প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

তেসরা অক্টোবর, ২০১৮ ইউএনইপি ‘চ্যাম্পিয়নস্‌ অফ দ্য আর্থ’ পুরস্কার সমারোহে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 05 OCT 2018 5:06PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৩ অক্টোবর, ২০১

রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব, মাননীয়, অ্যান্টনিও গ্যুটেরেস, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহযোগী মাননীয়া সুষমা স্বরাজ, ডঃ হর্ষবর্ধন, ডঃ মহেশ শর্মা, ইউনাইটেড ন্যাশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর এরিক সলহ্যাম এবং দেশ-বিদেশ থেকে আগত অতিথিবৃন্দ, ভদ্র মহিলা ও ভদ্র মহোদয়গণ।

 

এই সম্মানের জন্য আমি রাষ্ট্রসংঘের কাছে অন্তর থেকে কৃতজ্ঞ। আমাদের জন্য এটা বিশেষ গর্বের কথা যে, এই অনুষ্ঠানের আয়োজন ভারতের মাটিতে হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনরোধে ভারতের অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকাকে রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব শ্রী অ্যান্টনিও গ্যুটারেস এবং ইউএনইপি-র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শ্রী এরিক সলহ্যামের স্বীকৃতি এবং প্রশংসা করতে দেখার বিষয়টি প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছে অত্যন্ত গর্বের ব্যাপার। ‘চ্যাম্পিয়নস্‌ অফ দ্য আর্থ’ পুরস্কার ভারতের সেই চিরপুরাতন পরম্পরার সম্মান, যেখানে প্রকৃতিকে পরমাত্মা রূপে দেখা হয়েছে, যেখানে সৃষ্টির মূলে পঞ্চতত্ত্ব : পৃথিবী, বায়ু, জল, অগ্নি ও আকাশ – এর অধিষ্ঠানকে আহ্বান করা হয়েছে। এই পুরস্কার ভারতের অরণ্যে বসবাসকারী আদিবাসী ভাই-বোনেদের সম্মান, যাঁরা অরণ্যকে ভালোবাসেন, এই পুরস্কার ভারতের সেই মৎস্যজীবীদের সম্মান, যাঁরা সমুদ্র ও নদী থেকে ততটাই মৎস্য শিকার করেন, যতটা তাঁদের অর্থ উপার্জনের জন্য প্রয়োজন। অনেকেই হয়তো স্কুল-কলেজে যাননি। কিন্তু মাছেদের প্রজনন ঋতুতে তাঁরা নদী ও সমুদ্রে মাছ ধরতে যান না। এই পুরস্কার ভারতের কোটি কোটি কৃষকের সম্মান, যাঁদের জন্য প্রকৃতির ঋতুচক্র তাঁদের জীবনচক্র হয়ে থাকে। যাঁরা এই মাটিকে নিজের প্রাণের চেয়েও ভালোবাসেন, এই পুরস্কার ভারতের মহান নারীদের সম্মান, যাঁরা পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্যদের দৈনন্দিন জীবনে পুনর্ব্যবহারের শিক্ষা দেন। যাঁরা বৃক্ষের মধ্যে পরমাত্মার রূপ দেখেন, তুলসীপাতা ছিঁড়লেও গুণে গুণে ছেঁড়েন। যারা পিঁপড়েকেও অন্নদান করাকে পুণ্য বলে মনে করেন। এই দেশে প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার জন্য সমর্পিত প্রাণ মানুষদের সম্মান করা হয়, যাঁরা কোনও রকম ব্যক্তিগত লাভ, লোকসান, সুখ-সমৃদ্ধির চিন্তা না করে বছরের পর বছর ধরে কোনও প্রান্তিক গ্রাম, বস্তি, পাহাড় ও আদিবাসী এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন, আমি এই সম্মানের জন্য আপনাদের সকলকে হৃদয় থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

 

