অর্থমন্ত্রক

প্রথম জিএসটি দিবস উদযাপন

Posted On: 04 JUL 2018 11:33AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৩ জুলাই ২০১

অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি)-র প্রথম বর্ষপূর্তি গতকাল রবিবার (১ জুলাই) নতুন দিল্লিতে উদযাপিত হয়েছে। সংসদের কেন্দ্রীয় কক্ষে গত বছরের ৩০ জুন মধ্যরাত্রে এক রাজকীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জিএসটি-র সূচনা হয়। সারা দেশে জিএসটি রূপায়ণের দিক থেকে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ এবং এই চ্যালেঞ্জগুলির যথাযথ মোকাবিলায় নীতি প্রণেতা ও প্রশাসকদের দক্ষতার প্রেক্ষিতে প্রথম বছরটি স্মরণীয় হয়ে উঠেছে।

কিন্তু এরচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হ’ল – ভারতীয় কর-ব্যবস্থার অভাবনীয় সংস্কারে করদাতাদের সম্মতি ও প্রস্তুতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রইল জিএসটি-র প্রথম বছরটিএই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখেই ১ জুলাই অর্থাৎ রবিবার-কে জিএসটি দিবস হিসাবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত হয়।

জিএসটি কার্যকর হওয়ার আগে ভারতীয় কর ব্যবস্থায় কেন্দ্র, রাজ্য ও স্থানীয় শুল্ক আরোপের রীতি চালু ছিল। তবে, জিএসটি-র জনয সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়ায় এমন অনেক জটিল বিষয় ছিল, যেগুলিতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে সমাধান ও সহমতে পৌঁছানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। ভারতের মতো বৃহৎ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশে জিএসটি-র মতো ব্যাপক কর সংস্কার ও তার রূপায়ণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজ্যের স্বার্থের পাশাপাশি কেন্দ্রের দিকটিও পর্যালোচনার প্রয়োজন হয়। প্রক্রিয়ার শেষে সংবিধান (১২২তম সংশোধন) বিল, ২০১৪ সংসদ ২০১৪-র ১৯ ডিসেম্বর পেশ করা হয়। শেষ পর্যন্ত এই বিলটি ১০১তম সংবিধান সংশোধন স্বরূপ আইনে পরিণত হয় ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ থেকে।

এরপর, সংবিধানের ২৭৯ (ক) ধারানুযায়ী পণ্য ও পরিষেবা কর পর্ষদ গঠিত হয়। ২০১৬-র ১২ সেপ্টেম্বর এই পর্ষদ গঠনের কথা ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গঠিত এই পর্ষদের সদস্যরা হলেন – কেন্দ্রীয় রাজস্ব প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা। এখনও পর্যন্ত পর্ষদের ২৭টি বৈঠক হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে এমন কোনও পরিস্থিতি দেখা দেয়নি, যার জন্য ভোটাভুটির প্রয়োজন হয়। সর্বসম্মতিতে সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার এ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যেখানে জিএসটি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গোড়ায় জম্মু ও কাশ্মীর বাদে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর বলবৎ হয়। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি তাদের নিজস্ব পণ্য ও পরিষেবা কর চালু করেছে। ভারতের সম্পূর্ণ আর্থিক অখন্ডতা ২০১৭-র ৮ জুলাই পূর্ণ হয়, যেদিন জিএসটি আইন জম্মু ও কাশ্মীরেও পাশ হয়। জিএসটি সংক্রান্ত প্রথম বিজ্ঞপ্তি ২০১৭-র ২২ জুন জারি করা হয়। সেইসঙ্গে, কেন্দ্রীয় জিএসটি-র কয়েকটি ধারার কথাও ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় জিএসটি-র আওতায় ১০৩টি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি জারির পাশাপাশি ৫৩টি সার্কুলার ও ১৪টি আদেশ বিজ্ঞাপিত হয়েছে।

ভারত তার অভিনব যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার স্বার্থে দ্বৈত জিএসটি মডেল গ্রহণ করেছে। এই মডেল অনুযায়ী, কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি অভিন্ন ভিত্তিতে পণ্য বা পরিষেবা অথবা উভয় ক্ষেত্রেই কর আরোপ করে থাকে। এর পাশাপাশি রয়েছে, আন্তঃরাজ্য পণ্য বা পরিষেবা বা ভ্যাটের ক্ষেত্রে এ ধরণের জিএসটি এক অভিনব পদ্ধতি।

ই-ওয়ে বা ইলেক্ট্রনিকওয়ে বিল দেশ জুরে পণ্যসামগ্রীর সুষ্ঠু সরবরাহ ও পরিবহণ ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। পণ্যসামগ্রীর আন্তঃরাজ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে ই-ওয়ে ব্যবস্থা গত ১ এপ্রিল থেকে সারা দেশে চালু হয়েছে।

অর্থনীতির ওপর জিএসটি-র বহুবিধ প্রভাব পড়েছে। এরফলে, রপ্তানিকারী, ছোট ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোগী, কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্র এমনকি, সাধারণ গ্রাহকরাও উপকৃত হচ্ছেন। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র প্রসারে জিএসটি বিশেষভাবে কার্যকর হয়েছে। ভারতে সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতেও জিএসটি সহায়ক হয়েছে। জিএসটি-র মাধ্যমে একাধিক কর ব্যবস্থাকে সম্মিলিত করে পরোক্ষ কর ব্যবস্থার এক সুসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রণালী ভারতকে অর্থনৈতিক সংঘে পরিণত করার পথে অগ্রসর হচ্ছে।

 

 

CG/BD/SB…


(Release ID: 1537532) Visitor Counter : 138


Read this release in: English