প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিক্‌স শিখর সম্মেলনের আউটরিচ ডায়ালগ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি

Posted On: 30 JUL 2018 11:26AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৭ জুলাই ২০১

মাননীয় রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসা,

ব্রিক্‌স শিখর সম্মেলনে আগত আমার সহকর্মীবৃন্দ,

সারা পৃথিবীতে থেকে আসা এখানে উপস্থিত আমার সমস্ত সম্মানিত বন্ধুগণ,

 

সবার আগে আমি রাষ্ট্রপতি রামাফোসা-কে ব্রিক্‌স সম্মেলনে আউটরিচ প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার জন্য ধন্যবাদ জানাই। ব্রিক্‌স ও অন্যান্য অগ্রণী অর্থ ব্যবস্থার মধ্যে এই বার্তালাপ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা আদান-প্রদানের একটি সুন্দর সুযোগ এনে দিয়েছে। এখানে বিপুল সংখ্যায় আফ্রিকার দেশগুলির উপস্থিতি অত্যন্ত স্বাভাবিক ও খুশির বিষয়। আফ্রিকার সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক এবং গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আফ্রিকার স্বাধীনতা, উন্নয়ন ও শান্তির জন্য ভারতের ঐতিহাসিক প্রচেষ্টাগুলির বিস্তারে আমাদের সরকার সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছে। বিগত চার বছরে রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকারি স্তরে শতাধিক পারস্পরিক সফর এবং দেখা-সাক্ষাতের মাধ্যমে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং উন্নয়নে সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আজ ৪০টিরও বেশি আফ্রিকান দেশে ১১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ৮০টি লাইন্স অফ ক্রেডিট জারি রয়েছে। প্রতি বছর ৮ হাজার আফ্রিকান ছাত্রছাত্রী ভারতে ছাত্রবৃত্তি নিয়ে পড়াশুনা করতে যায়। আফ্রিকার ৪৮টি দেশে টেলি মেডিসিনের ই-নেটওয়ার্ক এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে ৫৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে আফ্রিকায় প্রয়োজন-ভিত্তিক ক্যাপাসিটি বিল্ডিং-এর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরশু উগান্ডার সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আমি ভারত ও আফ্রিকার পারস্পরিক সহযোগিতার ১০টি সিদ্ধান্ত বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছিলাম। এই ১০টি সিদ্ধান্ত আফ্রিকার প্রয়োজন অনুসারে উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা, শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং আমাদের জনগণের মধ্যে কয়েক শতাব্দী প্রাচীন সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে দিকনির্দেশ করে। আফ্রিকা মহাদেশকে মুক্ত বাণিজ্য ক্ষেত্র করার গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমি আফ্রিকার সকল দেশকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আফ্রিকায় আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সংহতির জন্য আপনারা যেসব প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন – সেগুলিকেও আমি স্বাগত জানাই।

 

মাননীয় বন্ধুগণ,

 

মুক্ত বাণিজ্য ও লেনদেন বিগত তিন দশকে কয়েকশো মিলিয়ন মানুষকে দারিদ্র্য সীমার নীচ থেকে ওপরে তুলেছে। এটি বিশ্বায়ন এবং উন্নয়নের লাভগুলিকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ার অংশ। আর দক্ষিণ গোলার্ধ সর্বদাই এই প্রচেষ্টায় অংশীদার ছিল। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সঙ্কটের পর থেকে বিশ্বায়নের মৌলিক বিষয়গুলি নিয়ে সংরক্ষণবাদের কালো মেঘ ঘনিয়ে এসেছে। এই প্রবৃত্তি এবং উন্নয়ন দরে মন্দার সবচেয়ে গভীর প্রভাব আমাদের মতো সেই দেশগুলিতে পড়েছে, যারা ঔপনিবেশিক কালে শিল্প বিপ্লবের প্রগতির সুযোগগুলির সুবিধা নিতে হবে। আজ আমরা আরেকবার ঐতিহাসিক মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি। ডিজিটাল বিপ্লবের ফলে আমাদের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। আর সেজন্য এটা জরুরি যে আমরা অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং বিগ ডেটা অ্যানালাইটিক্স-এর মাধ্যমে সম্ভাব্য পরিবর্তনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এজন্য ডিজিটাল পরিকাঠামো এবং দক্ষ মানবসম্পদের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি, ইনক্লুসিভ গ্লোবাল ভ্যালু চেঞ্জ, কর্মচারী স্থানান্তকরণ, স্থানান্তরণযোগ্য সামাজিক সুরক্ষা প্রণালী এবং দক্ষ রেবিটেন্স করিডরও আমাদের অগ্রাধিকার।

 

মাননীয় বন্ধুগণ,

 

ভারত সহযোগী দেশগুলির উন্নয়নে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করছে। দক্ষিণ – দক্ষিণ সহযোগিতার অন্তর্গত নিজেদের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে অন্যান্য বিকাশশীল দেশে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ এবং ক্যাপাসিটি বিল্ডিং-এর মাধ্যমে সম্ভাব্য সব ধরণের সহযোগিতা আমাদের বিদেশ নীতির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। পাশাপাশি, সহযোগী দেশগুলির প্রয়োজনীয়তা এবং অগ্রাধিকার অনুসারে পরিকাঠামো, শক্তিক্ষেত্র, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য প্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রগুলিতে নিজে উন্নয়নশীল দেশ হয়েও ভারত অন্য দেশকে যথাসাধ্য আর্থিক সাহায্য দেয়। ভারতের নিজস্ব উন্নয়ন যাত্রায় দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা একটি প্রধান ভিত্তি। নিজেদের উন্নয়নের অভিজ্ঞতাকে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে ভারত অগ্রাধিকার দেয় এবং ভবিষ্যতেও দেবে।

 

আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

CG/SB/SB…



(Release ID: 1540561) Visitor Counter : 56


Read this release in: English