স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক
স্বাস্হ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের বর্ষশেষ পর্যালোচনা- ২০১৮
Posted On:
19 FEB 2019 6:41PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
কেন্দ্রীয় স্বাস্হ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হল, সুস্বাস্হ্য কেন্দ্র স্হাপন ও প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার রূপায়ণ। ২০২২-এর মধ্যে দেশের প্রায় দেড় লক্ষ প্রাথমিক স্বাস্হ্যকেন্দ্র ও উপকেন্দ্রকে সুস্বাস্হ্য কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হবে। এরফলে সবরকম স্বাস্হ্য পরিষেবা সকলের আয়ত্তের মধ্যে থাকবে। এখনও পর্যন্ত সারা দেশে ৪ হাজার ৫০৩টি সুস্বাস্হ্য কেন্দ্র চালু হয়েছে। এছাড়া, আয়ুষ্মান ভারতের সুস্বাস্হ্য কেন্দ্রগুলিতে স্বাস্হ্য পরিষেবা বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করা হবে। এই বিশেষজ্ঞরা, যাঁদের মধ্যস্তরীয় স্বাস্হ্য পরিষেবা প্রদানকারী বলা হয়ে থাকে। সেবিকা অথবা আয়ুর্বেদ চিকিৎসকও হতে পারেন। প্রাথমিক স্বাস্হ্য সেবা ও জনস্বাস্হ্যের বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তাঁরা স্বাস্হ্যকর্মী ও আশাকর্মীদের দলকে নেতৃত্বদান করবেন। স্বাস্হ্যকর্মীরা স্কুলগুলিতে গিয়ে শিশুদের স্বাস্হ্যসম্মত অভ্যাস গঠনের শিক্ষা দেবেন। স্বাস্হ্যক্ষেত্রে সুষ্ঠুভাবে পরিষেবা প্রদানের জন্য সর্বস্তরের স্বাস্হ্যকর্মীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ, চিকিৎসা পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও উন্নতমানের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্হা রূপায়ণের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া, দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতি ও যোগচর্চাকেও প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
গর্ভধারণ ও প্রসবকালী স্বাস্হ্যসেবা ; সদ্যজাত ও শিশু ; বাল্যকালীন ও বয়সন্ধীকালীন স্বাস্হ্যসেবা ; পরিবার পরিকল্পনা, গর্ভনিরোধক ও অন্যান্য প্রজনন সংক্রান্ত চিকিৎসা পরিষেবা ; জাতীয় স্তরের স্বাস্হ্য কর্মসূচিগুলি রূপায়ণ সহ সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ; সাধারণ সংক্রামক ও অ-সংক্রামক রোগের জন্য বর্হিবিভাগে চিকিৎসা ; অ-সংক্রামক রোগ চিহ্নিত করা, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ; চক্ষু ও ইএনটি চিকিৎসা ; ওরাল স্বাস্হ্যসেবা ; বয়স্কদের স্বাস্হ্যসেবা ; বিপদকালীন স্বাস্হ্যসেবা এবং মানসিক রোগের চিকিৎসা আয়ুষ্মান ভারতের এই সুস্বাস্হ্য প্রকল্পের অন্তর্গত।
এছাড়া, সুস্বাস্হ্য কেন্দ্রগুলিতে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্হা, জটিলতা ঘটলে ফোনে চিকিৎসা আধিকারকের পরামর্শ গ্রহণ, প্রয়োজনে রেফারাল লিঙ্কে যুক্ত থাকা চিকিৎসাকেন্দ্র পরবর্তী পর্যায়ে চিকিৎসা চালানো, প্রত্যেকে নিজস্ব স্বাস্হ্য পরিচয়পত্র, যোগচর্চা ও অন্যান্য পরম্পরাগত সুস্বাস্হ্য পরিষেবা প্রদানের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় (পিএমজেএওয়াই) দেশের ১০ কোটি দরিদ্র্য ও অসহায় পরিবারের প্রত্যেক সদস্য (প্রায় ৫০ কোটি সাধারণ মানুষ) যাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে চিকিৎসা চালাতে পারেন, তারজন্য পরিবার পিছু বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা করে চিকিৎসা বিমার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮-তে প্রকল্পটি এই লক্ষ নিয়ে চালু করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বাস্হ্য বিমা যোজনা এবং বয়োঃজেষ্ঠ্য নাগরিক স্বাস্হ্য বিমা যোজনা এবং পিএমজেএওয়াই-এর আওতায় আনা হয়েছে। এরফলে পূর্বতন প্রকল্পের সুবিধাভোগীরাও এই নতুন প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। সামাজিক ও অর্থনৈতিক জাতি গণনা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভাবগ্রস্হ ও রোজগারহীন পরিবারগুলিকে এই বিমা প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮তে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৬ হাজার ১১২টি হাসপাতালকে প্রকল্পের প্যানেলে রাখা