প্রতিরক্ষামন্ত্রক
নৌ-সেনা প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লানবা আগামীকাল অবসর নেবেন
Posted On:
30 MAY 2019 4:22PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৩০ মে, ২০১৯
ভারতের ২৩তম নৌ-সেনা প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লানবা পিভিএসএম, এভিএসএম, এডিসি, আগামীকাল অবসর নেবেন। ৪০ বছরের ঘটনাময় কর্মজীবনের অবসান হবে।
খাদাকওয়াসলা-র ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি, ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ, সেকেন্দ্রাবাদের কলেজ অফ ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট এবং লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অফ ডিফেন্স স্টাডিজ-এর প্রাক্তনী অ্যাডমিরালের কর্মজীবন অত্যন্ত অভিজ্ঞতা-সমৃদ্ধ। শুধু সমুদ্রে নয়, অন্যান্য কাজেও তাঁর অভিজ্ঞতার পরিধি বিশাল। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে আধিকারিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি, ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের দিক নির্দেশ এবং পেশাদারী প্রশিক্ষণের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন অ্যাডমিরাল লানবা।
ফ্ল্যাগস্তরে উন্নীত হওয়ার পর অ্যাডমিরাল লানবা নৌ-বাহিনীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন। নৌ-বাহিনীর প্রধান হওয়ার আগে সাধারণ ন্যাভাল কমান্ডের চিফ-অফ-স্টাফ; ফ্ল্যাগ অফিসার, সি-ট্রেনিং এবং মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটের জলসীমায় ফ্ল্যাগ অফিসার কম্যান্ডিং ইত্যাদি দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১৬-র ৩১ মে তিনি নৌ-বাহিনীর প্রধান হন। তার আগে দক্ষিণ এবং পশ্চিম নৌ-কম্যান্ডের ফ্ল্যাগ অফিসার কম্যান্ডিং-ইন-চিফ ছিলেন। ২০১৭-র ১ জানুয়ারি চিফ্স অফ স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
নৌ-বাহিনীর প্রধান থাকাকালীন, ভারতীয় নৌ-বাহিনীর দর্শনে আমূল পরিবর্তন এনেছিলেন অ্যাডমিরাল লানবা। ২০১৭-র জুনে লক্ষ্য-ভিত্তিক মোতায়েন কার্যকর হয়। এর ফলে, আপৎকালীন সময়ে দ্রুত ব্যবস্থার নেওয়ার ক্ষেত্রে নৌ-বাহিনী আরও পারঙ্গম হয়ে ওঠে। যে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদ এবং জলদস্যুদের মোকাবিলায় এই জাহাজগুলি সর্বসময় প্রস্তুত থাকে। ‘মিশন বেস্ড ডেপ্লয়মেন্ট’-এর ফলে যে কোন সঙ্কটজনক মুহূর্তে ভারতীয় নৌ-বাহিনীই সবচেয়ে আগে সাড়া দেয়, যা ভারত মহাসাগর অঞ্চলের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারতীয় নৌ-বাহিনীর সাফল্যকে তুলে ধরে।
অ্যাডমিরাল লানবা নৌ-বাহিনীর দক্ষতা বাড়ানোর প্রয়াসে যে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন, তাতে রণদক্ষতা এবং জাহাজের কার্যকারিতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
অ্যাডমিরালের কার্যকালে বিদেশের সঙ্গে ভারতীয় নৌ-বাহিনীর সংযোগ এক নতুন মাত্রা পায় যা এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের প্রতিরক্ষা কূটনীতিকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে আসে। এইভাবেই ডুবোজাহাজ, বিমান ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য বিষয়ে ভারতই মূল গন্তব্যস্থল হয়ে ওঠে।
