খনিমন্ত্রক

খনি মন্ত্রকের বর্ষশেষ পর্যালোচনা- ২০১৮-১৯

Posted On: 11 JAN 2019 1:47PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১০ জানুয়ারী, ২০১৯

 

      ১৯৫৭ সালে খনি ও খনিজ বিকাশ ও নিয়ন্ত্রণ আইনটি ২০১৫ সালে সংশোধনের মাধ্যমে নিলাম পদ্ধতি সংক্রান্ত নিয়মাবলী সংযোজন করা হয়। তারপর কয়লা, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস ছাড়া অন্য প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজের ক্ষেত্রে প্রথমবার নিলামের মাধ্যমে দর কমানো। ৫৩টি ব্লক বন্টনের কাজ সফলভাবে হয়েছে। এই নিলাম কর্মসূচিতে খনিজের মোট মূল্য ২,২৫,৮৫০ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকায় এসে দাঁড়ায়। হিসেব অনুযায়ী লিজ নেওয়ার সময়কালে রাজ্যগুলিকে প্রদেয় রাজস্বের আনুমানিক মূল্য হবে ১,৮৩,১৮১ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা। নিলাম প্রক্রিয়া থেকে অতিরিক্ত ১,৪৩,১৬৯ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে। খনি মন্ত্রক রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে যৌথভাবে নিলাম প্রক্রিয়ার ওপর নজরদারি রাখছিল। সকলে মিলে খনিজ নিলাম নিয়মাবলীতে সংশোধনের আহ্বান জানান যাতে প্রক্রিয়াটিকে আরও বাস্তবসম্মত করার পাশাপাশি নিলাম ডাক পদ্ধতির ওপর কড়া নজর রাখা যায়।

      উপরোক্ত আইনে ৮এ (৬) ধারা অনুযায়ী ৩১শে মার্চ ২০২০ পর্যন্ত বাণিজ্যিক খননের জন্য খনি লিজ নেওয়ার সময়কাল পেরিয়ে যাওয়ার পরেও লিজের সময়কাল বৃদ্ধি করা হয়েছে। খনি নিলামের প্রক্রিয়া যথাসম্ভব শীঘ্র শুরু করার প্রয়োজন ছিল যাতে দেশে খনিজ উৎপাদনের কাজ লিজের সময়কাল শেষ হয়ে যাওয়ার কারনে ব্যহত না হয়। নিলাম প্রক্রিয়া চালু করার জন্য এই ব্লকগুলিতে অনুসন্ধান চালানোর প্রয়োজন রয়েছে। অনুসন্ধানের কাজ ত্বরান্বিত করতে খনিজ সংরক্ষণ ও বিকাশ নিয়মাবলী ২০১৭-তে সংশোধন আনার মাধ্যমে ১২ নম্বর নিয়মের আওতায় ৪এ উপ-নিয়মের সংযোজন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যে খনিগুলির লিজ ২০২০-র মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে, সেইগুলির নিলাম প্রক্রিয়া পয়লা এপ্রিল ২০১৯-এর মধ্যে শেষ করতে হবে।

      ভূতত্ব সর্বেক্ষণ দেশে ও সংলগ্ন অঞ্চলের খনিজ দ্রব্য থাকার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এমন ২৭ লক্ষ লাইন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জাতীয় অ্যারো-জিওফিজিক্যাল ম্যাপিং কর্মসূচি চালু করেছে। ২০১৯এর মধ্যে এই পুরো এলাকা নিয়ে তৈরি ১২টি ব্লকের ম্যাপ তৈরির কাজ সম্পন্ন করা হবে। এই কাজের জন্য মোট আনুমানিক ৩৫১ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।

জাতীয় খনি নীতি ২০০৮ পর্যালোচনার জন্য ২০১৭ সালে খনি মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব ডঃ কে রাজেস্বর রাও-এর সভাপতিত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী খসড়া জাতীয় খনি নীতি ২০১৮ গঠন করে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের মতামতের আহ্বান জানিয়ে খনি মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়। উপলব্ধ মতামত ও পরামর্শগুলি যোগ করে এই বিষয়ে খসড়া ক্যাবিনেট নোট তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক ও দপ্তরগুলির কাছে তাদের মতামত জানতে পাঠানো হয়। প্রাপ্ত মতামত ও পরামর্শগুলি নীতিতে যোগ করা হয়েছে।

