পানীয়জলওস্বাস্থ্যব্যবস্থামন্ত্রক
স্বচ্ছ ভারত মিশনের বর্ষশেষ পর্যালোচনা
Posted On:
24 DEC 2018 3:30PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের সার্বিক স্বস্বচ্ছতা এবং পয়ঃপ্রণালীর ব্যবস্থা যথাযথ করার লক্ষ্যে ২০১৪ সালের দোসরা অক্টোবর স্বস্বচ্ছ ভারত মিশন চালু করেন। এর লক্ষ্য জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ২০১৯ সালের দোসরা অক্টোবরের মধ্যে দেশকে খোলা জায়গায় শৌচমুক্ত করা। এই স্বচ্ছ ভারত মিশনের মধ্য দিয়ে জনগণের চারিত্রিক পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
দেশে ২০১৪ সালে স্বচ্ছ ভারত মিশন চালুর সময়ে গ্রামীণ অঞ্চলে শৌচাগারের সংখ্যা ছিল ৩৮.৭ শতাংশ। ২০১৮ সালের ৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এই হার বেড়ে হয়েছে ৯৬.৮৮ শতাংশ।
স্বচ্ছতা সকলের অভ্যাস
পানীয় জল ও স্বচ্ছতা মন্ত্রক স্বচ্ছ ভারত মিশনের আওতায় সারা দেশে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অন্যান্য মন্ত্রক, রাজ্য সরকার, স্থানীয় প্রতিষ্ঠান, অ-সরকারি সংগঠন, সংবাদ মাধ্যম সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী স্বচ্ছতা কেবলমাত্র নির্দিষ্ট কোনও বিভাগের নয়, সকলের অভ্যাস বলে যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তার ওপর ভিত্তি করেই এই কাজ চলছে। এই লক্ষ্য পূরণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
স্বচ্ছতা পাখোয়াড়া
স্বচ্ছতা সম্পর্কিত কাজে সকলকে যুক্ত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন পূরণের জন্য ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে চালু হয় স্বচ্ছতা পাখোয়াড়া বা স্বচ্ছতা পক্ষকাল। বিভিন্ন মন্ত্রক এর আওতায় নানা কাজ পরিকল্পনা করে। ‘স্বচ্ছতা পাখোয়াড়া ইয়ার বুক’ ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে প্রকাশ করা হয়।
নমামি গঙ্গে
নমামি গঙ্গে প্রকল্প জলসম্পদ মন্ত্রকের একটি উদ্যোগ। গঙ্গানদীর তীরবর্তী গ্রামগুলিকে শৌচমুক্ত করতে এবং বর্জ্য গঙ্গার জলে মিশে যাওয়া বন্ধ করতে আন্তঃমন্ত্রক স্তরে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরাখন্ড, উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং ঝড়খণ্ডের ৫২টি জেলার ৪,৪৭০টি গ্রামকে খোলা জায়গায় শৌচমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এই কাজে রাজ্য সরকারের ভূমিকা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে মন্ত্রক গঙ্গানদীর তীরে ২৫টি গ্রামকে গঙ্গা গ্রামে রূপান্তরের কাজ শুরু করেছে। এর জন্য ৬৭ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। ২০১৮ সালে ৫টি গঙ্গা গ্রাম স্বচ্ছতা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।
স্বচ্ছতা কার্যকরি প্রকল্প
স্বচ্ছতা সম্পর্কিত কাজকর্মের বার্ষিক পরিকল্পনা ও যথাযথ রূপায়ণ সুনিশ্চিত করতে স্বচ্ছতা কার্যকরি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর জন্য অর্থ মন্ত্রক পৃথকভাবে ব্যয় বরাদ্দ মঞ্জুর করেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে বিভিন্ন মন্ত্রক ১৮ হাজার ১৫৪ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করেছে।
স্বচ্ছতা সম্পর্কিত বিশেষ স্থান
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারা দেশের ১০০টি স্থানকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলি সাংস্কৃতিক, ধার্মিক ও কৃষ্টিগত দিক দিয়ে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রক এবং পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের সঙ্গে যৌথভাবে এই কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম তিনটি পর্যায়ে এই ধরণের ৩০টি স্থানকে নির্বাচন করা হয়েছে।
সত্যাগ্রহ থেকে স্বচ্ছগ্রহ প্রচারাভিযান (তেসরা থেকে ১০ই এপ্রিল, ২০১৮)
