পরিসংখ্যানএবংকর্মসূচিরূপায়ণমন্ত্রক

জিডিপি-র পূর্বাভাস নিয়ে ব্যাখ্যা- ০৮.০৫.২০১৯

Posted On: 09 MAY 2019 3:57PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৮ মে, ২০১৯

 

 

সংবাদমমাধ্যমের একটি অংশে তথ্যের ব্যবহার, মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের পূর্বাভাসের সংশোধন এবং জিডিপি ভিত্তিক ক্রমিক সহ সংশ্লিষ্ট নির্ণায়ক নিয়ে যে প্রতিবেদন বেরিয়েছে তার প্রেক্ষিতে পরিসংখ্যান এবং কর্মসূচী রূপায়ণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নিম্নলিখিত বিষয়ে ব্যাখ্যার প্রয়োজন।

   

·       যেকোন অর্থনীতিতে জিডিপি-র পূর্বাভাস দেওয়া একটি জটিল বিষয় যেখানে নানা পরিমাপক ব্যবহার করতে হয় অর্থনীতির ফলাফল পরিমাপ করতে। আন্তর্জাতিক বিশেষীকরণ এবং তুলনা করার জন্য দেশগুলি বহু আলোচনার পর স্হির হওয়া রাষ্ট্রসঙ্ঘ প্রচলিত সিস্টেম অফ্ ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস অনুসরণ করে। ২০০৮-এর দি সিস্টেম অফ্ ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস (২০০৮ এসএনএ) আন্তর্জাতিক তথ্যভিত্তিক মানকের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সংস্করণ যা ২০০৯এ গৃহীত হয় ইউনাইটেড নেশনস স্ট্যাটিসক্যাল কমিশনে। এর আগে ১৯৯৩এসএনএ চালু ছিল, তারই আধুনিকতম সংস্করণ এটি। দি ইন্টার-সেক্রেটারিয়েট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস (আইএসডাব্লুজিএনএ)-কে সদস্য দেশগুলির সঙ্গে নিবিড় আলোচনা ও পরামর্শের ভিত্তিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ২০০৮এসএনএ-কে উন্নত করার। ভারতও ওই আলোচনায় অংশ নেয়। রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্ট্যাটিসটিক্যাল কমিশন ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস স্ট্যাটিস্টিক-এর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনের জন্য সদস্য দেশগুলিকে এবং আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সংস্হাগুলিকে তার সুপারিশগুলি রূপায়িত করতে উৎসাহ দিয়েছিল।

 

·       অন্য আন্তর্জাতিক মানকের মতোই প্রচুর তথ্যের দরকার এবং বিকাশশীল দেশগুলির অনেক সময় লাগে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে, যাতে তারা এসএনএ-র প্রয়োজন মেটাতে পারে। তথ্যের অভাবে পরিসংখ্যান সমীক্ষা অথবা বিকল্প কোনও উৎস ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন ক্ষেত্রের ফলাফল নির্ধারণ করতে। এসএনএ আরো বলেছিল পূর্বাভাসের ভিত্তিবর্ষ কিছুদিন অন্তর পরিবর্তন করা যেতে পারে যাতে অর্থনৈতিক আবহাওয়ার পরিবর্তন, প্রথাগত গবেষণার উন্নতি এবং ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনীয়তা সঠিকভাবে গ্রহণ করা যায়।

 