হয়েছে। ৬ লক্ষ ৮১ হাজার ৮২৫ জন সুবিধাভোগী রয়েছেন। ৩৯ লক্ষ ৪৮ হাজার ৪৯৬ জনকে ই-কার্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যগুলিকে পিএমজেএওয়াই রূপায়ণে নিজস্ব পন্হা পদ্ধতিতে কাজ করার স্বাধীনতাও দেওয়া হয়েছে। কোনও বিমা সংস্হা বা প্রত্যক্ষ্যভাবে কোনও ট্রাস্টের মাধ্যমে অথবা দু-ভাবেই প্রকল্প রূপায়ণ করা যাবে। ২০১৮-র মে মাস থেকে জাতীয় স্বাস্হ্য সংস্হা সারা দেশে এই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, বিহার, ঝাড়খন্ড, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সহ ৩১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে জাতীয় স্বাস্হ্য সংস্হা প্রকল্প রূপায়ণের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তারমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, বিহার, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সহ ২৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পিএমজেএওয়াই চালু হয়ে গেছে। প্রকল্পের নীতি-নির্ধারণের জন্য আয়ুষ্মান ভারত জাতীয় স্বাস্হ্য সুরক্ষা মিশন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। স্বাস্হ্য পরিষেবার মহানির্দেশকের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ কমিটি ১ হাজার ৩৫০টি স্বাস্হ্য প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়েছে। নীতি আয়োগ এ বিষয়ে পর্যালোচনা করছে।
মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক সংক্রান্ত কমিটি ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮তে আশাকর্মীদের জন্য একটি সুবিধামূলক প্যাকেজ চালুর বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন। ১০ লক্ষ ৬৩ হাজার ৬৭০জন আশাকর্মীকে প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা ও ৯৫ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩২জনকে প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমান যোজনায় সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি জাতীয় স্বাস্হ্য বিমা মিশনে ১০ লক্ষ ২২ হাজার ২৬৫জন আশাকর্মীর ভাতা বাড়িয়ে মাসিক ২০০০ টাকা করা হয়েছে। এই প্রকল্প রূপায়ণে ২০১৮ থেকে ২০২০ অবধি আনুমানিক ১৯০৫ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। এই তহবিলের ১২২৪ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা কেন্দ্র যোগাবে।
জাতীয় স্বাস্হ্য নীতি ২০১৭তে বলা হয়েছে যে ২০২৫এর মধ্যে স্বাস্হ্যের খাতে ব্যয়কে গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ২-৫ শতাংশ’তে নিয়ে যাওয়া হবে। সব বয়সের মানুষের জন্য প্রতিরোধমূলক স্বাস্হ্য সেবা সহ স্বাস্হ্য পরিষেবাকে সকলের নাগালের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার ওপর নীতিগতভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হবে। প্রাথমিক স্বাস্হ্যকেন্দ্রগুলির পরিষেবাকে স্বাস্হ্য কার্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা, স্বাস্হ্য পরিষেবা সংক্রান্ত মামলাগুলির শুনানির জন্য পৃথক আদালত চালু, ডিজিটাল মাধ্যমের প্রয়োগ সহ সরকারি স্বাস্হ্য পরিষেবার সার্বিক মানোন্নয়ন, পুষ্টির ক্ষুদ্র পদার্থগুলির অভাব দূর করা এবং বেসরকারি সংস্হাগুলিকে স্বাস্হ্য ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্বাস্হ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে পেশাদারি শিক্ষার নির্দিষ্ট মান নির্ণয় ও বজায় রাখার জন্য ২২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা ২০১৮ সালে অ্যালায়েড অ্যান্ড হেল্থ কেয়ার প্রফেশন্স বিলের বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে। এরফলে, আয়ুষ্মান ভারতের মূল ভাবনাচিন্তার সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে চিকিৎসক কেন্দ্রিক ব্যবস্হা থেকে সরে স্বাস্হ্য পরিষেবায় সেবা ও দলগতভাবে চিকিৎসার ব্যবস্হার দিকে এগোনো যাবে।
