আবাসনএবংশহরাঞ্চলেরদারিদ্র্যদূরীকরণমন্ত্রক

বর্ষশেষ পর্যালোচনা – ২০১৮ : আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রক

Posted On: 08 JAN 2019 7:08PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৮ জানুয়ারি, ২০১

 

কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রক দেশের শহরগুলির পুনরুজ্জীবন এবং সম্পূর্ণ রূপান্তরের জন্য একটি বড় ধরণের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই কর্মসূচিতে আওতায় ৬,৮৫,৭৫৮ কোটি টাকারও বেশি অর্থ শহর পুনরুজ্জীবনের খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে, যাতে নাগরিক-সহায়ক শহরাঞ্চল গড়ে তোলা যায়। এই রূপান্তর ঘটানোর পাশাপাশি, জনশৌচালয় এবং পারিবারিক শৌচালয় নির্মাণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে, কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনারও রূপায়ণ সম্ভব হয়েছে স্বচ্ছ ভারত মিশনের আওতায়।

 

উল্লেখ করা যেতে পারে, স্মার্ট সিটি মিশনের আওতায় ২,০৫,০১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ হাজারেরও বেশি স্মার্ট সিটি প্রকল্প রূপায়িত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ৬৫ লক্ষেরও বেশি গৃহ নির্মাণের কর্মসূচি ইতিমধ্যেই অনুমোদিত হয়েছে।

 

এই কর্মসূচিগুলির পাশাপাশি, মিশন অম্রুত – এর আওতায় জল, নিকাশী ব্যবস্থা এবং শহরের স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করার সমস্ত ব্যবস্থাগুলি রূপায়ণ করা হচ্ছেএই খাতে ৭৭,৬৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।

 

শহরের পরিবহণ ব্যবস্থায় সদর্থক পরিবর্তন আনতে নতুন মেট্রো লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডে-এনইউএলএম – এর আওতায় শহরের তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তাঁদের জন্য সঠিক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা যায়

 

 

স্বচ্ছ ভারত মিশন : নগর

 

২০১৮-র এপ্রিল থেকে অতিরিক্ত ১,৬১২টি শহরকে উন্মুক্ত স্থানে ‘শৌচ-মুক্ত শহর’ (ওডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে, এ ধরণের শহরের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪,১২৪। ৬২ লক্ষ ব্যক্তিগত পারিবারিক শৌচালয় নির্মাণের পাশাপাশি, ৫ লক্ষ সামাজিক ও জনশৌচালয় নির্মাণও প্রায় শেষের পথে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ২১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শহর এলাকাকেও উন্মুক্ত স্থানে শৌচ-মুক্ত শহর বা ওডিএফ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে – আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, দাদরা ও নগর হাভেলি, দমন ও দিউ, চণ্ডীগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, গুজরাট, হরিয়ানা, ঝাড়খন্ড, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মিজোরাম, মণিপুর, সিকিম, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, উত্তরাখন্ড, পুদুচেরী, পাঞ্জাব এবং কর্ণাটক। ২০১৪-র ২ অক্টোবর শহর এলাকার জন্য স্বচ্ছ ভারত মিশনের সূচনা করা হয়। এর মেয়াদ নির্দিষ্ট করা হয় পাঁচ বছরের জন্যএই মিশনের লক্ষ্য হ’ল – ১০০ শতাংশ উন্মুক্ত স্থানে শৌচ-মুক্ত স্থান বা ওডিএফ গড়ে তোলা। জনশৌচালয় যাতে মানুষজনের নজরে পড়ে, তার জন্য গুগল মানচিত্রে সারা দেশের সকল জনশৌচালয়কে আনার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৮৩৫টি শহর, ৩৩ হাজারেরও বেশি জনশৌচালয় গুগল মানচিত্রে আনতে পেরেছে।

 

এই মন্ত্রক এছাড়াও যেসব কর্মসূচি নিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে –

 

ক)  ওডিএফ + এবং ওডিএফ + + প্রোটোকলের সূচনা করা,

খ) আবর্জনামুক্ত শহর গড়ে তোলা এবং

গ) একটি স্বচ্ছ মঞ্চের সন্ধান দেওয়া।

 

আবর্জনামুক্ত শহর গড়ে তোলার জন্য কঠিন বর্জ্য পদার্থের উৎপত্তিস্থল-কে পৃথক করা থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করা, বর্জ্য পদার্থের বিজ্ঞানসম্মত প্রক্রিয়াকরণ, প্লাস্টিক বর্জন নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা এবং নাগরিকদের অভিযোগের সঠিক প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণের মতো কর্মপন্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

স্বচ্ছ মঞ্চের আওতায় জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য কম্প্যুটারের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ

 

