ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্রওমাঝারিশিল্পমন্ত্রক
অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রকের কাজের বার্ষিক পর্যালোচনা- ২০১৮
Posted On:
10 JAN 2019 12:12PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ০৯ জানুয়ারী, ২০১৯
সারা দেশে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পোদ্যোগ বা এমএসএমই ক্ষেত্রের বৃদ্ধি, প্রসার ও উৎসাহদানের লক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৮র নভেম্বর মাসে একগুচ্ছ কর্মসূচির কথা ঘোষনা করেছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ৫৯ মিনিটের মধ্যে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদানের ব্যবস্হা। এছাড়া জিএসটি নথিভুক্ত সমস্ত এমএসএমই ক্ষেত্রের নতুন বা পুরানো ঋণের সুদের ওপর ২ শতাংশ হারে ছাড়। অন্যদিকে ব্যবসার জন্য সহজে শিল্পোদ্যোগ বা সংস্হাগুলিকে সহজে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্হাও এরমধ্যে রয়েছে। অন্যদিকে সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্হাকে বাধ্যতামূলকভাবে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের ২৫ শতাংশ এমএসএমই ক্ষেত্র থেকে কিনতে হবে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় সরকারের মালিকানাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্হাগুলিকে জিইএম পোর্টালের মাধ্যমে এমএসএমই ক্ষেত্র থেকে জিনিসপত্র বাধ্যতামূলকভাবে কিনতে হবে। সারা দেশে এমএসএমই ক্ষেত্রের উন্নয়নের লক্ষে ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০টি প্রযুক্তি কেন্দ্র স্হাপন, ফার্মা ক্লাস্টার নির্মাণে ৭০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এমএসএমই ক্ষেত্রগুলির জন্য শ্রম আইন এবং কেন্দ্রীয় নিয়ম-নীতি সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক রিটার্ন ফাইলকে সরলীকরণ করে বছরে একবার করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এমএসএমই ক্ষেত্রের উন্নয়নের লক্ষে ৫টি মন্ত্রের কথা বলেছেন। এগুলি হল- ঋণের সুবিধা, বাজারে বিপণনের সুবিধা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, সহজে ব্যবসার সুবিধা এবং এই ক্ষেত্রে কর্মরত কর্মীদের মধ্যে নিরাপত্তার বোধ জাগ্রত করা। ২০১৮র পয়লা ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেটে এবার এমএসএমই ক্ষেত্রের জন্য অর্থ বরাদ্দ বাড়িয়ে ৬৫৫২.৬১ কোটি টাকা করা হয়েছে। ব্যক্তিগত কিছু প্রকল্পের ক্ষেত্রে এই বরাদ্দ ৫৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এগুলির মধ্যে রয়েছে, ন্যাশনাল ম্যানুফ্যাকচারিং কমপিটিটিভনেস প্রোগ্রাম, প্রধানমন্ত্রীর কর্মসংস্হান কর্মসূচি, ক্রেডিট গ্যারেন্টি ফান্ড, খাদি গ্র্যান্ড, চিরাচরিত শিল্পগুলিকে পুনরুজ্জীবনের জন্য বিশেষ তহবিল, গ্রামীণ শিল্পকে বাঁচানোর জন্য উদ্ভাবনমূলক কর্মসূচি এবং ন্যাশনাল এসসি/এসটি হাব প্রভৃতি।
প্রধানমন্ত্রীর কর্মসংস্হান কর্মসূচিকে (পিএমইজিপি) ২০১৯-২০ অর্থবর্ষেও অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর অর্থ, দ্বাদশ যোজনার তিন বছর পরেও প্রায় ৫৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কর্মসূচিটি চালিয়ে যাওয়া হবে। এরফলে এই সময়কালে ১৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্হান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত এই কর্মসূচিতে ইতিমধ্যে ১১ লক্ষ ১৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্হান হয়েছে। খাদি ও গ্রামীণ শিল্প কমিশনকে এই কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য নোডাল এজেন্সি হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া এই কর্মসূচিতে মহিলা উদ্যোগপতিদের আর্থিক সহায়তার ব্যবস্হা করা হয়েছে।