ভারতের জন্য এটি দ্বিগুণ সম্মানের সময়। কারণ, কোচি বিমানবন্দরও এই পুরস্কার পেল। এই পুরস্কার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন স্থায়ী শক্তি উৎপাদনে আমাদের দায়বদ্ধতার প্রতীক। এই উপলক্ষে আমি সমস্ত সঙ্গীদের ও সংস্থাগুলিকে ধন্যবাদ জানাই, যাঁরা বিশ্বের নানা দেশে ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীতে এই পুরস্কার পেয়েছেন। বন্ধুগণ, এই পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে ভারতীয় দর্শনের কথা বারংবার উল্লেখ করার কারণ হ’ল, পরিবেশ ও বিপর্যয়ের সঙ্গে সংস্কৃতির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। পরিবেশ বিষয়ক চিন্তা যতক্ষণ পর্যন্ত কারও সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে না উঠবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। পরিবেশের প্রতি ভারতের সংবেদনশীলতাকে আজ বিশ্ব স্বীকার করে নিয়েছে। কিন্তু আমি আগেই বলেছি এবং একটু আগে সুষমা স্বরাজও এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন যে, হাজার হাজার বছর ধরে পরিবেশ-নির্ভর জীবনশৈলী আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ। আমরা সেই সমাজের অংশ, যেখানে সকালে উঠেই সবার আগে পৃথিবী মায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়। কারণ, আমরা তাঁর গায়ে পা রাখতে চলেছি। মন্ত্রচ্চারণ করা হয় –

 

সমুদ্র বসনে দেবী পর্বত স্তন মণ্ডিতে।

বিষ্ণু পত্নী নমুস্তুভ্যং পাদ স্পর্শং ক্ষমশ্বমেব।।

 

অর্থাৎ, সমুদ্ররূপী বস্ত্র ধারণকারিনী, পর্বতরূপী দেহধারী ভগবান বিষ্ণুর পত্নী, হে ভূমিদেবী আমি আপনাকে প্রণাম জানাই। আমাকে ক্ষমা করবেন। কারণ, আমি আপনাকে পা দিয়ে স্পর্শ করছি – এই সংবেদনা আমাদের জীবনের অংশ। বৃক্ষ-গুল্মের পুজো প্রত্যেক ঋতুকে ব্রত ও উৎসবের মাধ্যমে পালন করা। ঘুম পাড়ানি গান থেকে শুরু করে, লোকগাথাগুলিতে প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক বর্ণনের মাধ্যমে আমাদের পূর্বজরা প্রকৃতিকে সর্বদাই জীবন্ত বলে মনে করতেন। প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কের পাশাপাশি সম্পূর্ণ ব্রহ্মান্ডের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক স্থাপন করেছেন আমাদের পূর্বজরা। সেজন্য যর্জুর্বেদে বলা হয়েছে –

 

ওম দ্যৌঃ শান্তিরত্নরিক্ষঁ শান্তিঃ,

পৃথিবী শান্তিরাপঃ শান্তিরোষোধয়ঃ শান্তিঃ।

বনস্পতয়ঃ শান্তির্বিশ্বে দেবাঃ শান্তির্ব্রহ্ম শান্তিঃ,

সর্বেঁ শান্তিঃ, শান্তিরেব শান্তিঃ, সা মা শান্তিরেধি।।

ওম শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।।

 

বন্ধুগণ, এই সংস্কৃত শ্লোকে পরমাত্মার কাছে প্রার্থনা করা হয়েছে, যাতে বাতাস, অন্তরীক্ষ, পৃথিবী, জল, ঔষধি, বনস্পতি, বিশ্ব এবং সমস্ত দেবতাগণের মধ্যে শান্তি বিরাজমান থাকে। সমগ্র বিশ্বে শান্তি স্থাপনের জন্য এই মন্ত্র আহ্বান না করে আমাদের কোনও যজ্ঞ অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হয় না। আর স্বয়ং ঈশ্বরও নিজের পরিচয় দেওয়ার সময় নিজের বিস্তার সম্পর্কে বলেন –

 

স্রোতস্য অসমী জাহ্নবী,

সংসার অসমী সাগর

 

অর্থাৎ, আমিই জলাশয়, আমিই নদী এবং আমিই সমুদ্র। সেজন্য আপনারা যে সম্মান দিয়েছেন, তা ভারতের জনগণ এবং তাঁদের মনে বিরাজমান এই আস্থাকে সম্মানিত করেছেন।

 

