প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
নগরোন্নয়ন কর্মসূচির তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে ‘নগরাঞ্চলের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
Posted On:
30 JUL 2018 4:12PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৮ জুলাই, ২০১৮
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার (২৮ জুলাই, ২০১৮) উত্তরপ্রদেশের লক্ষ্ণৌ-তে ‘শহরাঞ্চলের পরিবর্তন’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (শহরাঞ্চল)’, ‘অম্রুত’ এবং ‘স্মার্ট নগরী কর্মসূচি’র মতো নগরোন্নয়ন সম্পর্কিত প্রধান প্রধান সরকারি উদ্যোগগুলির তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল এই বিশেষ অনুষ্ঠানটির।
নগরোন্নয়ন সম্পর্কিত প্রধান প্রধান কর্মসূচিগুলির ওপর আয়োজিত একটি প্রদর্শনীও পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের একজন করে সুফল গ্রহীতার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সংশ্লিষ্ট ৩৫ জন সুফল গ্রহীতাদের প্রত্যেকেই ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (শহরাঞ্চল)’-র আওতায় উপকৃত হয়েছেন। ভিডিও সংযোগ ব্যবস্থায় উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন শহর থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুফল গ্রহীতাদের কাছ থেকে ফিডব্যাকও সংগ্রহ করেন তিনি।
প্রধান প্রধান সরকারি কর্মসূচি রূপায়ণের লক্ষ্যে উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন প্রকল্পের এদিন শিলান্যাসও করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী।
এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে উপস্থিত নগর প্রশাসকরা বিভিন্ন শহরেরই প্রতিনিধিবিশেষ। এই শহরগুলি এক নতুন ভারত তথা এক নতুন প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।
শ্রী মোদী বলেন যে ‘স্মার্ট সিটি কর্মসূচি’র আওতায় ইতিমধ্যেই ৭ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। অন্যদিকে, ৫২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে অন্যান্য প্রকল্পের কাজ বর্তমানে রয়েছে রূপায়ণের বিভিন্ন পর্যায়ে। ‘স্মার্ট নগরী কর্মসূচি’র মূল লক্ষ্যই হল নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের কাছে শহরাঞ্চলের উন্নততর সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। সাধারণ মানুষের জীবনকে সহজতর করে তোলার জন্যই এই বিশেষ উদ্যোগ। সুসংবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রগুলিকে এই কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের ১১টি শহরে এই কেন্দ্রগুলি ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি শহরেও এই কাজ চলছে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর কর্মপ্রচেষ্টার কথা স্মরণ করে শ্রী মোদী বলেন, নগর ভারতের প্রেক্ষাপটে রূপান্তরের উদ্যোগ লক্ষ্ণৌ শহরটির সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। কারণ, শ্রী বাজপেয়ী ছিলেন এখানকারই এক নির্বাচিত সাংসদ।
শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর উদ্যোগে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির সপ্রশংস উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সমস্ত উদ্যোগ ও কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে অক্ষুণ্ণ রেখে জীবনধারণের মানকে আরও গতিশীল ও উন্নত করে তুলতে সচেষ্ট রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ‘সকলের জন্য বাসস্থান’ নিশ্চিত করতে আগ্রহী তাঁর সরকার। এই লক্ষ্যে কিভাবে বেশ কিছু কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে পরিসংখ্যান পেশ করে তা ব্যাখ্যা করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, যে বাড়িগুলি এই কর্মসূচির আওতায় নির্মিত হচ্ছে তার প্রত্যেকটিতে রয়েছে শৌচাগার ও বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা। শুধু তাই নয়, এই বাড়িগুলি নারী ক্ষমতায়নেরই এক প্রতীকবিশেষ। কারণ, এই ধরণের বাড়িগুলি সবই পরিবারের মহিলা সদস্যের নামে।
এক সাম্প্রতিক সমালোচনার প্রত্যুত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দরিদ্র এবং অবহেলিত মানুষদেরই পাশে রয়েছেন। তিনি রয়েছেন দেশের কৃষক ও জওয়ানদের সঙ্গেই। তাঁদের সকলের সুখ-দুঃখের শরিক হিসেবে দুঃখ-কষ্ট দূর করতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
শ্রী মোদী বলেন, এক সময় ভারতে সুপরিকল্পিত নগর জীবনের অস্তিত্ব ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সুস্পষ্ট চিন্তাভাবনার অভাব স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে দেশের শহরগুলির প্রভূত ক্ষতিসাধন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত বর্তমানে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে এবং দেশের শহরগুলি হল তার চালিকাশক্তি। সেই কারণে নগরায়নের ক্ষেত্রে যত্রতত্র এবং যেভাবে ইচ্ছা তৎপরতা চালানো যায় না। এক নতুন ভারতের উপযোগী করে দেশের শহরগুলিকে গড়ে তুলবে ‘স্মার্ট নগরী কর্মসূচি’ এবং তা একুশ শতকের বিশ্বমানের উপযোগী করেই গড়ে তোলা হবে।
শহরাঞ্চলের জীবনযাত্রার সুযোগ-সুবিধা তথা স্বাচ্ছ্বন্দ্যকে পাঁচটি ‘ই’-এর সাহায্যে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। এগুলি হল – ‘ইজ অফ লিভিং’, অর্থাৎ সহজতর জীবনযাত্রা; ‘এডুকেশন’, অর্থাৎ শিক্ষা; ‘এমপ্লয়মেন্ট’, অর্থাৎ কর্মসংস্থান; ‘ইকনমি’, অর্থাৎ অর্থনীতি এবং ‘এন্টারটেনমেন্ট’, অর্থাৎ বিনোদন।
শ্রী মোদী বলেন, নাগরিকদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, দায়িত্বশীলতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপরই প্রতিষ্ঠিত ‘স্মার্ট নগরী কর্মসূচি’টি। মিউনিসিপ্যাল বন্ড-এর মাধ্যমে পুণে, হায়দরাবাদ এবং ইন্দোরে বেশ কিছু অর্থ সংগৃহীত হয়েছে। লক্ষ্ণৌ এবং গাজিয়াবাদেও এইভাবে অর্থ সংগ্রহের কাজ শুরু হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৌর তথা নাগরিক পরিষেবার সুযোগ অনলাইন ব্যবস্থায় চালু হওয়ার ফলে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষার দিন এখন শেষ। আগের ব্যবস্থায় দুর্নীতির যথেষ্ট সুযোগ ছিল। এক নিশ্চিত, নিরন্তর ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা দেশের কোটি কোটি মানুষের জীবনে স্মার্ট পরিবর্তনের সূচনা করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
CG/SKD/DM/…
(Release ID: 1540645)