ইস্পাতমন্ত্রক
ইস্পাত মন্ত্রকের উদ্যোগ “ইস্পাতে তৈরি- ভারতে তৈরি”
Posted On:
21 DEC 2018 2:00PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮
২০১৭ সালে ঘোষিত জাতীয় ইস্পাত নীতি এবং দেশে উৎপাদিত লৌহ ইস্পাত পণ্যদ্রব্য সংক্রান্ত নীতি রূপায়ণের ফলে আমাদের দেশে ইস্পাতের উৎপাদন এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিপুল বৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৩-১৪ বর্ষে যেখানে আমাদের দেশে মাথাপিছু ইস্পাত ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ৫৯ কেজি, তা ২০১৭-১৮ই বেড়ে ৬৯ কেজি হয়েছে। এছাড়া ২০১৭-১৮ই ভারতে ১০ কোটি ৩০ লক্ষ টন ইস্পাত উৎপাদিত হয়েছে, এবং যার ফলে ভারত ২০১৮ই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদক দেশের মর্যাদা পেতে চলেছে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে, ভারতের তৈরি কর এবং স্মার্ট সিটি মিশনের ওপর ভারত সরকারের বিশেষ গুরুত্বের ফলে দেশ জুড়ে ইস্পাতের ব্যবহার নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরমধ্যে ক্ষুদ্র উৎপাদকরা মধ্য পর্যায়ের ইস্পাত ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশেরও বেশি উৎপাদনের ব্যাপারে অবদান যুগিয়েছে। ফলে এক বিরাট সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্হান হয়েছে।
ইস্পাত মন্ত্রক গ্রাম ও শহরাঞ্চলে স্বল্প ব্যয়ে আবাসনের নকশা এবং সেতু, কালভার্ট, অঙ্গনওয়ারীকেন্দ্র, পঞ্চায়েত হল এবং গোষ্ঠী শৌচাগারের মতো ক্ষেত্রকে উৎসাহিত করেছে। এছাড়া রেল, সড়ক পরিবহন, গ্রামোন্নয়ন, পরিবেশ এবং বন ও গ্রাহক সংক্রান্ত দপ্তরের সমস্ত কাজকর্মে ইস্পাতের ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইস্পাত ব্যবহার করে অভিনব পণ্যসামগ্রী তৈরি করার পরিকল্পনা সংক্রান্ত একটি প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়। এতে ইস্পাতভিত্তিক ছোট গৃহ নির্মাণ সংক্রান্ত নকশাটি প্রতিযোগিতায় প্রথম স্হান দখল করেছে।
মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচির আওতায় মূলধনী পণ্যদ্রব্য উৎপাদকদের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে মধ্য পর্যায়ক ইস্পাত ক্ষেত্রে উৎসাহ দেওয়ার ব্যবস্হা করা হয়েছে। এরফলে একদিকে যেমন ইস্পাতের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছ, অন্যদিকে এর ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বছরের অক্টোবর মাসে ওড়িশার ভুবনেশ্বরে ইস্পাত মন্ত্রকের উদ্যোগে ইস্পাত উৎপাদন এবং মূলধনী পণ্যের বিষয়ে একটি বড়ো সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এছাড়া ইস্পাতের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দক্ষতা, নিরাপত্তা বজায় রাখা সহ উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে বর্জ্য পদার্থের ব্যবহার, গ্রীণ হাউস গ্যাসের নির্গমন হ্রাস প্রভৃতির ক্ষেত্রে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষনা করা হয়েছে।
