নীতিআয়োগ

বর্ষশেষ পর্যালোচনা ২০১৮ – নীতি আয়োগ

Posted On: 12 DEC 2018 5:47PM by PIB Kolkata

নীতি আয়োগ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জল ও স্থায়ী উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বার্ষিক প্রতিফলন পরিমাপের জন্য কিছু সূচক চূড়ান্ত করেছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রের মানোন্নয়নের জন্য ২০১৬ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে একটি নির্দেশিকা বই প্রকাশ করা হয়। নীতি আয়োগ ‘সুস্থ রাজ্য উন্নত ভারত’ শীর্ষক একটি কর্মসূচিও চালু করেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে নীতি আয়োগ।

 

‘মানবসম্পদ পরিবর্তনে ধারাবাহিক ভূমিকা’ (সাথ) কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য। রাজ্যগুলির সঙ্গে একযোগে সামাজিক ক্ষেত্রের মানোন্নয়নে কারিগরি সহায়তা প্রদান সহ নানা কাজ চলছে গত তিন বছর ধরে।

 

‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ কর্মসূচিতে দেশকে শক্তিশালী ও একত্রিত করে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি আন্তঃরাজ্য কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজ্যগুলির সঙ্গে মত আদান-প্রদান চলছে। উচ্চশিক্ষার জন্য ছ’টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে।

 

পরিকাঠামোর উন্নয়নে কেন্দ্র–রাজ্য অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ চলছে। এর আওতায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বকেও নিয়ে আসা হয়েছে। ২০টি রাজ্যের ৪৫০টিরও বেশি প্রকল্পের মধ্যে আটটি রাজ্যের ১০টি ক্ষেত্রের ১০টি প্রকল্পের তালিকা করা হয়েছে রূপায়ণের স্বার্থে।

 

স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে রোগ নির্ণয়, রোগ প্রতিরোধ ও রোগের চিকিৎসা সহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কাজ চলছে। হৃদরোগ, ক্যান্সার বা শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ রোগ মোকাবিলায় জেলা হাসপাতালগুলিতে দুই ও তিনস্তর বিশিষ্ট কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য চালু হয়েছে একটি নির্দেশিকা।

 

‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’-এর লক্ষ্য পূরণের জন্য এবং ভারতের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে জেলাস্তরে বিশেষ কর্মসূচি চালু করেছেন। এর আওতায় ১১৫টি চিহ্নিত জেলার শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করা হচ্ছে। নজর দেওয়া হচ্ছে, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, কৃষি, জলসম্পদ, দক্ষতা উন্নয়ন ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মতো মূল পরিকাঠামোগুলির উন্নয়নে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে।

 

যে রাজ্যগুলি কেন্দ্রীয় সাহায্য থেকে বঞ্চিত ছিল, তাদের অন্যান্য রাজ্যের মতো সুবিধা দিতে পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রককে একটি নতুন নির্দেশিকা দেওয়া হয়। এর আওতায় সব রাজ্যগুলি সমানভাবে স্বচ্ছতার সঙ্গে আর্থিক সাহায্য পাবে। নীতি আয়োগের প্রাক্তন ভাইস-চেয়ারম্যানের পৌরহিত্যে গঠিত কমিটি ‘রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বরাজ অভিযান’ পুনর্গঠনের সুপারিশ করে। এরপর থেকে এটি কেন্দ্র পরিচালিত এক অভিযানে পরিণত হয়েছে।

 

তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের জন্য তহবিল বিভক্ত করার ক্ষেত্রেও নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রককে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পাঠানো হয়েছে সুপারিশ। উপজাতি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির উন্নয়নের লক্ষ্যে নীতি আয়োগ পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে। দিব্যাঙ্গদের জন্য জাতীয় নীতিতে যে ফাঁক ছিল, তা খুঁজে বের করে এর পুনর্গঠনের জন্য ক্ষমতায়ন ও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে।

 

‘দর্পণ পোর্টাল’ নামে একটি নতুন পোর্টাল চালু করা হয়েছে। এতে সারা দেশের যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি রয়েছে তাদের নাম ও বিস্তারিত তথ্য নথিভুক্ত থাকছে। এখনও পর্যন্ত অভিন্ন পরিচয় ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের মঞ্জুরির জন্য ৪৩ হাজার এনজিও তাদের নাম এই পোর্টালে নথিভুক্ত করেছে।

 

নতুন ভারত গঠনের লক্ষ্যে তিন বছরের জাতীয় কর্মসূচি নিয়েছে নীতি আয়োগ। এতে ভারতের ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের পাশাপাশি, উন্নয়নের নানান ধারা নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা রয়েছে। দেশের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পূর্তিতে যে কৌশলগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে, তার খসড়াও প্রস্তুত করেছে নীতি আয়োগ। ২০২২-২৩ সালের জন্য উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে নীতি আয়োগ।