খনি ক্ষেত্রের জন্য সুস্হায়ী বিকাশ কাঠামো সর্বস্তরে রূপায়ণ করতে খনি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে খনিগুলির স্টার রেটিং-এর ব্যবস্হা চালু করা হয়েছে। ২০১৬ সালে গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলির জন্য স্টার রেটিং-এর মূল্যায়ণ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারির পর ২০১৬তে ৯টি খনি, ২০১৭তে ৩২টি ও ২০১৮তে ৫৭টি খনিকে এখনও পর্যন্ত ফাইভ স্টার রেটিং দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২০১৭-১৮ মূল্যায়ণ বর্ষের জন্য ৯৬৬টি খনির চালনাকারিদের পক্ষ থেকে অনলাইনে টেমপ্লেট জমা পড়েছে।

গান্ধীনগরে ভাস্করাচার্য ইন্সিটিটিউ ফর স্পেশ অ্যাপ্লিকেশন অ্যান্ড জিও-ইনফরমেটিক্স এবং বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সাহায্য নিয়ে খনি মন্ত্রক ও ভারতের ব্যুরো অফ মাইনস্ উপগ্রহ ভিত্তিক খনি নজরদারি ব্যবস্হা বা মাইনিং সার্ভিলেন্স সিস্টেম গড়ে তুলেছে। অনৈতিক খনন রোধ করতে সরকারের প্রয়াসে জনসাধারণের অংশগ্রহণ সম্ভব করতে এই সংক্রান্ত একটি সহজ মোবাইল অ্যাপও ২০১৭-র জানুয়ারি চালু করা হয়। এই অ্যাপ ব্যবহার করে নজরদারির দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা নজরদারি সংক্রান্ত চালানোর রিপোর্ট জমা দেন। প্রাথমিক পর্যায়ে সারা দেশের ৩৯৯৪.৮৭ হেক্টর এলাকা জুড়ে ২৯৬টি অভিযান চালিয়ে রাজ্যসরকারি কর্মচারিরা ৪৮টি অনৈতিক খননের নজির চিহ্নিত করেন। প্রত্যেকটি রাজ্যের কর্মীদের লঘু খনিজের ক্ষেত্রেও কাজে লাগানোর জন্য এই উপগ্রহভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্হারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে সারা দেশে ৩২৮০টি লিজে দেওয়া প্লটে ৫২টি অভিযান চালিয়ে ৪টি স্হানে অনৈতিক খনন কার্যকলাপের সন্ধান পাওয়া যায়।

ভারতের ভূতত্ব সর্বেক্ষণ (জিএসআই) ২০১৮-র নভেম্বর পর্যন্ত ৮৬৫২.৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় বিশেষ থেমাটিক ম্যাপিং, ৬২,০৩২ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে জাতীয় ভূ-রাসায়নিক ম্যাপিং ও ৪২,৮০৪.৫ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে জাতীয় ভূ-প্রাকৃতিক ম্যাপিং-এর কাজ সম্পন্ন করেছে। এছাড়া বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২৪৫৮৩ বর্গকিলোমিটার জুড়ে প্রাথমিক পর্যায়ে সামুদ্রিক খনিজ তদন্তের কাজ চালিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮-১৯-এ ধস প্রবণ এলাকা ম্যাপিং-এর ৪৫টি কর্মসূচি পালন করেছে। খনিজ অনুসন্ধান, মৌলিক ভূ-বিজ্ঞান ও জিও-ইনফরমেটিক্স সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরির কাজ সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে করা চালু হয়েছে। জিএসআই ২০১৮তে দেশের জাতীয় খনিজ ভান্ডারে রিপোর্ট জমা দিয়ে জানিয়েছে যে তামা, লোহা, বক্সাইট, চুনাপাথর, সোনা, পটাশ, অ্যান্ডালুসাইট, সিসা, দস্তা ও কয়লার প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে।

