ভূ-বিজ্ঞানমন্ত্রক

বর্ষশেষ পর্যালোচনা : ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক

Posted On: 31 DEC 2018 12:05PM by PIB Kolkata

কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক আবহাওয়া, জলবায়ু, মহাসাগর ও উপকূলবর্তী রাজ্যসমূহ জলানুসন্ধান বিজ্ঞান এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রভৃতি ক্ষেত্রে পরিষেবা দিয়ে থাকে। এই মন্ত্রকের অন্যান্য কাজকর্মের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের সামুদ্রিক জীব বা দ্রব্য অনুসন্ধান করা এবং তিনটি মেরু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ও ধারাবাহিকভাবে পরীক্ষা করে দেখা। ২০১৮-তে এই মন্ত্রক বিভিন্ন প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি সাফল্যের উল্লেখ করা হল।

 

হাই পারফরমেন্স কম্পিউটিং (এইচপিসি)

ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক হাই পারফরমেন্স কম্পিউটিং বা এইচপিসি ব্যবস্থা ৬.৮ পেটা ফ্লপ্‌স বাড়িয়েছে যেগুলি পুণের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মিটিোরলজি (আইআইটিএস) এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্টিং (এনসিএমআরডব্লিউএফ) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর ৮ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রী আইআইটিএম-এ এইচপিসি ব্যবস্থা ‘প্রত্যুষ’ এবং এনসিএমআরডব্লিউএফ-এ এইচপিসি ব্যবস্থা ‘মিহির’ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। এই ব্যবস্থার ফলে জলবায়ু এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত কার্যকলাপে দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। বিশ্বে এইচপিসি ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে শীর্ষ ৫০০টির তালিকায় শীর্ষ ৩০টির মধ্যে পৌঁছেছে ভারত। ভারতের স্থান এক্ষেত্রে ৩৬৮তম স্থানে ছিল একসময়ে। জাপান, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে এক্ষেত্রে চতুর্থ স্থানে পৌঁছে গিয়েছে ভারত।

 

উন্নত আবহাওয়া ও সাইক্লোনের আভাস দেওয়া

 

এ বছর পয়লা জুন ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক দেশে তৈরি একটি শক্তিসম্পন্ন অত্যাধুনিক গ্লোবাল এন্সেম্বল প্রেডিকশন বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আবহাওয়ার পূর্বাভাস ব্যবস্থা চালু করে। এই ব্যবস্থার দৃঢ়তা বিশ্বের সচল আবহাওয়া আভাস কেন্দ্রগুলির মধ্যে সবচেয়ে উন্নত (১২ কিমি)।চলতি যে আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রগুলি রয়েছে সেগুলির ক্ষমতা যথেষ্ট বাড়িয়েছে গ্লোবাল এন্সেম্বল প্রেডিকশন ব্যবস্থা।

 

প্রসঙ্গত, ওয়ার্ল্ড মিটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন বা ডব্লিউএসও গ্রীষ্মপ্রধান সাইক্লোন উপদেশ পরিষেবা ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে ভারতীয় আবহাওয়া পূর্বাভাস দপ্তরের (আইএমডি) প্রশংসাও করেছে। আরব সাগরে সাইক্লোন ‘সাগর’, বা আরও ভয়ানক সাইক্লোন ‘মেকুনু’, ‘লুবান’ এবং ‘তিতলি’ সম্পর্কে আগাম আভাস দেওয়ার প্রেক্ষিতে প্রশংসা অর্জন করতে পেরেছে আইএমডি।

 

কৃষি-আবহাওয়া উপদেষ্টা পরিষেবা বা এএএস

মন্ত্রক কৃষি গবেষণা সংক্রান্ত ভারতীয় পর্ষদ বা আইসিএআর-এর সঙ্গে একযোগে কৃষি-আবহাওয়া উপদেষ্টা পরিষেবা প্রদান করে থাকে কৃষকদের হিতার্থে। বীজ বপন, সেচ, সার এবং কীটনাশক প্রয়োগের পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এই পরিষেবার ব্যবহার করেন কৃষকরা। বর্তমানে, ৪ কোটি কৃষক বিভিন্ন শস্য অনুযায়ী মাতৃ ভাষাতেই বিভিন্ন নির্দেশিকা পাচ্ছেন।

 

বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে পরিষেবা

ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর বা আইএমডি এবং পসোকো শক্তিক্ষেত্রে একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করেছে। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ, নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রতিমন্ত্রী শ্রী আর কে সিং গত ২৯ আগস্ট শক্তিক্ষেত্রে আবহাওয়া পোর্টাল সংক্রান্ত একটি রেফারেন্স সংক্রান্ত নথির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

 

