নারীওশিশুবিকাশমন্ত্রক

মহিলাদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ- ২০১৮, বিষয়ে একটি সংগঠনের সাম্প্রতিক মতামত সমীক্ষা, তথ্যভিত্তিক নয়, বরং অপরিচিত ব্যক্তিদের ধারণার ভিত্তিতে করা হয়েছে

Posted On: 28 JUN 2018 11:01AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৭ জুন, ২০১৮

 

মহিলাদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ- ২০১৮, শীর্ষক থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের সাম্প্রতিক মতামত সমীক্ষা অনুসারে ভারতকে মহিলাদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ হিসাবে ঘোষনা করা হয়েছে। এই ঘোষনাটি কোনও রিপোর্ট অথবা তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়নি, এটি মতামত সমীক্ষার ভিত্তিতে করা হয়েছে।

রয়টার্স এই বক্তব্যে পৌঁছানোর জন্য একটি ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। ৬টি প্রশ্নের উত্তরের ভিত্তিতে কিছু মানুষের ধারনার ওপর এই ক্রমতালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই ফলাফল কোন তথ্যের ভিত্তিতে পাওয়া যায়নি। বরং সম্পূর্ণভাবে নিহিত বস্তুগত মতামতের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও এই মতামত যাচাই-এর নির্বাচন করা হয়েছে ৫৪৮ জন উত্তরদাতার মতামতের ভিত্তিতে। যাদের রয়টার্স মহিলা সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলে চিহ্নিত করেছে। কিন্তু তাদের পদাধিকার, পরিচিতি, কোন দেশের বিশেষজ্ঞ অথবা শিক্ষাগত যোগ্যতা বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। কাজেই এই রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। যে পদ্ধতিতে এই মতামত যাচাইয়ের নির্বাচন করা হয়েছে তাতে উত্তরদাতাদের মধ্যে নীতি নির্ধারকদের কথাও বলা হয়েছে। অথচ ভারতের মহিলা এবং শিশুবিকাশ মন্ত্রকের কাছ থেকে কোনও তথ্য জানতে চাওয়া হয়নি।

মতামত সংগ্রহের এই প্রক্রিয়াতে যে ৬টি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল তা সব দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে না। যেমন শিশু বিবাহের ক্ষেত্রে বয়সের বিষয়টি প্রত্যেক দেশে পৃথক। মহিলাদের শাস্তি দিতে তাদের অঙ্গহানি, স্ত্রী জননাঙ্গ কর্তন, পাথর ছুঁড়ে মারার মতো কোনও ঘটনা ভারতে প্রচলিত নয়।

এছাড়াও ভারতে তথ্য ভাগাভাগির মুক্ত ব্যবস্হা, আলোচনামূলক নীতি নির্ধারণ প্রক্রিয়া এবং সরকারের কাজকর্মের স্বচ্ছ ব্যবস্হা থাকার ফলে মহিলাদের সমস্যাগুলি সহজেই তুলে ধরা সম্ভব। সরকারের সঙ্গে গণমাধ্যম, গবেষক এবং অসরকারি সংগঠনগুলির মুক্ত যোগাযোগ হয়, যার ফলে প্রকাশ্যে বিতর্কের সুযোগ রয়েছে। সাধারণ মানুষের মানুষের জোরালো মতামত এবং নিরপেক্ষ গণমাধ্যম থাকার ফলে মহিলাদের বিরুদ্ধে হিংসার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা ও বিতর্কের বিষয়টি উসাহিত করা হয়ে থাকে। এই ধরনের খোলামেলা ব্যবস্হা থাকার ফলে ভারতে মহিলাদের বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ ও তথ্য জনসমক্ষে উঠে আসে, যার ফলে মনে হতে পারে যে দেশে মহিলাদের পক্ষে পরিস্হিতি বেশ খারাপ।

এই মতামত যাচাইয়ের সমীক্ষায় স্বাস্হ্য পরিষেবা, লিঙ্গ বৈষম্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, যৌন হিংসা, অযৌন হিংসা এবং মানব পাচারের মতো বিভিন্ন বিষয়ে ৫৪৮জন ব্যক্তির কাছ থেক মতামত সংগৃহীত হয়েছে। এইসব বিষয়ের অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভারত পৃথিবীর বহু দেশের থেকে অনেকদুর এগিয়ে আছে এবং সংশ্লিষ্ট সূচকগুলির আগের তুলনায় অনেক উন্নতি হয়েছে। তাই এই ক্ষেত্রে ভারতকে যেভাবে ক্রমতালিকা রাখা হয়েছে তা আশ্চর্যজনক এবং সুষ্পষ্টভাবে অসত্য।

২০১৮ জুন মাসে ভারতের মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার ২২ শতাংশ কমেছে, সারা দেশ জুড়ে জন্মের সময় বালক-বালিকার অনুপাতও উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও মহিলাদের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে তাদের জীবন-জীবিকার বহু উন্নতি সম্ভব হয়েছে। সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার মতো কর্মসূচির আওতায় ১.২৬ কোটি বালিকার জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে অর্ধেক হয়েছে মহিলাদের জন্য। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও বালক ও বালিকাদের শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সমতা এসেছে।

শিশু বিবাহের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে এবং কম বয়সে মাতৃত্বের হারও কমেছে। অপরাধ সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য ভান্ডারের রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে ধর্ষনের সংখ্যাও কমেছে। মহিলাদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের আইনগত ব্যবস্হাও নেওয়া হয়েছে।

এক দশক আগের তুলনায় ভারতীয় মহিলাদের জীবন বহুলাংশে উন্নত হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ভারতের মহিলারা অনেক ভালো অবস্হানে রয়েছে। এইসব তথ্য থেকে পরিস্কার বোঝা যায় ভারতকে মহিলাদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক রাষ্ট্র হিসাবে বর্ণনার মধ্যে বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটেনি।

   

SSS/PB/NS/…



(Release ID: 1536926) Visitor Counter : 127


Read this release in: English