এছাড়া চিকিৎসার যন্ত্রপাতিগুলি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাস্হ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক মেডিক্যাল ডিভাইসেস নিয়ম, ২০১৭র বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। কয়েকটি ওষুধের উৎপাদন, বিক্রয় ও ব্যবহারের জন্য বন্টন ব্যবস্হায়ও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মন্ত্রক। মন্ত্রিসভা ২০১৭র ডিসেম্বরে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন বিলে সায় জানিয়েছে, যারফলে ডাক্তারি শিক্ষার ক্ষেত্রে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে আসন বৃদ্ধি হচ্ছে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে আয়ুষ ব্যবস্হার সঙ্গে আরও ভালোভাবে সমন্বয় সাধন হবে। আর্থিক অবস্হা নির্বিশেষে প্রতিভাবান ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজে ৪০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে।
অপুষ্টির সমস্যা দূর করতে স্বাস্হ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং মহিলা ও শিশু বিকাশ মন্ত্রক যৌথ প্রয়াসে জাতীয় পুষ্টি অভিযান চালু করেছে। মন্ত্রিসভা কিছুদিন আগেই এই অভিযানে সায় জানিয়েছে। মানসিক রোগগ্রস্হ সাধারণ মানুষদের সুচিকিৎসার লক্ষ্যে মানসিক স্বাস্হ্য সেবা আইন, ২০১৭ বলবৎ করা হয়েছে।
২০১৭’র এইচআইভি ও এইডস (প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, প্রয়োগের মাধ্যমে ২০১৭-র ২০৩০এর মধ্যে এই মহামারীর অবসান ঘটানো ও নিশ্চিত করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে যাতে এইডস আক্রান্ত রোগীরা অমানবিক আচরনের শিকার না হন।
ভারতের সর্বজনীন টিকাকরণ কর্মসূচিকে বিশ্বের বৃহত্তম জনস্বাস্হ্য কর্মসূচিগুলির মধ্যে গণ্য করা হয়। প্রতিবছর ৩ কোটি গর্ভবতী মহিলা ও ২ কোটি ৭০ লক্ষ সদ্যজাত শিশুর টিকাকরণের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা থাকে। ২০১৪ সালে মিশন ইন্দ্রধনুষ চালুর পর থেকে ২০১৭-র অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং আরও জোরদারভাবে প্রকল্প রূপায়ণের আহ্বান জানান। মিশন ইন্দ্রধনুষের ষষ্ঠ পর্বে, ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৭৫টি জেলায় টিকাকরণ কর্মসূচি রূপায়িত হয়েছে। ভারত পোলিওমুক্ত ঘোষিত হয়েছে। তবুও এই সাফল্য ধরে রাখতে পোলিও টিকা দূরীকরণের চালু করা হয়েছে। ২০১৮র আগস্ট অবধি মোট ৬.৪ কোটি শিশুকে এই পোলিওর টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় ভেক্টরজাত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে অসম, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ৩১টি জেলাকে জাপানীজ এনসেফেলাইটিজ প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। উল্লিখিত ৩১টি জেলায় ১৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী ৩ কোটি ২৯ লক্ষ মানুষকে জাপানীজ এনসেফেলাইটিজ টিকা দেওয়া হয়েছে। ২০১৮র সেপ্টেম্বর মাস অবধি ওড়িশা, অসম ও ত্রিপুরা সহ ৯টি রাজ্যের মোট ২.৬ কোটি মানুষকে রোটা ভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে। ২০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মিসলস-রুবেলা টিকাকরণের কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে আরও ৮টি রাজ্যে এই টিকাকরণের কর্মসূচি চলছে। সেপ্টেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত প্রায় ৫৯.৪৮ কোটি শিশুকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে।
২৮ জুলাই ২০১৮তে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসে স্বাস্হ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের চালু করা জাতীয় ভাইরাল হেপাটাইটিস কর্মসূচির লক্ষ্য ২০৩০এর মধ্যে এই রোগের কবল থেকে অসুখ ও মৃত্যুর হার কমানো।
লেবার রুম বা প্রসবাগার ও মাতৃত্বকালীন অপারেশন থিয়েটারগুলিতে গর্ভবতী মায়েদের উন্নতমানের পরিচর্যা দিতে মন্ত্রক ‘লক্ষ্য’ নামক একটি উদ্যোগও চালু করেছে। এছাড়া দেশে প্রত্যেকজন গর্ভবতী মা-কে বিনামূল্যে প্রসব পরবর্তী পরিচর্যা দিতে প্রত্যেকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযান রূপায়ণ করা হচ্ছে। ডাইরিয়া থেকে শিশুমৃত্যুর ঘটনা সম্পূর্ণভাবে রোধ করতে ২০১৪ থেকে ডাইরিয়া নিয়ন্ত্রণ পক্ষকাল পালন করা হচ্ছে। এছাড়া, রাষ্ট্রীয় বাল্য স্বাস্হ্য কর্মসূচির আওতায় এখনও পর্যন্ত ৮২ কোটি ৫০ লক্ষ শিশুর ডাক্তারি পরীক্ষা ও ১.৯৬ কোটি শিশুর চিকিৎসা হয়েছে। জাতীয় কৃমি-দূরীকরণ দিবস, রাষ্ট্রীয় কিশোর স্বাস্হ্য কর্মসূচি, বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্হ্য ক্লিনিক, প্রতি সপ্তাহে আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট খাওয়ানো, রজঃস্রাব সংক্রান্ত স্বাস্হ্যবিধি কর্মসূচি ও সঙ্গীর কাছ থেকে স্বাস্হ্য সংক্রান্ত শিক্ষাগ্রহণ কর্মসূচি-মন্ত্রকের শিশু, কিশোরী ও মহিলাদের সুস্বাস্হ্য নিশ্চিত করা সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির তালিকায় রয়েছে।