 

আঞ্চলিক ক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য নীতি আয়োগ পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার সহ কয়েকটি রাজ্যের জন্য বিশেষ পরিকল্পনার আওতায় সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যয়বরাদ্দ মঞ্জুরের সুপারিশ করেছে।

 

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য নীতি আয়োগের সিইও-র নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঐ অঞ্চলে এবং হিমালয় পাদদেশের রাজ্যগুলিতে শিল্পক্ষেত্রের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে শিল্প স্থাপনের পন্থা-পদ্ধতি সুপারিশ করবে ঐ কমিটি।

 

নীতি আয়োগ এই প্রথম উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব রাজ্যগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি আঞ্চলিক মঞ্চ গঠন করেছে। তাতে ঐ এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

দ্বীপগুলির উন্নয়নের জন্যও নীতি আয়োগ এক বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রথম পর্বে নীতি আয়োগ এজন্য দশটি দ্বীপকে নির্বাচন করেছে। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনে লাক্ষাদ্বীপ ও আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্পের জন্য বিশেষ স্থান হিসেবে প্রদর্শন করা হয়।

 

স্বাস্থ্য ও পুষ্টিক্ষেত্রের পুনর্গঠনের জন্য নীতি আয়োগ প্রসারিত পরামর্শ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতীয় পুষ্টি কৌশল গ্রহণ করেছে। হোমিওপ্যাথির জন্য জাতীয় কমিশন বিল, ২০১৭ এবং ভারতীয় ওষুধ সংক্রান্ত জাতীয় কমিশন বিল, ২০১৭-কে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়েছে।

 

জাতীয় পুষ্টির মানোন্নয়নে নীতি আয়োগ জাতীয় পুষ্টি কৌশল চালু করেছে। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পুষ্টি বিষয়ক কয়েকটি কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের পুষ্টির মানোন্নয়নের জন্য চালু করা হয়েছে ‘পোষণ’ অভিযান। নীতি আয়োগের ভাইস-চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নীতি আয়োগের এক বৈঠকে ‘পোষণ মাহ্‌’ বা পোষণ মাস নামে এক বিশাল সচেতনতা কর্মসূচি চালু করা হয়। নীতি আয়োগ ন্যায্যমূল্যে ওষুধ দেওয়ার ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে।

 

দেশের শক্তিক্ষেত্রের অন্যতম চালকের ভূমিকায় রয়েছে নীতি আয়োগ। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুতায়নের নীতি-নির্দেশিকা তৈরি করছে নীতি আয়োগ। খসড়া জাতীয় শক্তি নীতি প্রস্তুত করেছে এই সংস্থা। এছাড়াও, শক্তিক্ষেত্রে রাজ্যগুলির খসড়া তালিকাও চূড়ান্ত করা হচ্ছে।

 

বিনিয়োগ ক্ষেত্র ও কর্মসংস্থানের জন্য কর্মী গোষ্ঠী গঠন করা হয়েছে। নীতি আয়োগের ভাইস-চেয়ারম্যান এই কর্মী গোষ্ঠীর নেতৃত্বে রয়েছেন। গ্রামীণ এলাকায় স্বচ্ছ পানীয় জলের জন্য এবং জলসম্পদের উন্নয়নের জন্য ১৯টি আর্সেনিক ও ফ্লোরাইড আক্রান্ত রাজ্যের জন্য এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

 

‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৬৪ হাজার গ্রাম, ৩৮৫টি জেলা, ১৩টি রাজ্য ও চারটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিজেদের খোলা জায়গায় শৌচমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছে। গ্রামীণ এলাকায় শৌচাগার নির্মাণের পরিমাণ ৩৯ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৪ শতাংশ। গত চার বছরে গ্রামীণ এলাকার বাড়িগুলিতে শৌচাগার নির্মাণের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চলের প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়িতেই বর্তমানে শৌচাগার রয়েছে। শহর এলাকায় ১০০ শতাংশ বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে পুনর্গঠনের জন্য কিছু স্বল্পকালীন পদক্ষেপের সুপারিশ করেছে নীতি আয়োগ। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বায়ত্তশাসন, মঞ্জুরি কাঠামোর পুনর্গঠন সহ নানান বিষয় রয়েছে।

 

ভারতের সোনা বাজারের পুনরুজ্জীবনের জন্য বেশ কিছু সুপারিশ করেছে নীতি আয়োগ। এটি চূড়ান্ত করে অর্থ মন্ত্রকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

 

বিভিন্ন মন্ত্রক ও বিভাগের কাজগুলির অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে একটি ওয়েব-ভিত্তিক ড্যাশবোর্ড চালু করা হয়েছে। মন্ত্রকগুলি তাদের কাজের বিস্তারিত তথ্য এই ড্যাশবোর্ডে আপলোড করে রাখছে। রাজ্য ও জেলাস্তরের বিভিন্ন তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে এই ড্যাশবোর্ডে।

