অর্থমন্ত্রক
উন্নয়ন হার ৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ
Posted On:
04 JUL 2019 9:16PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৪ জুলাই, ২০১৯
অর্থনৈতিক উন্নতির উজ্জ্বল ছবি ফুটে উঠেছে এবারের অর্থনৈতিক সমীক্ষায়। প্রধানমন্ত্রীর ভাবনা অনুযায়ী, ২০২৪-২৫-এর মধ্যে ভারতীয় অর্থনীতিকে ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছে দিতে পদ্ধতিগত ও প্রক্রিয়াগত পরিবর্তন জরুরি বলা হয়েছে সমীক্ষায়। ভারতকে ৮ শতাংশ উন্নয়ন হারে পৌঁছনোর প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এবারের অর্থনৈতিক সমীক্ষায়। এর জন্য প্রাচীন চিন্তাভাবনা পরিহার করে নতুন পথে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সকলের জন্য উন্নতি – এই লক্ষ্য সফল করতে জোর দেওয়া হয়েছে বেসরকারি লগ্নির ওপর। উন্নয়ন করতে রপ্তানির ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। সঞ্চয় বাড়লে বাড়বে চাহিদা, যা মূল লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে।
আগামীদিনে চাহিদা, কর্মসংস্থান, রপ্তানি – এসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যাকে আলাদাভাবে না দেখে একে অন্যের পরিপূরক বলে দেখার সুপারিশ করা হয়েছে সমীক্ষায়। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, জনকল্যাণের তথ্য, আইনি সংস্কার এবং নীতি নির্ধারণে দৃঢ়তা ও ব্যবহারিক অর্থনীতির নীতিগুলি ব্যবহার করে ব্যবহারিক পরিবর্তনে উৎসাহ দেওয়া। অধিক কর্মসংস্থানের জন্য অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগকে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি, মূলধনী খরচ কমানো এবং ঝুঁকি আছে এমন ব্যবসা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক সমীক্ষা জানিয়েছে, গত পাঁচ বছরে ভারতের অর্থনীতি সফল। সমাজের নিচের স্তর পর্যন্ত উন্নয়নের সুফল পৌঁছনো নিশ্চিত করেছে সরকার। যেখানে বিশ্বে অর্থনৈতিক অগ্রগতির হার নিম্নমুখী, সেখানে ভারত ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে উঠে এসেছে চিনকে পেছনে ফেলে। এই পাঁচ বছরের গড় মুদ্রাস্ফীতি তার আগের পাঁচ বছরের তুলনায় কম এবং স্বাধীনোত্তরকালে সবচেয়ে কম। চলতি খাতে ঘাটতি নাগালের মধ্যেই আছে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সমীক্ষা।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আধার আইনের মাধ্যমে কল্যাণমূলক কর্মসূচির সুফল আর্থ-সামাজিক স্তরের সবচেয়ে নিচে পৌঁছনো নিশ্চিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা এবং জন ধন, আধার, মোবাইল – এই ত্রিফলার মাধ্যমে বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচির ৭ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা উচিৎ প্রাপকদের কাছে পৌঁছনো নিশ্চিত হয়েছে। বর্তমানে ৫৫টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ৩৭০টি নগদ-ভিত্তিক কর্মসূচির সুফল পৌঁছে দিচ্ছে ডিবিটি-র মাধ্যমে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০১৪-১৯-এর মধ্যে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে। ২০১৮-র এপ্রিলের মধ্যে প্রত্যেক দেশবাসীর কাছে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। জাতীয় সড়ক নির্মাণের গতি বেড়েছে। বিভিন্ন শহরের মধ্যে বিমান যোগাযোগ শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় করের থেকে রাজ্য সরকারগুলিকে দেয় অংশের পরিমাণ ৩২ শতাংশ থেকে ৪২ শতাংশ করায়, আর্থিক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়েছে। শ্রম এবং ভূমি আইনের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা রূপায়ণে জিএসটি বড় ভূমিকা নিয়েছে।
২০১৭-য় দেউলিয়া আইন বলবৎ হয়েছে। তার জন্য বকেয়া ঋণ উদ্ধারে সাফল্য এসেছে। ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে বেশ কিছু পরিমাণ টাকা আদায় করা গেছে। দেশের বাণিজ্যিক সংস্কৃতির মানোন্নয়ন ঘটেছে।
২০২৪-২৫-এর মধ্যে ৫ লক্ষ কোটি ডলার অর্থনীতিতে পৌঁছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠতে প্রয়োজন বার্ষিক ৮ শতাংশ জিডিপি-র বৃদ্ধি। চিনের নজির উল্লেখ করে সমীক্ষায় বলা হয়েছে, মূলধনী লগ্নিতে কর্মসংস্থান বাড়ে। এছাড়া বাড়ে, মূলধনী পণ্য উৎপাদন, গবেষণা উন্নয়ন এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের মাধ্যমে কর্মসংস্থান।
অর্থনৈতিক সমীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে রপ্তানির ওপর। বলা হয়েছে বর্তমানে আন্তর্জাতিক রপ্তানি বাণিজ্যে ভারতের অংশ কম। এই অংশীদারিত্ব বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দেশের জনসংখ্যার সুযোগ নিতে বলা হয়েছে অর্থনৈতিক সমীক্ষায়। ২০১১-য় জনসংখ্যার ৫০.৫ শতাংশই ২০-৫৯ বছর বয়সী ছিল, যা ২০৪১-এ গিয়ে দাঁড়াবে ৬০ শতাংশ। জন্মহার কমায় কর্মক্ষম জনগণের সংখ্যা বাড়বে। এর ফলে বাড়বে মাথাপিছু আয়। যদিও শ্রমিক-পিছু উৎপাদন বাড়বে না, জন্মহার কমায় তাঁদের ওপর নির্ভরশীল যুবাদের সংখ্যা কমবে। বাড়বে সঞ্চয়।
অর্থনৈতিক সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, বার্ষিক শিল্প সমীক্ষায় জানা গেছে যে সমস্ত শিল্প সংস্থা ১০ বছরের বেশি পুরনো নয় এবং যেখানে ১০০ বা তার বেশি শ্রমিক কর্মরত, সেখানেই বেশি কর্মসংস্থান হয় এবং বাড়ে অর্থনীতি। শ্রম আইন, বাণিজ্য আইন এবং অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলির জন্য দেয় বিশেশ সুবিধা – এসবেরই যোগফল আর্থিক উন্নতি।
অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আর্থিক ব্যবস্থা যেমন ব্যাঙ্ক এবং মূলধনী বাজারের প্রসার ঘটছে দ্রুত। এই প্রসঙ্গে ব্যাঙ্কগুলির স্বচ্ছকরণ ও দেউলিয়া প্রক্রিয়া স্থাপনের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রক্রিয়া জোরদার করা যায়।
CG/AP/DM
(Release ID: 1577316)