এছাড়া দেশে উৎপাদিত লোহা এবং ইস্পাতের পণ্যদ্রব্য সংক্রান্ত নীতিতে আমাদের দেশে ইস্পাত সংক্রান্ত গবেষনা ও উন্নয়নে পর্যাপ্ত অর্থের সংস্হানের কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে সারা দেশে চারটি আইআইটি-কে ইস্পাত প্রযুক্তির উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। ইস্পাত নির্মিত পণ্যদ্রব্যগুলির গুণমান নিশ্চিত করতে বিআইএস শংসাপত্রের ব্যবস্হা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের উন্নয়ন পরিকল্পনা, ইউএনডিপি-র সঙ্গে সহযোগিতায় ইস্পাত মন্ত্রকের উদ্যোগে ভারতের ক্ষুদ্র শিল্পক্ষেত্রে ইস্পাত উৎপাদনে শক্তি সাশ্রয়, কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং কার্বন যৌগের গ্যাস নির্গমন কমানোর ব্যবস্হা করা হয়েছে।
দেশের ইস্পাত শিল্পের সবচেয়ে বড় সরকারি সংগঠন ভারতের ইস্পাত কর্তৃপক্ষ বা ‘সেইল’এর উদ্যোগে দেশের ৫টি বৃহৎ ইস্পাত কারখানা, ভিলাই, বোকারো, রাউরকেল্লা, দুর্গাপুর এবং বার্নপুর ছাড়াও তামিলনাড়ুর সালেম ইস্পাত কারখানার আধুনীকিকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বছরই ওড়িশার মন্দিরা জলাধারে ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ইস্পাতের ব্যবহার সংক্রান্ত একটি যৌথ উদ্যোগে সেইল যুক্ত হয়েছে। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন স্হানে নতুন রেল সংযোগ স্হাপনের ক্ষেত্রেও ইস্পাতের ব্যবহার বৃদ্ধিতে, রেলমন্ত্রক, বিভিন্ন রাজ্যসরকার এবং রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের সঙ্গে সেইল একযোগে কাজ করে চলেছে। একইরকমভাবে সেইল-এর রাউরকেল্লা, বোকারে এবং বার্নপুরের ক্ষুদ্র বিমানবন্দরগুলিকে ব্যবহারের জন্য ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
এ বছরই হিমাচলপ্রদেশের কান্দ্রৌরিতে বছরে ১ লক্ষ মেট্রিকটন টিএমটি বার উৎপাদনের একটি কারখানা চালু হয়েছে। ২০১৮ সালে সেইল-এর মোট মূলধনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৮২৯৭ কোটি টাকা। এর আগের বছরের তুলনায় এই পরিমান ১৮.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ২০১৮ই এই কোম্পানীর নগদ মুনাফার পরিমান দাঁড়িয়েছে ২৫৮৩ কোটি টাকা। এছাড়াও রাষ্ট্রীয় খনিজ উন্নয়ন নিগম, রাষ্ট্রীয় ইস্পাত নিগম লিমিটেড-এর অধীনে ইস্পাত কেন্দ্রগুলি খুব শীঘ্রই বর্ধিত হারে উৎপাদন শুরু করবে। এই দুটি কারখানারই আধুনিকীকরণ সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে ইস্পাত মন্ত্রকের অধীনে ম্যাঙ্গানিজ ওর ইন্ডিয়া লিমিটেড (এমওআইএল) দেশের মিনি রত্নগুলির মধ্যে অন্যতম হিসাবে উৎপাদন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে চলেছে। এই সংস্হার উদ্যোগে ম্যাঙ্গানিজ আকর উৎপাদনও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় মালিকানাধীন ইস্পাত উৎপাদন সংস্হাগুলি অর্থনৈতিক দিক থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এইসব সংস্হাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য- এমএসটিসি, মেকন, এমএমডিসি, কুদ্রেমুখ প্রকল্প, এফএসএনএল, আরআইএনএল-এর অধীনে ভাইজাগ স্টীল প্ল্যান্ট প্রভৃতি। ভারতের ইস্পাত কর্তৃপক্ষ সেইল ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে তাদের ক্ষতির পরিমান বহুলাংশে কমিয়ে এনেছে, হট মেটাল উৎপাদনে রেকর্ড করেছে, অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদনে এবং বিপণনযোগ্য ইস্পাত উৎপাদনের রেকর্ড স্হাপন করেছে।
CG/PB/NS
(Release ID: 1556926)
Visitor Counter : 1281