·       অর্থনীতিতে কাঠামোগত পরিবর্তন হয়ে থাকে। ফলে জিডিপি, আইআইপি, সিপিআই ইত্যাদির ভিত্তিবর্ষে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন দরকার, যাতে এই পরিবর্তন বাস্তবোচিতভাবে মাপকের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এই ধরনের সংশোধন শুধুমাত্র জনগণনা এবং সমীক্ষা থেকে সাম্প্রতিক তথ্য ব্যবহার করে তাই নয়, এটি প্রশাসনিক স্তর থেকেও বিপুল পরিমাণ তথ্য ব্যবহার করে থাকে। ভারতে জিডিপি-র ভিত্তিবর্ষ ২০০৪-৫ থেকে ২০১১-১২ করা হয়েছিল এবং তা প্রকাশ করা হয়েছিল ২০১৫-র ৩০ জানুয়ারি। এ সবই করা হয়েছিল এসএনএ২০০৮-এর প্রথা মেনে। শিক্ষাজগত, জাতীয় পরিসংখ্যান আয়োগ, ইন্ডিয়ান স্ট্যটিসটিক্যাল ইন্সটিটিউট, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, অর্থমন্ত্রক, কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক, কৃষি মন্ত্রক, নীতি আয়োগ এবং কয়েকটি রাজ্যসরকারের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস স্ট্যাটিসটিক্স সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির আলোচনা থেকে উদ্ভূত ব্যবস্হা মেনেই এটি করা হয়েছিল। এসিএনএএস-কে বলা হয়েছিল  i) তথ্যের ভান্ডার পর্যালোচনা করতে এবং তথ্য সংগ্রহ নিয়ে পরামর্শ দিতে যাতে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস ২০০৮ (এসএনএ ২০০৮)-এর ব্যবস্হা মতো সুপারিশগুলি রূপায়ণ করা যায়। ii) অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ এবং নীতি তৈরির জন্য ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস স্ট্যাটিসটিক্স সংগ্রহ এবং প্রতিবেদনের জন্য পদ্ধতিগত পরামর্শ দিতে। iii) বিভিন্ন বিষয়কে আওতায় এনে নতুন নতুন ব্যাখ্যা গ্রহণ করে বিভিন্ন সংস্হাগত ক্ষেত্রের জন্য হিসাব খাতের ক্রমপর্যায়গত উন্নতির জন্য কি পন্হা-পদ্ধতি গৃহীত হবে তা নিয়ে পরামর্শ দান।

 

·       এটা আরও বলতে হয় যে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস স্ট্যাটিসটিক্সের তথ্য সংগ্রহের উৎস এবং বিস্তারিত পদ্ধতি এমওএসপিআইএ-র ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। যার শিরোনাম ‘চেঞ্জেস অন মেথডোলজি অ্যান্ড ডেটা সোর্সেস ইন দি নিউ সিরিজ অফ ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস, বেস ইয়ার ২০১১-১২’। মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে এর বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়।

 

·       রাষ্ট্রসঙ্ঘের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস ২০০৮ ব্যবস্হার সাম্প্রতিক সুপারিশগুলি সম্পর্কে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস স্ট্যাটিসটিক্সের ২০১১-১২ সমস্ত তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট বিষয় পাওয়া যাবে। আর্থিক নিগমগুলির উন্নত ব্যবস্হা, আঞ্চলিক এবং স্বশাসিত সংস্হাগুলির নীতিগত পদ্ধতি সবকিছুরই প্রভাব আছে গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড জিভিএ-র পূর্বাভাসের ওপর। ২০১১-১২ ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস সিরিজ তাদের পূর্বাভাসে কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক থেকে পাওয়া কোম্পানি ক্ষেত্রে তথ্যগুলিও ব্যবহার করতে শুরু করেছে। উক্ত মন্ত্রকের তথ্যভান্ডার এবং শিল্প ক্ষেত্রের বার্ষিক সমীক্ষা বিস্তারিত আলোচিত হয়েছে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস স্ট্যাটিসটিক্স সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বিভিন্ন বৈঠকে এবং একমাত্র তারপরই তা গৃহীত হয়েছে। পরিষেবা ক্ষেত্রের ওপর কারিগরি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভের সাম্প্রতিক অনুশীলনের লক্ষ্য তথ্যগত ত্রুটির সংশোধন করা এবং তার জন্য নিরাময়ের ব্যবস্হা করা। এনএসএস রিপোর্টের ফলাফল চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আগে উপদেষ্টা কমিটি আবারও পরীক্ষা করবে প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ সিরিজের জন্য। চলতি জিডিপি জিভিএ পূর্বাভাসের ওপর কোনও প্রভাব পড়বে না, কারণ যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কর্পোরেট ক্ষেত্রের পেডআপ ক্যাপিটাল ভিত্তিক গড় মাত্রার সাযুজ্যকরণের মাধ্যমে।

