স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

বন্যা দুর্গত কেরলকে কেন্দ্রীয় সহায়তা

Posted On: 24 AUG 2018 6:43PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৪ আগস্ট, ২০১৮

কেরলের সাম্প্রতিক বন্যার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনরকম বিলম্ব ছাড়াই ঐ রাজ্যে সময়মতো যাবতীয় সহায়তা ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রোজ পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছেন। এমনকি, তিনি গত ১৭ ও ১৮ আগস্ট রাজ্য পরিদর্শনেও গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মন্ত্রিসভার সচিবের সভাপতিত্বে জাতীয় সঙ্কট মোকাবিলা কমিটি রাজ্যের পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজর রেখেছে। সেইসঙ্গে, ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য পরিচালনাতেও সমন্বয়সাধন করেছে। ঐ কমিটি গত ১৬ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত দৈনিক বৈঠকে মিলিত হয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখেছে। বৈঠকগুলিতে প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলির উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ছাড়াও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং বিভিন্ন মন্ত্রকের সচিবরা অংশ নিয়েছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কেরলের মুখ্যমন্ত্রীও বৈঠকে যোগ দেন।

বৈঠকগুলির পর একাধিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বন্যা দুর্গত রাজ্যটির জন্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অনতিবিলম্বে ব্যাপক ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য শুরু হয়। এযাবৎকালে অন্যতম বৃহৎ উদ্ধার অভিযানে ৪০টি হেলিকপ্টার, ৩১টি যুদ্ধবিমান, ১৮২টি উদ্ধারকারী দল, প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলির ১৮টি চিকিৎসকদল, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৫৮টি দল, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীগুলির সাতটি কোম্পানিকে কাজে লাগানো হয়। এছাড়াও, ৫০০টি নৌকো এবং প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জাম উদ্ধারকার্যে লাগানো হয়। ব্যাপক এই উদ্ধার অভিযানে সাফল্যের সঙ্গে জলবন্দী ৬০ হাজার মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে এবং তাঁদেরকে ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা বাহিনীর যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারগুলি এক হাজার বারের বেশি উড়ান পরিষেবা দিয়েছে, প্রায় ১,২০০ ঘন্টা উড়ান চালনা হয়েছে এবং ১,২৮৬ টন ত্রাণসামগ্রী বিমানের সাহায্যে এক স্থান থেকে অন্যত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বিমান ও হেলিকপ্টারের সাহায্যে ৩,৩৩২ জন উদ্ধারকারীকে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য নৌ-বাহিনী এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীর একাধিক জলযানকে কাজে লাগানো হয়েছে। এই ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কয়েকশ’ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

বর্তমান নিয়মনীতি অনুযায়ী রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আগাম দু’কিস্তি অর্থ দেওয়া হয়েছে। যে কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে খরচ সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে মেটানো হয়। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে এবং রাজ্য তহবিলে অর্থের সংস্থানের ওপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পক্ষ থেকে বিস্তারিত স্মারকপত্র কেন্দ্রের কাছে পাঠানোর পরেই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব অর্থ দেওয়ার প্রয়াস নেওয়া হয়। রাজ্যের তরফ থেকে পাওয়া এক স্মারকপত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নির্ণয় এবং অতিরিক্ত তহবিলের চাহিদা পূরণে একটি আন্তঃমন্ত্রক কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয়ে থাকে। আন্তঃমন্ত্রক কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্ট পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির একটি উপ-গোষ্ঠী ঐ রিপোর্ট খতিয়ে দেখে জাতীয় বিপর্যয় ত্রাণ তহবিল থেকে অতিরিক্ত সহায়তার পরিমাণের বিষয়টি অনুমোদন করে।

কেরলের সাম্প্রতিক বন্যা ও ভূমিধ্বসে রাজ্যের পক্ষ গত ২১শে জুলাই একটি অন্তর্বর্তী স্মারকপত্র কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়। এর প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার তৎক্ষণাৎ একটি আন্তঃমন্ত্রক কেন্দ্রীয় দল গঠন করে। দলটি গত ৭ থেকে ১২ আগস্ট রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রী কিরেন রিজিজু গত ২১শে জুলাই কেরল সফরের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং গত ১২ই আগস্ট রাজ্য পরিদর্শনে যান। এরপর রাজ্যে দ্বিতীয়বার বন্যা দেখা দিলে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, উদ্ধারকার্য শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত তহবিলের জন্য আরও একটি স্মারকপত্র জমা দেওয়া হবে।

রাজ্যের পক্ষ থেকে ঐ স্মারকপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি যেহেতু সময়সাপেক্ষ তাই, রাজ্যকে ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য বাবদ খরচে সহায়তা করতে কেন্দ্রীয় সরকার আগাম ৬০০ কোটি টাকা দিয়েছে। এই অর্থ রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলের অর্থ ৫৬২ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার অতিরিক্ত। এই আর্থিক সহায়তা ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যের অনুরোধক্রমে বিপুল পরিমাণে খাবার, জল, ওষুধপত্র ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন সহায়তার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে এককালীন অনুদান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির পুনর্নিমাণ, মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্পের আওতায় অতিরিক্ত ৫ কোটি ৫০ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি প্রভৃতি। এছাড়াও, জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ, জাতীয় তাপবিদ্যুৎ নিগম প্রভৃতি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি বন্যা দুর্গত এই রাজ্যে জাতীয় মহাসড়কগুলির মেরামত এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা পুনর্বহাল করার কাজে যুক্ত রয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে বন্যা দুর্গত এই রাজ্যটিকে যে ৬০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে তা কেবল আগাম অনুদান হিসেবে। রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পর জাতীয় বিপর্যয় ত্রাণ তহবিল থেকে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা হবে।

 

CG/BD/DM/….



(Release ID: 1543873) Visitor Counter : 54


Read this release in: English