দেশে ৪৪৫টি জেলায় জাতীয় মিশনের আওতায় জাতীয় ডায়লিসিস কর্মসূচি রূপায়নের মাধ্যমে দরিদ্র নাগরিকদের বিনামূল্যে ডায়লিসিস পরিষেবা দেওয়া হয়। বিনা খরচে ড্রাগ ও রোগ চিহ্নিতকরণের পরিষেবা প্রদানের উদ্যোগ ও বায়োমেডিক্যাল যন্ত্রপাতি নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষনাবেক্ষনের কর্মসূচিও মন্ত্রকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হিসেবে ধরা হয়।
ক্যান্সার, ডায়বেটিস, কার্ডিও-ভাসকুলার রোগ ও স্ট্রোক রোগ ও নিয়ন্ত্রণের জাতীয় কর্মসূচিতে সেপ্টম্বর ২০১৮ পর্যন্ত ৩ কোটি ৩২ লক্ষ মানুষের ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। এছাড়া, ডায়বেটিস, হাইপারটেনশন এবং ওরাল, ব্রেস্ট ও সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের জনসংখ্যা-ভিত্তিক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও চিহ্নিতকরণের উদ্যোগ সাম্প্রতিককালে গ্রহণ করা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায়, পয়লা অক্টোবর ২০১৮ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২১৫টি জেলায় ৯৬ লক্ষ ৬০ হাজার ৮৭০ জনের ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে।
ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ও ক্রনিক কিডনি রোগের প্রতিরোধ ব্যবস্হা এবং অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধও জাতীয় কর্মসূচি হিসেবে বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০২৫এর মধ্যে ভারতকে যক্ষ্মামুক্ত করতে মন্ত্রক জাতীয় স্তরে কৌশলগত পরিকল্পনা ২০১৭-২৫ গ্রহণ করেছে।
রোগমুক্ত হতে সাশ্রয়ীমূল্যে ওষুধ ও নির্ভরযোগ্য ইমপ্লান্ট প্রদানের জন্য ২৩টি রাজ্যে প্রকল্প রূপায়ণের মাধ্যমে ১৪৬টি ফার্মেসি চালু করা হয়েছে। এই ফার্মেসিগুলিতে ৫ হাজার ২০০টিরও বেশি ওষুধ অর্ধেক দামে পাওয়া যায়। গত এপ্রিল মাসে নিক্ষয় পোষন যোজনা চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের জন্য প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। পয়লা নভেম্বর অবধি এই প্রকল্পের আওতায় ৪ লক্ষ ৬৯ হাজার জন সুবিধাভোগীকে প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে মোট ৪৯ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্হ্য ক্ষেত্রে বিকাশের জন্য মন্ত্রক একাধিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্হা চালু করেছে। অ্যালায়েড ও স্বাস্হ্যসেবা পেশাদারদের তথ্য ভান্ডার পোর্টালে ৩ হাজারেরও বেশি পেশাদার নাম লিখিয়েছেন। স্বাস্হ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের বাজেট ড্যাসবোর্ড, সুসংহত স্বাস্হ্য তথ্য প্ল্যাটফর্ম, জাতীয় স্বাস্হ্য পোর্টাল, হাসপাতাল, ইনফরমেশন সিস্টেম, ই-সিজিএইচএস কার্ড প্রদান, কেন্দ্রীয় ড্রাগস মান নিয়ন্ত্রণ সংস্হার ‘সুগম’ নামক অনলাইন পোর্টাল, ড্রাগস অ্যান্ড ভ্যাকসিন ডিসট্রিবিউশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, প্রত্যেকটি লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্লাড ব্যাঙ্কের জন্য ই-রক্তকোষ পোর্টাল, মা ও শিশুর ট্র্যাকিং ব্যবস্হা, গর্ভধারণ ও প্রসবকালীন পরিচর্যা সংক্রান্ত তথ্য জানানোর জন্য কিলকরি অ্যাপ (যা অসম, বিহার, ছত্তিশগড়, দিল্লী, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, ঝাড়খন্ড, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, রাজস্হান, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখন্ডে চলছে) কয়েকটি এ ধনেরই উদ্যোগ। টেলিমেডিসিন ব্যবস্হার বিকাশের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
CG/SC/NS
(Release ID: 1565261)
Visitor Counter : 796