বন্ধুগণ, ভারতের অর্থনীতি আজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রতি বছর কোটি কোটি মানুষ অত্যন্ত দারিদ্র্যের অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসছেন। উন্নয়নের এই গতিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে আমরা উৎসর্গীকৃত। কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতা নয়, কিংবা আমাদের কোনও সম্পন্নতার লোভ নেই। কিন্তু সেজন্য আমরা নিজেদের জনসংখ্যার একটি বৃহত্তর অংশকে অসীম দারিদ্র্যের যন্ত্রণা সহ্য করার জন্য ছেড়ে রাখতে পারি না। তাঁদেরকে গরিমাপূর্ণ জীবন উপহার দেওয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব। বিশ্বের অনেক দেশে প্রকৃতিকে যথেচ্চ দহনের কুফলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গরিবরাই এগিয়ে এসেছেন। খরা ও বন্যার পরিস্থিতি সমগ্র বিশ্বেই প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সবচেয়ে বেশি এর ফল ভুগছে গরিবরাই। প্রকৃতির ওপর চাপ সৃষ্টি না করে, কিভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া যায়, সেই পথ খোঁজার প্রয়োজন আজ সভ্যতার পক্ষে সবচেয়ে জরুরি। সেজন্য প্যারিসে আমি এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ববাসীর সামনে আবেদন রেখেছিলাম যে, পরিবেশের সুবিচার চাই। পরিবেশ পরিবর্তনের সমস্যার সমাধান পরিবেশের সুবিচার সুনিশ্চিত করা ছাড়া সম্ভব নয়। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, প্যারিস চুক্তিতে এই বিষয়টি বিশ্ববাসীর স্বীকৃতি পেয়েছে আর পরিবেশের প্রতি সুবিচার নিয়ে দায়বদ্ধতা দেখিয়েছে। কিন্তু এই বিষয়টিকে বাস্তবে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে আমাদের এখনও অনেক কিছু করার বাকি। আর যা করার সেটা দ্রুতগতিতে করতে হবে।

 

এখানে উপস্থিত উপস্থিত মহামান্য অ্যান্টনিও গ্যুটেরেসের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ যে তিনি এই সমইয়ের চাহিদাকে বুঝেছেন, তিনি কিয়োটো প্রোটোকলের দ্বিতীয় দায়বদ্ধতা কালের অনুমোদন প্রক্রিয়া এবং সুদূরপ্রসারী দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্য নিশ্চিতকরণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। আর সেজন্য আমরা ভারতে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে চলেছি। যখন আমি সকলের উন্নয়নের কথা বলি, এতে প্রকৃতিও সামিল থাকে আর এতে ‘সবকা সাথ’ অর্থাৎ ১২৫ কোটি ভারতবাসীকে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান রয়েছে।

 

বন্ধুগণ, আমাদের অর্থ ব্যবস্থার জন্য গ্রামগুলি এবং শহরগুলি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। আমাদের দেশে কর্মসংস্থানের এক বড় অংশ গ্রাম ও চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত; আর আমাদের শহরগুলি পরিষেবা এবং উৎপাদন অর্থাৎ একেকটি শিল্প কেন্দ্র। আর এজন্য সরকার সার্বিক সংহত দৃষ্টিকোণ নিয়ে কাজ করছে। দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য সরকারের প্রতিটি নীতির ভিত্তি শস্যশ্যামলা এবং নির্মল পরিবেশ। বন্ধুগণ, আমাদের গ্রামগুলি সর্বদাই পরিবেশ সচেতন, তাঁরা প্রকৃতির সঙ্গে যুক্ত। বিগত চার বছরে আমাদের গ্রামগুলিতে এই শাশ্বত শক্তি আরও বিস্তারলাভ করেছে। গ্রামগুলিতেও বর্জ্য থেকে সম্পদ এবং বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়ে জৈব বর্জ্যকে জ্বালানিতে রূপান্তরণের প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। জৈব চাষ থেকে শুরু করে ‘মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড’ এবং ‘প্রত্যেক বিন্দুতে অধিক শস্য’কে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। এতে আমাদের মাটি ও জলের উৎসগুলিকে বিষাক্ত রাসায়নিক থেকে মুক্ত পথে এগিয়ে যাওয়ার এবং জলের যথার্থ ব্যবহারের ভাবনা প্রবল হয়েছে। শিল্প ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য ‘জিরো ডিফেক্ট, জিরো এফেক্ট’, যখন আমরা কৃষি নিয়ে কথা বলি, তখন আমাদের লক্ষ্য হ’ল ‘প্রতি বিন্দুতে অধিক শস্য’।

 