পানীয় জল ও স্বচ্ছতা বিষয়ক মন্ত্রক, বিহার সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে ২০১৮ সালের তেসরা থেকে ১০ই এপ্রিল পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী ‘সত্যাগ্রহ থেকে স্বচ্ছগ্রহ’ প্রচারাভিযানের আয়োজন করে। বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলায় এর আয়োজন করা হয়। বিহারকে স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে প্রায় ২০ হাজার স্বচ্ছগ্রাহী এই কাজে যোগ দেন। এই প্রচারানুষ্ঠানে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নিতিশ কুমার, পানীয় জল ও স্বচ্ছতা মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী কুমারী ঊমা ভারতী সহ কেন্দ্র ও রাজ্যের অন্যান্য মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়করা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখযোগ্য কাজের জন্য ১০ জন সেরা স্বচ্ছগ্রাহীকে পুরস্কার প্রদান করেন।
গোবর্ধন প্রকল্প
মন্ত্রক ২০১৮ সালের ৩০শে এপ্রিল হরিয়ানার কর্নোলে এই গোবর্ধন প্রকল্প চালু করেন। এর লক্ষ্য – গ্রামগুলিকে স্বচ্ছ রাখা এবং গোবর জ্বালানির উৎস হিসাবে ও জৈব সার হিসাবে ব্যবহার করে কৃষকদের আয় বাড়ানো।
স্বচ্ছ ভারত গ্রীষ্মকালীণ কর্মশালা, ২০১৮
পানীয় জল ও স্বচ্ছতা বিষয়ক মন্ত্রক, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক এবং ক্রীড়া ও যুব মন্ত্রক যৌথভাবে স্বচ্ছ ভারত গ্রীষ্মকালীণ কর্মশালার আয়োজন করে। এর লক্ষ্য ছিল – গ্রীষ্মাবকাশে কলেজ পড়ুয়া ও যুবক-যুবতীদের গ্রামীণ এলাকায় স্বচ্ছতার কাজে নিযুক্ত করা।
সারা দেশের লক্ষাধিক পড়ুয়া ও যুবকরা এই কাজে অংশ নেয়। এই কর্মশালার আওতায় প্রত্যেককে স্বচ্ছতা সম্পর্কিত কাজে ১০০ ঘন্টা নিযুক্ত থাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
স্বচ্ছতাই সেবা (১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ থেকে দোসরা অক্টোবর, ২০১৮)
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৮ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সিং – এর মাধ্যমে স্বচ্ছতাই সেবা প্রচারাভিযানের দ্বিতীয় পর্ব সূচনা করেন। ১৭টি স্থানে একযোগে এই কাজ শুরু হয়। অমিতাভ বচ্চন, রতন টাটা, সদ্গুরু, শ্রীশ্রী রবিশঙ্কর, মাতা অমৃতানন্দময়ী সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা এই প্রচারাভিযানে অংশ নেন। স্বচ্ছতার জন্য কাজকর্মকে জনআন্দোলনে পরিণত করার জন্য ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে দোসরা অক্টোবর পর্যন্ত প্রচারাভিযান চালানো হয়।
মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক স্বচ্ছতা সম্মেলন (২৯ সেপ্টেম্বর থেকে দোসরা অক্টোবর, ২০১৮)
মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক স্বচ্ছতা সম্মেলন, স্বচ্ছতা সম্পর্কিত বিভিন্ন মন্ত্রক, তাদের মন্ত্রীরা, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করে। ৬৭টি দেশের প্রায় ২০০ জন প্রতিনিধি এতে যোগ দেন। নতুন দিল্লিতে প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রে ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮’য় রাষ্ট্রপতি এই সম্মেলনের সূচনা করেন। অংশগ্রহণকারী দেশগুলি স্বচ্ছতা সম্পর্কে তাদের উল্লেখযোগ্য সাফল্য ও নানান গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাসের বিষয়টি তুলে ধরেন। চলে পারস্পরিক মতবিনিময়। চার দিনের এই সম্মেলনে আলোচনাসভা, কারিগরি দিক পর্যালোচনা, মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক এবং হাতে-কলমে পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা ছিল। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৮ সালের দোসরা অক্টোবর এই সম্মেলনে ভাষণ দেন।
সজল
পানীয় জল ও স্বচ্ছতা বিষয়ক মন্ত্রক এই সজল প্রকল্প চালু করেছে। নীতি আয়োগের নির্ধারত ১১৭টি সম্ভাবনাময় জেলায় সৌরবিদ্যুতের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই উদ্যোগ। এর আওতায় গ্রামগুলিকে খোলা জায়গায় শৌচমুক্ত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
জেলাস্তরে ব্যবস্থা করা হচ্ছে প্রশিক্ষণের। ভোপাল, পুণে, রাঁচি, রায়পুর ও গুয়াহাটি – এই পাঁচটি জায়গায় সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এই তিন মাসে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সালে ঝাড়খন্ডে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯শে নভেম্বর, ২০১৮ সালে বিশ্ব শৌচাগার দিবসে ঝাড়খন্ডের হাজারিবাগে প্রথম প্রকল্পটি চালু হয়।
CG/PM/SB
(Release ID: 1557184)
Visitor Counter : 503