বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক

বর্ষশেষ পর্যালোচনা ও উল্লেখযোগ্য সাফল্য, ২০১৮

Posted On: 04 JAN 2019 5:02PM by PIB Kolkata

ভারতীয় অর্থনীতিকে ডিজিটাল দিক থেকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে এবং সর্বস্তরের মানুষকে ডিজিটাল ব্যবস্থার সুযোগ করে দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ডিজিটাল কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচিতে প্রযুক্তিকে সাধারণ মানুষের ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়েছে। সরকার সুশাসন এবং জনগণকে সঠিক পরিষেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্বল্প সময়ের মধ্যে যাতে এই ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জনগণকে প্রশিক্ষিত করে তোলা যায়, সরকার সেই লক্ষ্যে বিশেষ কাজ করেছে।

 

আধারের মাধ্যমে সরকার ২০১৮-র ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১২২ কোটি ৯ লক্ষ মানুষকে পরিচয়পত্র প্রদান করেছে। এর আগে দেশের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ এলাকার বিশেষ করে, মহিলা ও শিশুদের কোন পরিচয়পত্র ছিল না। আধার প্রত্যেককে সরকারি পরিচয়পত্র প্রদান করেছে। আধারের সঙ্গে সংযুক্ত করে ডিজিটাল লকার বা ই-স্বাক্ষরের ব্যবস্থাপনা এবং ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার পথ প্রশস্ত হয়েছেসাধারণ মানুষ বিভিন্ন সরকারি অফিসে না দৌঁড়ে তাঁর মোবাইলের মাধ্যমেই নানান পরিষেবা পাচ্ছেন।

 

গত চার বছরে সরকার ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় ৩১৬ কোটি লেনদেন করেছে। এই ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে ‘ভীম’ অ্যাপ। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে ‘ভীম’ অ্যাপের মাধ্যমে ৭,৯৮১ কোটি টাকা লেনদেন করা হয়।

 

মোবাইল এবং স্মার্ট ফোনের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিষেবার ডিজিটাল ব্যবস্থাপনাও বাড়ছে। জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, মোবাইল ফোন এবং আধারের মাধ্যমে ডিজিটাল পরিচয়পত্র দেশের জনগণকে সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রাপ্য টাকা পৌঁছে দিচ্ছে। সরকারের ৪৩৩টি প্রকল্পে আধার-ভিত্তিক ভর্তুকি প্রদান ব্যবস্থাপনায় ৫ লক্ষ ৪৯ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে।

 

মোবাইল ফোন, ডিজিটাল ব্যবস্থাকেও উৎসাহ প্রদান করছে। গত চার বছরে ডিজিটাল পেমেন্ট লেনদেন ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সাধারণ মানুষও এখন এই পরিষেবার সুযোগ নিচ্ছেন।

 

জাতীয় বৃত্তি পোর্টাল : গত তিন বছরে শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বৃত্তি পোর্টালে ৩ কোটি ৫৭ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। ১ কোটি ৮ লক্ষ পড়ুয়াকে ৫,২৭৬ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে।

 

জীবন প্রমাণের মাধ্যমে পেনশনভোগীদের পরিচয়পত্র পর্যালোচনা সহজ হয়েছে। ২০১৪ সালে এই প্রকল্প চালুর পর ২৩৯ লক্ষ ২৪ হাজার পেনশনভোগী এই ব্যবস্থাপনায় তাঁদের লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন।

 

ডিজি লকার পরিষেবা সহজে জনগণকে তাঁদের নথিপত্র সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা দেয়। যথাযথ অনুমতি প্রদানের পর পরিষেবা প্রদানকারীরা ইলেক্ট্রনিক ব্যবস্থাপনায় এই নথিপত্র তাদের হেফাজতে জমা রাখে। ১ কোটি ৬৯ লক্ষ আবেদনকারী এই ব্যবস্থাপনার সুবিধা নিচ্ছেন।

 

সয়েল হেল্‌থ কার্ড তৈরি হয়েছে ৯ কোটি ৫ লক্ষ।

 

ই-ন্যাম : ২০১৮ সালের ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত ১৬টি রাজ্য ও দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৮৫টি বাজারে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ কৃষক এই ই-ন্যাম ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হয়েছেন।