সম্ভাব্য মাছ ধরার অঞ্চল সম্পর্কিত উপদেশসমূহ

মহাসাগরীয় তথ্য পরিষেবা সংক্রান্ত জাতীয় কেন্দ্র বা আইএনসিওআইএস সম্ভাব্য মাছ ধরার অঞ্চল সম্পর্কিত উপদেশাবলী দিয়ে যাচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্টের তাপ সংক্রান্ত উপগ্রহ তথ্যের ভিত্তিতে এই উপদেশসমূহ সৃষ্টি করা হয়ে থাকে।

 

জলের নির্লবণীকরণ

গত ২২শে অক্টোবর লাক্ষাদ্বীপের কাভারাত্তিতে মহাসাগরীয় তাপ সম্পর্কিত শক্তি সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিশ্বের সর্বপ্রথম নির্লবণীকরণ প্রকল্পটির শিলান্যাস করেন কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধন।

 

দ্বীপসমূহের প্রয়োজনে মহাসাগরীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

এ বছর ১৫ই সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধন পোর্ট ব্লেয়ারে মহাসাগরীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত অটল কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন। সামুদ্রিক মাছের সমুদ্রবর্তী মুক্ত সমুদ্র পিঞ্জর চর্চায় জোর দেওয়া হয়েছে এতে। ভারতীয় উপকূলের বাস্তু ব্যবস্থার বিভিন্নতায় গুরুত্ব দিয়ে ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক এ বছর এপ্রিল মাসে চেন্নাই-এ চলতি কেন্দ্রটিকে উপকূল গবেষণার ক্ষেত্রে সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে রূপান্তরিত করেছে।

 

ডঃ হর্ষ বর্ধন উপকূল গবেষণা সংক্রান্ত জাতিয় কেন্দ্র (এনসিসিআর) এবং এই সংস্থার যৌথ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার শিলান্যাস করেন অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে এ বছর দোসরা নভেম্বর।

 

ভারতীয় উপকূল বরাবর সমুদ্রে জলের নজরদারি কর্মসূচি রূপায়ণ করে যে তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছে এনসিসিআর সেটিকে ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন নতুন দিল্লীতে মন্ত্রকের প্রতিষ্ঠা দিবসে গত ২৭শে জুলাই প্রকাশ করা হয়।

 

প্রধান শহরের বায়ু মান ও আবহাওয়া পরিষেবা

 

কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ভূ-বিজ্ঞান, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধন দিল্লির চাঁদনি চকের মতো জনাকীর্ণ এলাকার নাগরিকদের সুবিধার্থে একটি বায়ুমান নজরদারি ও পূর্বাভাস কেন্দ্রের উদ্ঘাটন করেন।

 

চেন্নাই-এ বন্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ

 

চেন্নাই ও রাজস্ব প্রশাসন, বিপর্যয় পরিচালন এবং নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের সঙ্গে উপকূল গবেষণা সংক্রান্ত জাতীয় কেন্দ্র (এনসিসিআর) এবং ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করে যাতে উপকূলবর্তী অঞ্চলে বন্যার আভাস ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া যায়। পাশাপাশি, গ্রেটার চেন্নাই কর্পোরেশনের জন্য এনসিসিআর চেন্নাই বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থার সন্ধান দেয়।

 

উপকূলীয় প্রযুক্তি ব্যবস্থা

 

পুদুচেরিতে উপকূল সুরক্ষার প্রয়োজনে এবং একইসঙ্গে সমুদ্র সৈকতের পরিচর্যার প্রয়োজনে অফ-শোর রিফ-এরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

প্রযুক্তি হস্তান্তর

 

প্রাকৃতিক সম্পদ উন্নয়ন নিগম বা এনআরডিসি-র মাধ্যমে সিটি(CT) কন্ট্রোল প্রযুক্তিতে রোবো কোস্টাল অবজার্ভার সংক্রান্ত প্রযুক্তি হস্তান্তর করার জন্য মহাসাগরীয় প্রযুক্তি সংক্রান্ত জাতীয় প্রতিষ্ঠান বা এনআইওটি একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে এ বছর ২৭শে এপ্রিল হায়দরাবাদে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রকেরই সচিব।

 

নির্বাচিত শহরসমূহের অঞ্চল বিভক্তিকরণ

 

ভূ-পদার্থ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ভূ-কম্পন বিষয়ক অঞ্চল বিভক্তিকরণের কাজ শুরু হয়েছে চেন্নাই, ভুবনেশ্বর, কোয়েম্বাটোর এবং ম্যাঙ্গালোরে। আরও আটটি শহরে এ ধরণের কাজ শুরু করার ব্যাপারে পৃথক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে দেশের বিভিন্ন গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এই তালিকায় রয়েছে পাটনা, মীরাট, অমৃতসর, আগ্রা, বারাণসী, লক্ষ্ণৌ, কানপুর এবং ধানবাদ।

 

CG/SSS/DM



(Release ID: 1557855) Visitor Counter : 456


Read this release in: English