 

সরকার, বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে কাজের অগ্রগতির ওপর নজরদারির জন্য ড্যাশবোর্ড ব্যবস্থা চালু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সড়ক, রেল, বিমান, বন্দর, ডিজিটাল ভারত, কয়লা, বিদ্যুৎ, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, নগর ও গ্রাম এলাকার আবাস যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার (পিএমজিএসওয়াই) ওপর সরাসরি নজর রাখা হচ্ছে।

 

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় গৃহ নির্মাণের জন্য যে প্রকল্পগুলি মঞ্জুর করা হয়েছে, সেসব কাজের ওপরও এই ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে নজর রাখা হচ্ছে। দ্রুত পর্যালোচনার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ‘ই-ন্যাম’।

 

ধারাবাহিক উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নজরদারি ব্যবস্থা কার্যকর করেছে নীতি আয়োগ। এই লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে একটি কর্মী গোষ্ঠী। নীতি আয়োগের সিইও শ্রী অমিতাভ কান্ত এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব শ্রী অ্যান্তনিও গুতেরেস ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ২০১৮-২২ সালে ভারতের সুস্থিত উন্নয়নের খসড়া কর্মপ্রণালী স্বাক্ষর করেন। ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নীতি আয়োগ ৫৮৪টি বেসরকারি অর্থ সাহায্যের প্রকল্পে কাজ করেছে। ২৭৭টি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে এবং ২২৯টি কেন্দ্রীয় প্রকল্পেও কাজ করেছে।

 

নীতি আয়োগ, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প রূপায়ণের মাসিক অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে একটি ড্যাশবোর্ড চালু করেছে। বর্তমানে ৪২টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ওপর এই ব্যবস্থায় নজরদারি চালানো হচ্ছে।

 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে যোগাযোগ ও অংশীদারিত্ব স্থাপনের জন্য ‘হাব’ গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় ৩৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নীতি আয়োগের সঙ্গে সমঝোতাপত্রে স্বাক্ষর করেছে। তরুণ সিইও এবং তরুণ উদ্যোগপতিদের মধ্যে নীতি নির্ণায়ক বিষয় নিয়ে দুটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা সরাসরি এই আলোচনাসভায় অংশ নেন। তাঁরা ২০২২ সালের মধ্যে নতুন ভারত গঠন, ডিজিটাল ভারত, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, মেক ইন ইন্ডিয়া, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ, বিশ্বমানের পরিকাঠামো সহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।

 

সিঙ্গাপুর সরকারের সঙ্গে সহযোগিতায় নীতি আয়োগ ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ওয়ার্কশপ’ আয়োজন করে। এতে সাতটি রাজ্যের ২০০-রও বেশি আধিকারিক দিল্লি ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন কর্মশালায় যোগ দেন। শহর এলাকায় জল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বিতীয় কর্মশালাটি হয় ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে।

 

‘অটল উদ্ভাবন মিশন’ ভারত সরকারের একটি উদ্যোগ। নীতি আয়োগের সহযোগিতা এটি চালানো হয়। বিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে মানোন্নয়নের জন্য প্রথম পর্যায়ে এই কর্মসূচি চালানো হয়।

 

হাইস্কুলগুলিতে ‘অটল টিঙ্কারিং ল্যাব্‌স’ চালু করা হয়। ৩ লক্ষেরও বেশি স্কুল পড়ুয়া এতে অংশ নেয়। এই কর্মসূচিতে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে পড়ুয়ারা রোবোট, থ্রি-ডি প্রিন্টারের মতো বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করতে পারে।

 

‘অটল নিউ ইন্ডিয়া চ্যালেঞ্জ’ নামে একটি নতুন কর্মসূচিও চালু করা হয়েছে। পাঁচটি মন্ত্রকের সঙ্গে সহযোগিতায় আবাস, পরিবহণ, কৃষি, জল ও বর্জ্য জল নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিষয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে।

 

‘মহিলারা প্রথমে : উন্নয়ন সকলের জন্য’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক স্তরের উদ্যোগপতিদের সম্মেলন আয়োজন করে নীতি আয়োগ। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে হায়দরাবাদে এই সম্মেলনের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। মার্কিন রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা শ্রীমতী ইভাঙ্কা ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন এক উচ্চ-পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেন। তিনদিনের এই সম্মেলনে ১৫০-টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধিরা যোগ দেন।

 

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নীতি আয়োগ মহিলা উদ্যোগপতিদের জন্য একটি মঞ্চ চালু করে। এটি মহিলাদের উদ্ভাবনমূলক উদ্যোগ নিতে ও ব্যবসার জন্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশল স্থির করতে সহায়ক হবে। এই উপলক্ষে তথ্য প্রদানের জন্য একটি পোর্টালও চালু করা হয়।

