষের মাধ্যমে আদিবাসীদের আয়ের একটি সহায়ক ব্যবস্থা হতে পারে। ১৯৫০-এর মাঝামাঝি ভারতে উৎপাদন হত ৫০ হাজার টন লাক্ষা এবং রপ্তানি হত ২৯ হাজার টন। ১৯৮০-র দশকের শেষ নাগাদ তা কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১২ হাজার টন ও সাত হাজার টন। তবে, ১৯৯২-৯৩ নাগাদ ভারতের রপ্তানি কমে দাঁড়ায় মাত্র সাড়ে চার হাজার টন। ঐ একই সময়ে থাইল্যান্ড এবং চিনের মতো দেশ তাদের রপ্তানি বাড়িয়ে ফেলে। বর্তমানে ভারতের লাক্ষা রপ্তানি প্রায় একরকম হয় না বললেই চলে। তাই, আদিবাসী অঞ্চলগুলিতে লাক্ষা চাষ এবং তার প্রক্রিয়াকরণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে যাতে আদিবাসীদের জীবনযাত্রার পরিবর্তন ঘটে এবং আয় বৃদ্ধির সুযোগ ঘটে।

 

 

 

CG/AP/DM


(Release ID: 1581530) Visitor Counter : 269


Read this release in: English