 

জনগণকে সহজে এবং উন্নতমানের সুশাসন ব্যবস্থা প্রদানের জন্য সরকার ‘উমঙ্গ’ প্রকল্প চালু করেছে। এর মাধ্যমে দেশবাসী তাঁদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবার সুযোগ নিতে পারবেন। ১৯শে ডিসেম্বর, ২০১৮ পর্যন্ত ১৭টি রাজ্যের ৩২৫টি সুবিধা এই পরিষেবার মাধ্যমে উপলব্ধ।

 

সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র : গ্রামীণ এলাকায় সহজে জনগণের কাছে ই-পরিষেবা পৌঁছে দিতে এই কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে ৩ লক্ষ ৫ হাজার সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র রয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি এবং শংসাপত্র সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিষেবা এই কেন্দ্র থেকে প্রদান করা হয়। ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচিতে মহিলাদের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সরকার মহিলা উদ্যোগপতিদের এবং স্বরোজগার গোষ্ঠীর সদস্যদের এই সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র গঠনের জন্য বিশেষভাবে উৎসাহিত করে।

 

ই-ডিস্ট্রিক্ট মিশন মোড প্রোজেক্ট : এই প্রকল্পটি জেলাস্তরে জনগণকে নির্দিষ্ট পরিষেবা প্রদানের জন্য ব্যবহার করা হয়। যে কোন সময়ে যে কোন পরিষেবা প্রদান করতে সরকার এই ব্যবস্থা চালু করেছে। ৩৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৬৮৭টি জেলার নাগরিকরা বর্তমানে ২,৬৫১টির বেশি ই-পরিষেবা পেয়ে থাকেন।

 

ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্ল্যাটফর্ম : ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্ল্যাটফর্ম সরকারের এক বিশেষ উদ্যোগ। এর আওতায় স্ক্যান করা নথিপত্র ব্যবহার করার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ডিজিটাইজেশন এবং সরকারি নথিপত্র বিনা কাগজে সংরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করা।

 

দ্রুত নিরীক্ষণ প্রক্রিয়া : ই-সার্ভিসের ক্ষেত্রে একটি ফিডব্যাক প্রক্রিয়া ভারত সরকার ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারগুলি প্রদান করছে। এর মাধ্যমে জনগণ ওয়েব পোর্টাল, মোবাইল অ্যাপ বা এসএমএস-এর মাধ্যমে তাঁদের মতামত জানাতে পারবেন। বাংলা, হিন্দি, গুজরাটি, কন্নড়, মালয়ালম, মারাঠি, পাঞ্জাবি, তামিল এবং তেলেগু – এই ন’টি ভাষায় বর্তমানে এই সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।

 

সরকারি নথি : সরকারি নথি যাতে জনগণ সহজে দেখতে পারেন এবং এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন, সেই লক্ষ্যে এই ব্যবস্থাপনা চালু হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন নীতি, আইন এবং তথ্য এতে সংরক্ষিত থাকছে।

 

মাই গভ : দেশের নাগরিকদের জন্য মাই গভ একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। এখানে সুশাসনের জন্য সরকার এবং দেশের জনগণ যৌথভাবে কাজ করতে পারেন। ২০১৪ সালের ২৬শে জুলাই এই প্রকল্প চালু হয়। প্রথম বছরেই ৮ লক্ষ ৭৪ হাজার ব্যবহারকারীর নাম নথিভুক্ত হয়। বর্তমানে কার্যকরভাবে ৭১ লক্ষেরও বেশি জনগণ এই ফোরাম ব্যবহার করেন।

 

জাতীয় জ্ঞান নেটওয়ার্ক : উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য দ্রুতগতির তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে সব প্রতিষ্ঠানগুলিকে একত্রিত করাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য। এখনও পর্যন্ত ১,৬৭৫টি এ ধরণের লিঙ্ক তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে, ৩৮৮টি লিঙ্ক শিক্ষাক্ষেত্রে জাতীয় মিশনের আওতাভুক্ত।

 