এমএসএমই মন্ত্রক সারা দেশ জুড়ে আয়ুষ কর্মসূচির অধীনে স্বাস্হ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে শিল্পোদ্যোগকে উৎসাহ দিতে আয়ুষ মন্ত্রকের সঙ্গে এ বছরের জুন মাসে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এমএসএমই ক্ষেত্রে আর্য়ুবেদ, ইউনানি, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথিক ওষুধ তৈরি, সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে স্বাস্হ্য পরিষেবা প্রদান কেন্দ্র গড়ে তোলার ওপর এই সমঝোতা স্মারককে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রতি বছর আর্ন্তজাতিক নারী দিবস উদযাপন করা হয়ে থাকে। এবছর এই উপলক্ষে এমএসএমই মন্ত্রক মহিলা উদ্যোগপতিদের জন্য একটি পোর্টাল চালু করেছে। www.udyamsakhi.org. পোর্টালের মাধ্যমে মহিলা উদ্যোগপতিদের জন্য শিল্প স্হাপন সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে। খাদি ও গ্রামীণ শিল্প কমিশনের অধীনে এ বছরের জুন মাসে ‘সৌর চরখা অভিযান’-এর সূচনা হয়েছে। ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ৫-শো ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দে সৌর চরখার ৫০টি ক্লাস্টার গড়ে তোলা হবে এবং এ থেকে গ্রামাঞ্চলের ১ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্হান হবে। খাদি ও গ্রামীণ শিল্প কমিশন দেশে মধু উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে যে ‘মধু উৎপাদন অভিযান’ শুরু করেছে, তাতে ‘মিষ্টি বিপ্লব’-এর বিশ্ব রেকর্ড গড়ে উঠেছে। সারা দেশের বিভিন্ন স্হানে কৃষকদের মধ্যে মৌমাছি পালনের মাধ্যমে মধু উৎপাদন বৃদ্ধির বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খাদি শিল্পের মাধ্যে উৎপাদিত জামা-কাপড়কে বিশ্বের সর্বত্র তুলে ধরতে এ বছর মুম্বাইতে ল্যাকমে ফ্যাশন সপ্তাহে মডেলরা খাদির পোশাক পরে ক্যাট ওয়াক-এ অংশ নেন। মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে খাদি ও গ্রামোদ্যোগ কমিশনের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বছরের জুন মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার পিটারমারিট্জবার্গ নামে যে রেল স্টেশনে গান্ধীজিকে ১২৫ বছর আগে জোর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেখানে খাদির পণ্যদ্রব্য বিষয়ে প্রচার চালানো হয়েছে। এছাড়া খাদির কাপড়-জামাকে দেশ ও বিদেশে জনপ্রিয় করে তোলার লক্ষে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বছরই এপ্রিল মাসে ৩৯টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক ক্ষুদ্র শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। এই সম্মেলনে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, কৃষি, বস্ত্র বয়ন, ডেয়ারী দ্রব্য, গয়না শিল্প, স্বাস্হ্য পরিষেবা ও শিক্ষা সহ ১২টি ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এমএসএমই-র আওতায় শিল্পোদ্যোগ সংক্রান্ত মোট ২৩টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে ভারত ও কোরিয়ার মধ্যে এমএমএমই ক্ষেত্রের মাধ্যমে কাজের উন্নয়নের লক্ষে একটি প্রযুক্তি বিনিময় কেন্দ্রে সূচনা হয়েছে। এছাড়া ভারত ও মরোক্কো এবং রাশিয়ার মধ্যেও এমএসএমই ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ বছর অক্টোবর মাসে ক্ষুদ্রশিল্প ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত এক প্রতিনিধি দল ইউরোপের ক্ষুদ্রশিল্প সম্মেলনে যোগ দেয়। এ বছর নভেম্বর মাসে তাইওয়ানে ভারত তাইওয়ান ক্ষুদ্রশিল্প উন্নয়ন মঞ্চের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রসঙ্ঘের উদ্যোগ প্রতি বছর ২৭ জুন ক্ষুদ্রশিল্প দিবস উদযাপন করা হয়ে থাকে। এ বছর নভেম্বর মাসে নতুন দিল্লীতে এই উপলক্ষে উদ্যম সংগ্রাম ২০১৮ নামে এক সম্মলনের আয়োজন করা হয়েছিল। এমএমএমই মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে একটি মাসিক ই-নিউজ লেটার প্রকাশের সূচনা হয়েছে। অন্যদিকে ‘সম্পর্ক’ নামে মন্ত্রকের একটি পোর্টালেরও উদ্বোধন করা হয়েছে।
CG/PB/NS
(Release ID: 1559321)
Visitor Counter : 277