 

২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে নীতি আয়োগ কৃষিক্ষেত্রে পুনর্গঠন সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। মডেল কৃষি জমি লিজ আইন, ২০১৬ তৈরি করা হয়েছে। এতে কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগ, প্রযুক্তির ব্যবহার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি হবে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

 

কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিক্রির জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে নীতি আয়োগ। প্রথম ‘এগ্রিকালচার মার্কেটিং অ্যান্ড ফার্মার ফ্রেন্ডলি রিফর্ম ইনডেক্স’ চালু করা হয়। বেসরকারি জমিতে বনায়ন ও জমি লিজের জন্য নীতি আয়োগ নানান ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এই ইনডেক্স চালুর মূল লক্ষ্য হল রাজ্যগুলির মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি করা।

 

প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনার জন্য একটি দিশা-নির্দেশ প্রস্তুত করেছে নীতি আয়োগ। ২০২২ সালের মধ্যে ভারত যাতে ইউরিয়া উৎপাদনে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারে, সেজন্য গোরক্ষপুর, সিন্ধ্রি, বারাউনি ও রামগুন্ডামে নতুন কারখানা স্থাপনের জন্য নীতি আয়োগ কয়েকটি কমিটি গঠন করেছে। সার ক্ষেত্রের উপভোক্তাদের সরাসরি নগদ হস্তান্তর সুবিধাও কয়েকটি রাজ্যে কার্যকর করা হয়েছে।

 

২০১৮-১৯-এর বাজেটে নীতি আয়োগ বিভিন্ন কৃষি পণ্যসামগ্রীর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য কার্যকর করার জন্য একটি বিকল্প ব্যবস্থা চালু করেছে। বাজার নিশ্চিতকরণ প্রকল্প, মূল্য হ্রাস, পেমেন্ট প্রকল্প এবং উৎপাদিত পণ্যের বেসরকারি সংগ্রহ সহ কয়েকটি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য গঠন করা হয়েছে টাস্ক ফোর্স। দশটি পাইলট প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে।

 

ডিজিটাল ভারত গড়ার লক্ষ্যে বিমুদ্রাকরণের পর ডিজিটাল মাধ্যমে নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে নীতি আয়োগ মূল চালকের ভূমিকা নেয়। এই ব্যবস্থায় লেনদেন সহজ করতে আয়োজন করা হয় বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরের। ১০০টি শহরে ১০০ দিনের মধ্যে ১০০টি ‘ডিজি ধন’ মেলা আয়োজিত হয়। ৫ কোটি জন ধন অ্যাকাউন্টকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের আওতায় আনা হয়েছে। ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করতে চালু করা হয় ‘লাকি গ্রাহক যোজনা’ এবং ‘ডিজি ধন ব্যাপার যোজনা’।

 

সুশাসনের লক্ষ্যে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার গ্রহণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে নীতি আয়োগ। এই লক্ষ্যে ভারতীয় অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সুশাসন ব্যবস্থার মূল্যায়নের জন্য চালু করা হয়েছে ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’-এর জাতীয় কর্মসূচি। এই লক্ষ্যে নীতি আয়োগ বিভিন্ন মন্ত্রক, শিল্প প্রতিষ্ঠান, গবেষক সহ নানা ক্ষেত্রের জনগণের সঙ্গে আলোচনা করছে। আইবিএম ও ইসরোর সঙ্গে সহযোগিতায় চালু করা হচ্ছে একটি পাইলট প্রোজেক্ট।

 

নীতি আয়োগ, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করার জন্য একটি দিশা-নির্দেশ তৈরি করেছে এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে তা জমা দিয়েছে। যে মূল বিষয়গুলিতে জোর দেওয়া হয়েছে সেগুলি হল – কাঁচা মালের যোগান, ন্যানো টেকনলজি এবং ভারতীয় প্রযুক্তির ব্যবহার।

 

চতুর্থ ভারত-চিন কৌশলগত অর্থনৈতিক আলোচনা নীতি আয়োগের সহযোগিতায় এবং চিনের জাতীয় উন্নয়ন ও পুনর্গঠন কমিশনের সহযোগিতায় ২০১৬ সালের ৬ ও ৭ অক্টোবর ভারতে আয়োজিত হয়। ভারতীয় শক্তি মন্ত্রকের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বৈঠক হয় ২০১৬ সালের ২৪ থেকে ২৭ অক্টোবর, নতুন দিল্লিতে। ভারত ও চিনের মধ্যে চতুর্থ নীতি-ডিআরসি আলোচনা ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে মুম্বাইয়ে হয়।

 

SSS/PM/DM

(Release ID: 1555689)
Read this release in: English