ভারতীয় নৌ-বাহিনী প্রথম বিভিন্ন স্তরে অর্থবোধক আলাপচারিতা শুরুর মঞ্চ গড়ে তোলে। এজন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়। জুনিয়র অফিসার, মধ্যবর্তী অফিসার এবং বাহিনীর শীর্ষ পদাধিকারীদের জন্য। এর ফলে, ভারতের মিত্র দেশগুলির সঙ্গে বৈদেশিক সংযোগ বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
তাঁর কার্যকালীন মেয়াদে বিভিন্ন মহড়ারও আয়োজন করা হয় যেমন, ২০১৮-র মার্চে পোর্ট ব্লেয়ারে বা মিত্র দেশগুলির সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তির সময়ে।
তাঁর অধীনে ভারতীয় নৌ-বাহিনী সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় এবং দেশজ প্রযুক্তি ব্যবহারের সুপারিশ করে যার ফলে, বেশ কিছু সমস্যা এড়ানো সম্ভব হয়। ভারতীয় শিপইয়ার্ডে ৪৯টি জাহাজ এবং ডুবোজাহাজ বর্তমানে তৈরি করা হচ্ছে যার মধ্যে আছে, প্রথম দেশজ প্রযুক্তিতে তৈরি বিমানবাহী জাহাজ ‘বিক্রান্ত’। ‘দি ইন্ডিয়ান ন্যাভাল ইন্ডিজিনাইজেশন প্ল্যান, ২০১৫-৩০’-এ নৌ-বাহিনীর আগামী ১৫ বছরের দিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যার মাধ্যমে নৌ-বাহিনীর প্রয়োজন মেটাতে শিল্পগুলি কৌশলগত অংশীদারিত্ব মডেলের সাহায্য নিতে পারে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য দেশজ প্রতিরক্ষা শিল্পের ক্ষমতা বাড়ানো।
অ্যাডমিরাল লানবার সময়েই ডিজিটাল লাইব্রেরির সূচনা হয়। সমসাময়িক সাইবার নিরাপত্তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নৌ-বাহিনীর তথ্য আদান-প্রদান শক্তিশালী করতে এই উদ্যোগ।
অ্যাডমিরাল লানবার সময়েই নৌ-বাহিনীর তরফে আরও কিছু প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয় ২০১৯-এর এপ্রিলে যেগুলির রূপায়ণের সূচনা হয়েছে। প্রশাসনিক সংস্কারের লক্ষ্য জীবনের গুণমান বৃদ্ধি এবং কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা।
শ্রীমতী রীনা লানবা, ২০১৬-র ৩১ মে থেকে ‘নেভি ওয়াইভ্জ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর শীর্ষ পদে ছিলেন। তাঁর অক্লান্ত উদ্যোগে নারী স্বশক্তিকরণ এবং কল্যাণে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়। টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস এবং ‘ইনলিঙ্গুয়া’র মতো সমস্যাগুলির সঙ্গে মিলে তিনি এই কাজগুলি শুরু করেন। নৌ-বাহিনীর কর্মী এবং তাঁদের ওপর নির্ভরশীলদের জন্য শিশুপালন এবং ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ বিষয়ে সচেতন করতে সদস্যদের জন্য বক্তৃতা এবং নানা প্রতিযোগিতা আয়োজনের উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি। এর পাশেই ছিল সদস্যদের জন্য বাৎসরিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির। এছাড়া, বিভিন্ন হাতের কাজে উৎসাহ দেওয়া হত অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে। ন্যাভাল এডুকেশন সোসাইটির মাধ্যমে স্কুলশিক্ষার উন্নতিকরণে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যুবকদের পাশাপাশি বৃদ্ধদের জন্যও সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে বেশ কিছু উদ্যোগে সামিল হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও, যোগাসন এবং ধ্যানের ওপর জোর দিয়েছিলেন শ্রীমতী লানবা।
ভারতীয় নৌ-বাহিনীর সকলের পক্ষ থেকে অ্যাডমিরাল সুনীল লানবা এবং শ্রীমতী রীনা লানবাকে তাঁদের সুখী অবসর জীবনের জন্য শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে।
SSS/AP/DM
(Release ID: 1572825)