পরিচ্ছন্নতার মান বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন শহরের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ সমীক্ষার মাধ্যমে ২০১৬-তে ৭৩টি শহরের রেটিং বা মূল্য নির্ধারণের ব্যবস্থা করা হয়। ২০১৭-তেও আরও একটি এ ধরণের সমীক্ষা হয়, যার ফলে রেটিং – এর ব্যবস্থা করা হয় ৪৩৪টি শহরের জন্য। ২০১৭-র সমীক্ষায় ইন্দোর প্রথম স্থানে আসে। ২০১৮-র ৪ জানুয়ারি থেকে ১০ মার্চ সমীক্ষার তৃতীয় রাউন্ডটি পরিচালনা করা হয়। এর আওতায় আসে ভারতের ৪,২০৩টি বিধিবদ্ধ শহর। ইন্দোর, ভোপাল এবং চণ্ডীগড় দেশের তিনটি সেরা শহরের মধ্যে চলে আসে।

 

২০১৮-র ১৩ আগস্ট ২০১৯ – এর স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ সমীক্ষার সূচনা করা হয়

 

ব্যবহারিক পরিবর্তন আনতে একটি জাতীয় হেল্পলাইন নম্বরের সূচনা করা হয়, নম্বরটি হ;ল – ১৯৬৯। এই হেল্পলাইনে ফোন করে সাধারণ মানুষ স্বচ্ছ ভারত মিশন সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেয়ে যাবেন। এর পাশাপাশি, একটি স্বচ্ছতা অ্যাপেরও সূচনা করা হয়, যার মাধ্যমে অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

স্বচ্ছ ভারত মিশন – নগর একটি অনলাইন শিক্ষামূলক পোর্টাল চালু করেছে, যেখানে  প্রশিক্ষণ মডিউলের আকারে ১৫০টি সেরা অনুশীলন পদ্ধতি আপলোড করা হয়েছে।

 

বর্তমানে ৮৪,২২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭১,৭৯৭টি ওয়ার্ড বাড়ি বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ কর্মসূচি চালু করেছে।

 

কিছু সাফল্যের কাহিনী

 

ছত্তিশগড়ের অম্বিকাপুরে বর্জ্য নিষ্কাশনের কোনও উন্মুক্ত স্থান না থাকলেও উদ্ভাবনমূলক কঠিন তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রত্যেক মাসে ১০০ শতাংশ বর্জ্য পৃথক করতে পারছে এই শহরটি৬২৩ জন মহিলা সদস্যের একটি স্বসহায়ক গোষ্ঠী এই কর্মসূচিটিকে রূপায়ণ করতে সাহায্য করছে।

 

বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থার ধারাবাহিক সমাধানের ক্ষেত্রে আরেকটি উল্লেখযোগ্য শহরের নাম হ’ল মহিশূর। কেরল আরও একটি শহর, যেটি বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার বিকেন্দ্রীকরণ সম্ভব হয়েছেকেরলের প্রায় প্রত্যেকটি শহরেই পারিবারিক স্তরে পাইপ কম্পোস্ট এবং জৈব গ্যাস কারখানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে গোয়ার কথাও। এই শহর দেখিয়ে দিয়েছে বর্জ্যের মূল পৃথক করার মাধ্যমে কিভাবে বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করা যায়। এই শহরের ১০০ শতাংশ বাড়ি থেকেই বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। শুষ্ক বর্জ্য থেকে কিভাবে ম্যাজিক ইঁট বানানো যায়, তা দেখিয়ে দিয়েছে আলিগড় শহর।

 

স্বচ্ছ ভারত মিশনের আওতায় উদ্যোগসমূহ

 

দেশের নাগরিকদের নিয়ে গঠিত বিভিন্ন উদ্যোগ গড়ে তোলা হয়েছে এই মিশনের আওতায়। যারা বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে উদ্ভাবনমূলক বাণিজ্যিক মডেল সৃষ্টি করেছে। এই ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হ’ল – পুণে শহর সড়ক পরিষ্কার করার যন্ত্রের সন্ধান দিয়েছে, যার নাম ‘জটায়ু’। সরু রাস্তায় যেখানে যন্ত্র ঢুকতে পারে না, সেখানে ‘জটায়ু’ মোক্ষম অস্ত্র। বেঙ্গালুরুর ডেইলি ডাম্প সংস্থাটি কম খরচে বাড়িতে বাড়িতে জৈব বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা ছাড়াও  ‘কম্যুনিটি কম্পোস্ট সিস্টেম’ - এর সন্ধান দিয়েছে, যার ফলে জৈব বর্জ্যকে উচ্চ মানের সারে রূপান্তরিত করা সম্ভব হচ্ছে

 

 

CG/SSS/SB


(Release ID: 1559176) Visitor Counter : 385


Read this release in: English