 

·       বস্তুত সব অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য মন্ত্রক সপ্তম অর্থনৈতিক গণনা শুরু করেছে, যার লক্ষ্য শুধুমাত্র এইসব সংস্হাগুলির বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করাই নয়, ন্যাশনাল বিজনেস রেজিস্টার তৈরি করা যা পর্যায়ক্রমে সংশোধন করা হবে। এরফলে ভবিষ্যতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির সংস্হাগত সমীক্ষা সুফল পাবে। ২০১৯এর জুনে অর্থনৈতিক গণনার ক্ষেত্র সমীক্ষার কাজ শুরু হবে।

 

·       ভারত আর্ন্তজাতিক মুদ্রা ভান্ডারের স্পেশাল ডেটা ডিসেমিনেশন স্ট্যান্ডার্ডস-এরও অংশীদার। এরজন্য প্রয়োজন সমস্ত তথ্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিবেশন করতে হবে এবং এই তথ্যকে কাজে লাগাতে হবে ঠিক সময়, যাতে বিস্তারিত পরিসংখ্যানগত তথ্যের সঙ্গে মেলে। একইভাবে মন্ত্রকের একটি অ্যাডভান্স রিলিজ ক্যালেন্ডার আছে যাতে বলা আছে সমীক্ষা প্রকাশের নির্দিষ্ট দিন। যেমন- ২০১৮র জিডিপি জিভিএ প্রকাশের নিম্নলিখিত তারিখ-

 

ক্রমিক নং

২০১৮-১৯এ র জন্য জিডিপি জিভিএ পূর্বাভাস

প্রকাশের তারিখ

বিস্তারিত ব্যাখ্যা

ফাস্ট অ্যডভান্স এসটিমেট (এফএই)

৭ জানুয়ারি ২০১৯

সরকারি বাজেট (বাজেট পূর্বাভাস) অনুযায়ী নির্ধারক ভিত্তিক (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) ২০১৭-১৮

সেকেন্ড অ্যডভান্স এসটিমেট (এফএই)

২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

সরকারি বাজেট (বাজেট পূর্বাভাস) অনুযায়ী নির্ধারক ভিত্তিক (এপ্রিল-ডিসেম্বর) ২০১৭-১৮

প্রভিশনাল এসটিমেট (পিই)

৩১ মে ২০১৯

সরকারি বাজেট অনুযায়ী নির্ধারক ভিত্তিক (এপ্রিল-মার্চ)  (২০১৭-১৮

ফার্স্ট রিভাইজড এসটিমেট

৩১ জানুয়ারী ২০১৯

শিল্পোৎপাদন কোম্পানী সমুহুর বার্ষিক প্রতিবেদন, সরকারি বাজেটের সূচকের ভিত্তিতে

সেকেন্ড রিভাইজড এসটিমেট(এসআরই)

২৯ জানুয়ারী ২০২১

কোম্পানী সমুহুর বার্ষিক প্রতিবেদন, রাজ্যস্তরের তথ্য, সরকারি বাজেটের বিস্তারিত সারণী ভিত্তিক

থার্ড রিভাইজড এসটিমেট(টিআরই)

৩১ জানুয়ারী ২০২২

কোম্পানী সমুহুর বার্ষিক প্রতিবেদন, রাজ্যস্তরের তথ্য ভিত্তিক

 

 