ডিজিটাল সাক্ষরতা : সমাজের ক্ষমতায়নের জন্য সরকারের স্বপ্ন পূরণের অন্যতম মূল চাবিকাঠি এই প্রকল্প। বিশেষ করে, গ্রামীণ এলাকায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ও শিক্ষার মানোন্নয়নে এই প্রকল্প বিশেষ কার্যকর। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল স্বাক্ষরতা অভিযানের সঙ্গে যৌথভাবে এই ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় ১ কোটি ৬২ লক্ষ জনগণ তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। তাঁদের মধ্যে থেকে ১ কোটি ৫৮ লক্ষ জনগণকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা গেছে।

 

ছোট ছোট শহরে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিতে এবং অঞ্চল-ভিত্তিক উন্নয়নে সুস্থিতি আনতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে একটি বিপিও প্রকল্প চালু করা হয়েছে। ‘ইন্ডিয়া বিপিও উন্নয়নী প্রকল্প’ নামে এই প্রকল্পে ৪৫,৮৪০টি আসনও রয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ইম্ফল, কোহিমা, গুয়াহাটি; জম্মু-কাশ্মীরের সোপর, জম্মু, বুঁদগাঁও; হিমাচল প্রদেশের সিমলা; বিহারের মুজফফরপুর ও পাটনা এবং ওড়িশার জলেশ্বর থেকে এই বিপিও-গুলি চালানো হচ্ছে।

 

সরকার ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ও ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিকে সফল করার জন্য ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশ তৈরির বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আওতায় মোবাইল ফোন তৈরির বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। দেশে বর্তমানে মোবাইল তৈরির হার প্রায় ২৯ শতাংশ বেড়েছে। এই কাজে ৬ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

 

ইলেক্ট্রনিক উন্নয়নী তহবিল : উদ্ভাবন, গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য যথাযথ ব্যবস্থাপনা চালু করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য গড়া হয়েছে ইলেক্ট্রনিক্স উন্নয়নী তহবিল। এই প্রকল্পে স্টার্ট-আপ কর্মসূচিকে যুক্ত করা হয়েছে। স্টার্ট-আপ-এর আওতায় ৪,২০০ কর্মসংস্থান হয়েছে।

 

পরিষেবা প্রদানকারী আর্থিক কাঠামো সংস্কার : ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী বিশেষ করে, টেলিভিশন, সেলুলার মোবাইল হ্যান্ডসেট বা সেট টপ বক্স, এলইডি সামগ্রী, মাইক্রোওয়েভ ওভেন সহ বিভিন্ন জিনেসের মূল্য কাঠামো সংস্কার করা হয়েছে। এই জিনিসগুলি যাতে সহজে দেশে তৈরি করা যায়, সেজন্যই এই কর্মসূচি।

 

ইলেক্ট্রনিক্স তথ্যপ্রযুক্তি সামগ্রী : ভারতীয় গ্রাহকদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে এবং অনুন্নত মানের ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী আমদানি বন্ধ করতে, ‘ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি সামগ্রী নির্দেশিকা, ২০১২’ চালু করা হয়েছে। এর আওতায় ৪৪টি সামগ্রীকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

 

ভারতীয় ভাষায় মোবাইল ফোন চালুর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই ফোনগুলিতে হিন্দি, ইংরেজি সহ অন্য যে কোন একটি ভারতীয় ভাষায় টাইপ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

 

ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্য পরিষেবা, কৃষি, পরিবেশ, যোগাযোগ, নিরাপত্তা এবং ক্ষুদ্র শিল্পের উন্নয়নে উৎসাহ দিতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

একটি বিশেষ প্রকল্পে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় ৬০টি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা চলছে।

 

সাইবার নিরাপত্তার জন্য সাইবার স্বচ্ছতা কেন্দ্র চালু করেছে সরকার। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নিরাপত্তা সম্পর্কিত তথ্য আদানপ্রদান এবং সাইবার জগতের অপরাধ বন্ধ করতে এই বিশেষ চালু করা হয়।

 

সরকারের তরফে জাতীয় সাইবার সমন্বয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় যথাসময়ে তথ্য আদানপ্রদান এবং কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

 

CG/PM/DM



(Release ID: 1558648) Visitor Counter : 141


Read this release in: English