মন্ত্রিসভারঅর্থনৈতিকবিষয়সংক্রান্তকমিটি

ভারতীয় রেলের ব্রডগেজ রুটগুলিতে ১০০% বৈদ্যুতিকীকরণের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত যেসব ব্রডগেজ রুটের বৈদ্যুতিকীকরণ হয়নি, সেগুলিকে বিদ্যুৎচালিত করা হবে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিকীকরণের পর ভারতীয় রেলের জ্বালানী বাবদ প্রতি বছর ১৩৫১০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে

Posted On: 12 SEP 2018 9:33PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

 

          প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে আজ ভারতীয় রেলের যেসব ব্রডগেজ রুটে বৈদ্যুতিকীকরণ হয়নি, সেগুলিতে বৈদ্যুতিকীকরণের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। রেলের ১০৮টি সেকশনের ১৩৬৭৫ রুট কিলোমিটার (১৬৫৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ) রেলপথে এই বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ হবে। এরজন্য ব্যয় হবে ১২১৩৪.৫০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ বর্ষের মধ্যে বৈদ্যুতিকীকরণের এই কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    ভারতীয় রেলের প্রধান প্রধান ট্রাঙ্ক রুটগুলিতে ইতিমধ্যেই বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে এবং তা চালুও হয়েছে। দেশের রেলপথগুলিতে অবাধে ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করতে টেকনিক্যাল পর্যায়ের প্রতিবন্ধকতাগুলির দুর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত এই বৈদ্যুতিকীকরণের ফলে রেলের কর্মক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, রেলপথগুলির কার্যকারিতা বাড়বে এবং ট্রেনগুলির গড় গতিও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

    রেলের বৈদ্যুতিকীকরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে সুফল, তা হচ্ছে বিদেশ থেকে আমদানি করা জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার কমবে। ফলে দেশের শক্তি নিরাপত্তা বাড়বে। বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ সম্পূর্ণ হলে প্রতি বছর ২৮৩ কোটি লিটার হাইস্পিড ডিজেল ব্যবহার কমে যাবে। ফলে সমানুপাতিক হারে গ্রীণ হাউস গ্যাস নির্গমনও কমবে, যা রেল চলাচলের জন্য পরিবেশ দূষণকেও কমাবে। বর্তমানে দেশের মোট মালপত্রের দুই তৃতীয়াংশ এবং অর্ধেকেরও বেশি যাত্রী বহনের জন্য ভারতীয় রেলের বিদ্যুতায়িত রেলপথ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রেলের মোট বিদ্যুৎ ব্যয়ের মাত্র ৩৭ শতাংশ বিদ্যুতায়িত রেলপথের জন্য ব্যয় হয়। এই সুবিধার জন্য বিদ্যুতায়নের পর শুধুমাত্র জ্বালানী ব্যয়ের ক্ষেত্রেই প্রতি বছর মোট প্রায় ১৩৫১০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে এবং এর ফলে রেলের অর্থনৈতিক অবস্হার উন্নতি হবে। বিদ্যুতায়নের কাজের জন্য নির্মাণকাজের ক্ষেত্রে প্রায় ২০.৪ কোটি কর্মদিবস সৃষ্টি হবে।

    ১০০% হারে বিদ্যুতায়নের ফলে ট্রেন চলাচল আরো বেশি অবাধ হবে, কারণ মাঝপথে ডিজেল থেকে ইলেক্ট্রিক কিংবা ইলেক্ট্রিক থেকে ডিজেল জ্বালানীতে চালিত ইঞ্জিন বদলানোর প্রয়োজন হবে না। বিদ্যুতায়নের ফলে ট্রেনগুলির গড় গতি বৃদ্ধি পাওয়ায় রেলপথের কার্যকারিতাও বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। বিদ্যুৎ  চালিত একএকটি ইঞ্জিন আরো বেশি পরিমাণে পণ্য পরিবহণ করতে পারবে। এছাড়া বিদ্যুৎ চালিত সিগন্যাল ব্যবস্হার ফলে রেল চলাচলের নিরাপত্তাও বাড়বে। যেমনটা আগেই বলা হয়েছে, বিদ্যুতায়নের ফলে প্রতি বছর ২৮৩ কোটি লিটার ডিজেলের মতো জ্বালানী সাশ্রয় হবে। ফলে প্রতি বছর জ্বালানী বাবদ রেলের ১৩৫১০ কোটি টাকা বাঁচবে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ চালিত ইঞ্জিনগুলির দেখভালের জন্য ব্যয়-ও ডিজেল চালিত ইঞ্জিনের তুলনায় প্রায় অর্ধেক হবে। ইলেকট্রিক ইঞ্জিনগুলির কাজের ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। ডিজেল ইঞ্জিনের তুলনায় ইলেকট্রিক ইঞ্জিনগুলি চলাচলের ফলে পরিবেশের ওপর কার্বন ফুটপ্রিন্ট প্রায় ৫ গুন কমে যাবে। সম্পূর্ণ বিদ্যুতায়নের ফলে, ২০২৭-২৮ বর্ষের মধ্যে রেল চলাচলজনিত কারণে কার্বণ নির্গমন প্রায় ২৪ শতাংশ হ্রাস পাবে। এছাড়া ২০১৯-২০-র মধ্যে গ্রীণ হাউস গ্যাস নির্গমের পরিমানও কমবে।

    বিদ্যুতায়নের নির্মাণ কার্যের সময় প্রায় ২০.৪ কোটি কর্মদিবস সৃষ্টি হবে। রেলের সম্পূর্ণ বিদ্যুতায়নের ফলে ভারতীয় রেলের উন্নতির ধারা আগের মতোই চলতে থাকবে। রেল চলাচলের আধুনিকীকরণের অনুঘটক হিসাবে এই সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে এবং রেলকে দেশের অর্থনীতির চালক হিসাবে গড়ে তোলার যে স্বপ্নের কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, তা সফল হয়ে উঠবে।

 

CG/PB/NS/…


(Release ID: 1545942)
Read this release in: English