·       এটা জানা প্রয়োজন যে প্রতিটি জিডিপি জিভিএ-এর প্রতিটি সংশোধনী প্রকাশের সময়ে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই হয়। রাজস্ব ব্যায়, কর, কোম্পানীসমূহের হিসাব ইত্যাদি তথ্যের উৎসের গুনমাণ নিয়মিত উন্নীতকরণ হয়। যেকোন বছরের আংশিক সমীক্ষা প্রকাশের সময় পর্যন্ত পূর্বাভাসের ভিত্তি থাকে শিল্পোৎপাদনের সূচক, পাইকারি মূল্যের সূচক এবং ইস্পাত, সিমেন্ট, বিদ্যুৎ, রাজস্ব ব্যয়, জিএসটি তথ্য, বাণিজ্যিক তথ্য, রপ্তানি-আমদানি, খুচরো মূল্য ইত্যাদির ভিত্তিতে। যখন অন্যান্য তথ্য পাওয়া যায় তখন এই সূচকগুলি পুনরায় পর্যালোচনা করা হয়। থার্ড রিভাইজড এসটিমেটের আগে প্রায় সব তথ্য পাওয়াই সম্ভব হয়। তখন আর নতুন করে কোন পর্যালোচনা করা হয় না। সাধারণত তারিখ সূচির পরে আর কোন রকম পূর্বাভাস সংশোধন করা হয় না।

 

·       বিশ্বব্যাঙ্ক অনুযায়ী ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস এসটিমেটস ভ্রান্তিহীনতা এবং সারা দেশে সাযুজ্য রক্ষা সম্ভব হয় তখনই যখন জিডিপি এবং তার উপকরণগুলির তথ্য ঠিক সময়ে সংশোধন করা যায়। জিডিপি তথ্যের সংশোধনের সময়কাল মাসিক হতে পারে, ত্রৈমাসিক হতে পারে, বার্ষিক হতে পারে এমনকি তার কমও হতে পারে। এটা মনে রাখতে হবে যে মন্ত্রক এর আগে ঠিক করেছিল জিডিপি জিভিএ শিল্পোৎপাদনের ভিত্তিবর্ষ করা হবে ২০১৭-১৮ এবং এই কাজের জন্য পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছিল। এর আগে বলা হয়েছে মন্ত্রক সেই পদক্ষেপই নিয়েছে যা আন্তর্জাতিক মানকের সঙ্গে মানানসই এবং জিডিপি স্হির করার পদ্ধতি মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার তার কারিগরি শাখার মাধ্যমে এসএনএ-র সুপারিশগুলি রূপায়ণের পর্যালোচনা করে এবং কারিগরি সহায়তা দেয়। প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে। আর্থিক উন্নয়ন এবং নীতি নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং অর্থমন্ত্রকের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়। তবে দ্বিগুণ মুদ্রাহ্রাসের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে আইএমএফ। এই প্রসঙ্গে বলা যায়, দ্বিগুণ মুদ্রাহ্রাসের ব্যবহারের জন্য প্রচুর তথ্যের প্রয়োজন। অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, কোরিয়া, মেক্সিকো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো কয়েকটি দেশই এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে। মন্ত্রক দ্বিগুণ মুদ্রাহ্রাস পদ্ধতি ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় সূচকের উন্নীতকরণে বাণিজ্য শিল্পমন্ত্রকের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছে। এই মন্ত্রক আলাদাভাবে বিষয়টি নিয়ে আইএমএফ-এর সঙ্গে আলোচনা করেছে। একথাও উল্লেখ করতে হয় যে ন্যাশনাল   ডিভিশন যারা এইসব তথ্য জোগাড় করে তাদের পদ্ধতি এবং প্রক্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর স্ট্যান্ডার্ডস আইএসও ৯০০১:২০১৫ স্বীকৃত।

 

 

CG/AP/NS



(Release ID: 1571784) Visitor Counter : 294


Read this release in: English