বন্ধুগণ, আজ ভারত বিশ্বের সেই দেশগুলির অন্যতম সেখানে সবচাইতে দ্রুতগতিতে নগরায়ন হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা নিজেদের নাগরিক জীবনকে স্মার্ট এবং দীর্ঘস্থায়ী করার দিকে নজর দিচ্ছি। আজ সারা দেশে যেরকম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপযোগী পরিকাঠামোর প্রয়োজন তা দীর্ঘস্থায়ী পরিবেশ এবং সর্বব্যাপী উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে। আজ ভারতে ১ কোটি স্মার্টসিটি গড়ে তোলার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। পয়ঃপ্রণালী থেকে শুরু করে তদারকি – সমস্ত ক্ষেত্রে স্মার্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। স্থানীয় জনগণের পরামর্শ-ভিত্তিক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি এই ব্যবস্থার ভিত্তি। দেশের জাতীয় মহাসড়ক ও এক্সপ্রেসওয়েগুলিকে পরিবেশ-বান্ধব করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, ‘গ্রিন করিডর’ বিকশিত করা হচ্ছে। নতুন মহাসড়কের পাশাপাশি বিকশিত হয়ে ওঠা অন্যান্য পরিষেবার জন্য সমস্ত জ্বালানির প্রয়োজন সৌরশক্তির মাধ্যমে সম্পাদনের প্রচেষ্টা চলছে। মেট্রো পরিষেবার মতো ‘সিটি ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক’কে-ও সৌরশক্তি সমৃদ্ধ করা হচ্ছে, তেমনই রেলের জীবাশ্ম জ্বালানির নির্ভরতাও দ্রুতগতিতে হ্রাস করা হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ, আজ ভারতের প্রতিটি বাড়ি থেকে গলি পর্যন্ত, অফিসগুলি থেকে সড়কগুলি পর্যন্ত আর বন্দর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত জল ও শক্তি সংরক্ষণের অভিযান চলছে। এলইডি বাল্ব থেকে শুরু করে বৃষ্টির জলে চাষ পর্যন্ত প্রত্যেক স্তরে প্রযুক্তি উন্নয়নের প্রচেষ্টা চলছে। বাড়ির রান্নাঘর থেকে পরিবহণ ব্যবস্থা পর্যন্ত নির্মল জ্বালানি-ভিত্তিক করে তোলার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। বিগত চার বছরে ১০ কোটিরও বেশি বাড়িতে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ কোটিরও বেশি উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে প্রদত্ত বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ। বাড়িগুলির পাশাপাশি যাতায়াতের পথকেও ধোঁয়ামুক্ত করার অভিযান চলছে। বায়ু দূষণ হ্রাসের জন্য ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রামের কাজ এগিয়ে চলেছে। যানবাহনের জন্য ‘এমিশন স্ট্যান্ডার্ড’ নির্ধারণের জন্য আমরা ‘বিএস-ফোর’ থেকে সরাসরি ‘বিএস-সিক্স’ মানক প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বন্ধুগণ, আজ যখন ভারত ‘ইজ অফ লিভিং’কে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সকলের জন্য বাড়ি, বিদ্যুৎ সংযোগ, খাদ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আর তখনই পরিবেশ নিয়ে আমাদের দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা হ্রাস পেতে দিইনিআমরা আগামী দু’বছরে ‘এমিশন ইনটেনসিটি’ অর্থাৎ কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ আরও কমাতে চাই। ইতিমধ্যেই ২০০৫ সালের তুলনায় ‘এমিশন ইন্টেনসিটি’ ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ হ্রাস করতে চাই। এই সকল প্রচেষ্টার মধ্যে আমরা সবচাইতে বড় যে সাফল্য অর্জন করেছি, তা হল জনগণের চরিত্রগত ও ভাবনাগত পরিবর্তন। পরিবেশের প্রতি আমাদের আস্থার পাশাপাশি এখন আচরণেও আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছি। সেজন্য ভারত আজ সংকল্প গ্রহণ করতে পেরেছে যে, ‘২০২২ সালের মধ্যে দেশকে ‘সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক’ মুক্ত করবোই! আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, মহাত্মা গান্ধীর বিশাল ব্যক্তিত্ব থেকে প্রেরণা নিয়ে নতুন ভারত নিজেদের এই সংকল্পকে বাস্তবায়িত করবে আর বিশ্বের জন্য একটি মডেল দেশ হয়ে উঠবে। ভারতের এই প্রচেষ্টাগুলিকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য আমি আরেকবার রাষ্ট্রসঙ্ঘকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।

 

আপনারা সবাই সময় বের করে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে এসেছেন, ব্যক্তিগতভাবে এটি আমার দায়িত্ব বর্তায়, যে সংকল্পগুলি নিয়ে আমরা এগোচ্ছি, সেগুলি বাস্তবায়নে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে। আপনারা এগিয়ে এসে আমাদের উৎসাহ যুগিয়েছেন।

 

আমি সেজন্য আপনাদের হৃদয় থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

 

থ্যাঙ্ক ইউ।

 

CG/SB/SB……



(Release ID: 1548741) Visitor Counter : 395


Read this release in: English