২০১৮র সেপ্টেম্বর মাসে জিএসআই ভারতের মহাকাশ গবেষনা কেন্দ্রের (ইসরো) জাতীয় রিমোট সেন্সিং সেন্টারের সঙ্গে ১৪টি সম্ভাবনাময় এলাকায় আগামী ৩ বছর ধরে ভূ-পৃষ্ঠের ওপর খনিজের চিহ্ন পাওয়া সংক্রান্ত তথ্য জানানোর চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া অক্টোবর ২০১৮তে হায়দ্রাবাদ স্হিত জাতীয় ভূ-প্রাকৃতিক গবেষনা কেন্দ্রে নমুনা পরীক্ষা, আগস্ট মাসে ধানবাদের আইআইটি- ইন্ডিয়ান স্কুল অফ মাইনসের সঙ্গে অধ্যায়ন ও গবেষনা সংক্রান্ত সহযোগিতা স্হাপন এবং একই মাসে হরিয়ানার সরস্বতী ঐতিহ্য বিকাশ পর্ষদের সঙ্গে প্রাচীন সরস্বতী নদীর হিমাচলপ্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, রাজস্হান ও গুজরাট দিয়ে বয়ে যাওয়ার ইতিহাস পুনর্গঠনের চর্চা সংক্রান্ত চুক্তিও স্হাপন করেছে। এছাড়া, ২০১৮র মে মাসে হায়দ্রাবাদের সিএসআইআর-এনজিআরআই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে মোট ২৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভুপৃষ্ঠের ভূপ্রাকৃতিক সর্বেক্ষণের কাজ আউটসোর্স করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কার্শিয়াং-এ গিড্ডাপাহাড় গ্রামে ধসের বিষয়ে আগে থেকে সঙ্কেত পাঠানোর একটি নতুন ব্যবস্হা পরীক্ষা করে দেখা হয়।

খনি মন্ত্রকের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ব্যুরো অফ মাইনস্ তাদের খনিজ সংক্রান্ত কিছু কাজকর্মকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে চালানোর ব্যবস্হা স্হাপন করতে চলেছে। বেসরকারি সংস্হা উইপ্রো কর্মসূচি রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে এবং হায়দ্রাবাদস্হিত এনআইএসজি প্রকল্প নিয়ন্ত্রণ ইউনিট হিসেবে কাজ করবে। পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী খনিজ ক্ষেত্র কল্যাণ প্রকল্পকে এই ব্যবস্হার মধ্যে গ্রহণ করা হয়। এছাড়া ইসরোর জাতীয় রিমোর্ট সেন্সিং সেন্টারের সঙ্গে ২০১৬তে চুক্তির মাধ্যমে উপগ্রহ ভিত্তিক চিত্র ব্যবহার করে খনি ক্ষেত্রের কার্যকলাপ নজরদারির একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। চুক্তিতে ব্যুরোর আধিকারিকদের রিমোর্ট সেন্সিং পরীক্ষাগার সংক্রান্ত তিন বছরের প্রশিক্ষণ প্রদানের বিষয়টিও ছিল। হায়দ্রাবাদ ও নাগপুরে দুটি রিমোর্ট সেন্সিং পরীক্ষাগার চালুও করা হয়েছে। ২০১৮র এপ্রিলে ব্যুরোর রিমোর্ট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে ময়েল লিমিটেডের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

খনিজ সংরক্ষণ ও বিকাশ নিয়মাবলী ২০১৭ অনুযায়ী ইন্ডিয়ান ব্যুরো অফ মাইনসকে নির্দিষ্ট সময়কাল অন্তর খনিজের মূল্যায়ণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই কাজ সম্পাদন করতে ২০১৭তে খনিজের মূল্য সংক্রান্ত ৫টি কর্মশিবিরের আয়োজন গোয়া, ভুবনেশ্বর, গান্ধীনগর, নাওমুন্ডি ও নাগপুরে করা হয়। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত ও পরামর্শ বিশেষজ্ঞ কমিটি পরীক্ষা করার পর এবং কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৮র এপ্রিল মাসে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ১১টি খনিজের মূল্য প্রকাশ করা হয়।

মন্ত্রকের অধীনস্হ ন্যাশনাল অ্যালুমিনিয়াম কোম্পানী লিমিটেডের (ন্যালকো) ২০১৭-১৮তে ১০০ শতাংশ মুনাফা বৃদ্ধি হয়েছে।

উল্লেখ্য, নাগপুরস্হিত জওহরলাল নেহরু অ্যালুমিনিয়াম গবেষনা বিকাশ ও ডিজাইন সেন্টার ২০১৭-১৮তে রেকর্ড গড়ে ৮টি নতুন গবেষনা ও উন্নয়ন পদ্ধতির স্বত্ত্বাধিকার প্রাপ্তির আবেদন জানিয়েছে।

 

CG/SC/NS


(Release ID: 1559583) Visitor Counter : 347


Read this release in: English